Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বরাদ্দ থাকলেও টাকা ব্যয় হয়নি ১২০ উন্নয়ন প্রকল্পে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বরাদ্দ থাকলেও গত অর্থবছরে (২০১৬-১৭) একটি টাকাও ব্যয় করা হয়নি ১২০টি উন্নয়ন প্রকল্পে। রাজনৈতিক বিবেচনায় গৃহীত এসব প্রকল্পের ব্যাপারে এমনই রিপোর্ট চূড়ান্ত করেছে প্রকল্প তদারকি সংস্থা বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। রিপোর্টটি গত মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
সূত্র জানায়, চিহ্নিত ১২০টি প্রকল্পের মধ্যে গত অর্থবছরের এডিপিতে ১১৮টির জন্য ৭৭২ কোটি নয় লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। সর্বোচ্চ বরাদ্দ ছিল বিদ্যুৎ বিভাগের একটি প্রকল্পে, ৩৬০ কোটি টাকা। বেশকিছু প্রকল্পে সর্বনি¤œ বরাদ্দ ছিল এক লাখ টাকার। এর মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৩১টি প্রকল্পই বিদ্যুৎ বিভাগে। গৃহায়ন ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১৯টি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১০টি, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সাতটি, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সাতটি, সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের ছয়টি, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পাচটি, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের পাচটি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চারটি, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের চারটি, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তিনটি, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তিনটি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের তিনটি, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের তিনটি, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দুটি, সেতু বিভাগের দুটি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, কৃষি, বাণিজ্য, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা এবং নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি করে প্রকল্প রয়েছে।
আইএমইডি’র রিপোর্টে বলা হয়, গত অর্থবছরে যেসব প্রকল্পে এক টাকাও ব্যয় হয়নি, সেগুলো হচ্ছে-চট্টগ্রামের পারকি ও পতেঙ্গাতে পর্যটন উন্নয়ন, ঢাকার আজিমপুরে জজদের জন্য সুউচ্চ আবাসিক ভবন নির্মাণ, গুলশান-বনানী-বারিধারা লেক উন্নয়ন প্রকল্প, এনজিও ব্যুরোর অফিস ভবন নির্মাণ, ক্লিন এয়ার অ্যান্ড রেলওয়ের চিনকি-আস্তানা-আশুগঞ্জ সেকশনের উন্নয়ন, আশুগঞ্জ অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর উন্নয়ন, ২০০টি মিটারগেজ প্যাসেঞ্জার বগি সংগ্রহ, সাসটেইনেবল এনভায়রনমেন্ট প্রজেক্ট, সৈয়দপুর ও বরিশাল বিমানবন্দরের উন্নয়ন, পশুর চ্যানেলের আউটার ড্রেজিং এবং বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয় নির্মাণ প্রকল্প।
সার্বিকভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির ২১টি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম-সম্ভাব্যতা যাচাই না করে প্রকল্প গ্রহণ, কর্ম ও ক্রয় পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়ন না করা, প্রকল্প তদারকি ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সক্ষমতার অভাব, ভূমি অধিগ্রহণে দীর্ঘসূত্রতা, প্রকল্প পরিচালকদের দক্ষতার অভাব, বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট প্রকল্পের ক্ষেত্রে দরপত্র প্রক্রিয়ায় উন্নয়ন সহযোগীদের মতামত পেতে দেরি এবং প্রকল্প চলাকালে অভ্যন্তরীণ অডিট না হওয়া ইত্যাদি


আফ্রিকান ৬ জেব্রা চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার নয়া আকর্ষণ
চট্টগ্রাম ব্যুরো : পাহাড় ঘেরা চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার আকর্ষণের নতুন মাত্রা এখন সদ্য আনীত আফ্রিকান ডোরাকাটা জেব্রা। প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবারের মত এলো আফ্রিকান ডোরাকাটা জেব্রা। গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করার পরই চঞ্চল প্রাণিগুলো চিড়িয়াখানায় ছুটে বেড়াতে শুরু করে। আর শিশু-কিশোরসহ নানা বয়সী দর্শক ভিড় জমিয়ে আগ্রহভরে উপভোগ করেন নবাগত জেব্রাগুলো। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ৪৮ লাখ টাকায় আমদানি করা এক বছর বয়সী ৬টি জেব্রা দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত হলো। ১৯৮৯ সালে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা প্রতিষ্ঠার পর বাঘ, সিংহের পর এবারই আফ্রিকান জেব্রা যোগ হলো। চট্টগ্রামের বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী ও নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন হাফ ডজন জেব্রা দর্শকদের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তত্ত¡াবধানে গোড়া থেকেই এ চিড়িয়াখানা পরিচালিত হয়ে আসছে এবং সমাজহিতৈষী ব্যক্তিবর্গও বিভিন্ন বন্যপ্রাণি প্রদান করেন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা, কিউরেটর ও পরিচালা পর্ষদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এ চিড়িয়াখানার পরিবেশ দিন দিন সুন্দর হচ্ছে জানিয়ে চিড়িয়াখানার নির্বাহী কমিটির সদস্য সচিব ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, চট্টগ্রামের একমাত্র চিড়িয়াখানাটিকে আমরা অনেকদূর নিয়ে যেতে চাই। চিড়িয়াখানার জন্য দুইটি টার্গেট। এক. হচ্ছে অবকাঠামো উন্নয়ন, যা ৯০ শতাংশ সম্পন্ন করা হয়েছে। দুই. শিশু-কিশোর দর্শকদের আকৃষ্ট করতে নতুন নতুন প্রাণী সংগ্রহ। আগামীদিনে আমরা একটি পক্ষীশালা এবং পরিপূর্ণ শিশুপার্ক করা হবে। মূল লক্ষ্য ক্ষুদে দর্শকরা এতে আরও আকৃষ্ট ও পশু-পাখির সাথে পরিচিত হবে। বর্তমানে ২০ জন স্টাফ চিড়িয়াখানার অর্ধশতাধিক প্রজাতির পশুপাখি দেখভাল করছেন। ঠিকমতো খাবার-পানি, যতœ করা হচ্ছে কিনা সিসিটিভির মাধ্যমে মনিটরিং হচ্ছে। নতুন সংগৃহীত ৬টি জেব্রা থেকে ভবিষ্যতে যদি প্রজনন সম্ভব হয় তাহলে দেশের অন্যান্য চিড়িয়াখানার সঙ্গে আদান-প্রদান করা যাবে।
এর আগে গত সোমবার ৬টি আফ্রিকান জেব্রা কার্গো বিমান যোগে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। এরপর কাস্টমসহ বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শেষে সোমবারই সন্ধ্যায় ট্রাকযোগে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের ফয়’স লেকস্থ চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় এসে পৌঁছে। জেব্রাগুলো সরবরাহ করেন ফ্যালকন ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান। উক্ত প্রতিষ্ঠানের মালিক সোহেল আহমেদ জানান, দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে আবহাওয়ার মিল থাকায় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার জেব্রাগুলো মানিয়ে নিতে পারবে।
কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, প্রথম ১৫ দিন জেব্রাগুলোর দেখভালের দায়িত্ব থাকবে প্রতিষ্ঠানটি। এরপর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বুঝে নেবে। জেব্রা আমদানির অর্থ চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের টিকেট বিক্রির টাকা থেকে পরিশোধ করা হয়েছে। বর্তমানে জনপ্রতি টিকেটের মূল্য ৩০ টাকা। বেশিরভাগই দর্শকই শিশু-কিশোর। আফ্রিকান ৬টি জেব্রা বাক্স থেকে অবমুক্ত করার পরই ৬ কেজি করে মোট ৩৬ কেজি কচি লাউ, ২ কেজি ছোলা, ৮ কেজি ভূষি খেতে দেয়া হয়েছে। সেইসাথে স্যালাইন মেশানো পানি দেয়া হয়। ঘোড়ার মতো খাবার-দাবারই জেব্রার পছন্দ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ