পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মালেক মল্লিক : সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের প্যানেল নিয়ে চরম মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের । ২৪ ঘন্টার মধ্যে পাল্টাপাল্টি পৃথক পৃথক দুটি প্যানেল ঘোষণা করছে তারা। এমনকি প্যালেণ নিয়ে নিজদের মধ্যে দফায় দফায় হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে। এতে কয়েকজন আইনজীবী আহত হন। মনোনয়ন বোর্ডের আহবায়ক ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকারের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগে তুলেছে মনোনয়ন বঞ্চিতরা। বিএনপি ঘরোয়ানা আইনজীবীরা জানিয়েছেন, সমিতির নির্বাচনে একই ব্যক্তি একাধিকবার নির্বাচনে অংশ নেয়া ও আইন অঙ্গণে আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা রাখেন তাদের বাদ দিয়ে প্যানেল ঘোষণা করার এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি আইনজীবীদের মধ্যে সমন্বয় হীনতার বহি:প্রকাশ এমন ঘটনার জন্ম দেয়। তবে বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডের একজন সদস্য জানিয়েছেন, প্যানেল মনোনয়ন নিয়ে যা ঘটেছে তা দু:খজনক। আশা করি দ্রত এসবের সমাধান হবে।
আগামী ২২ ও ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে সমিতির নির্বাচন। প্রতি বছরই আওয়ামী সমর্থিত আইনজীবীরা সাদা ও বিএনপি সমর্থিতরা নীল প্যানেলে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করে। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা প্যানেল চূড়ান্ত করেছে।
বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান ও বর্তমান কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের নেতৃত্বে ঐক্য প্যানেলঘোষণার করার ২৪ ঘন্টা পার না হতেই বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেস্টা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের নেতৃত্বে অপর একটি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। প্রত্যেকের প্যানেলে নেতারাই দাবি করেছেন তারাই বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মূল প্যানেল।
সূত্রে জানা যায়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে মনোনয়ন চূড়ান্ত করতে বিএনপি‘র সিনিয়র আইজীবীরা একাধিক বৈঠক করেন। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার বৈঠকে প্যানেল চূড়ান্ত করেন। যদিও আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা আরো দুই দিন আগেই তাদের সাদা প্যানেল চূড়ান্ত করে ঘোষণা করেছে। গত মঙ্গলবার বিএনপি‘র মনোনয়ন বোর্ডের আহবায়ক ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকারের নেতৃত্বে জুরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মনোনয়ন বোর্ডের সচিব ও সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, খন্দকার মাহবুব হোসন, সাবেক মন্ত্রী আমিনুল হক, সাবেক মন্ত্রী নিতাই রায় চোধুরী, আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক বদরুদ্দোজ্জা বাদলসহ সিনিয়র আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। সকলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি নীল প্যানেল প্রার্থীর চূড়ান্ত করা হয়।
এতে বর্তমান সভাপতি ও বিএনপি ভাইস চেযারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনকে সভাপতি প্রার্থী ও বর্তমান সম্পাদক ও বিএনপি যুগ্ম সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে সম্পাদক প্রার্থী করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল ঘোষণা করা হয়। অন্য প্রার্থীরা হলেন, সহ-সভাপতি আব্দুল জব্বার ভুইয়া, এমডি গোলাম মোস্তফা, কোষাধ্যক্ষ নাসরিন আক্তার, সহ-সম্পাদক কাজী জয়নুল আবেদীন, আনজুমানারা বেগম মুন্নী, সদস্য ব্যারিস্টার সাইফুর আলম মাহমুদ, জাহাঙ্গীর জমাদ্দার, এমদাদুল হক, মাহফুজ বিন ইউসুফ, সৈয়দা শাহীনারা লাইলী, নাসরিন খন্দকার শিল্পী। রাতে প্যানেল চূড়ান্ত করা হলে মনোনয়ন কমিটির কেউ মৌখিকভাবে ঘোষণা করেনি। এবারের প্যানেল বিএনপির ২০ দলীয় জোট জামায়তের প্রার্থীকে ভাল কোন পদে রাখা হয়নি।
বিএনপির সমর্থিত আইনজীবীদের অভিযোগ, ওই প্যানেল অপেক্ষাকৃত জুনিয়রকে রাখা হয়েছে। দলের প্রতি একক আনুগত্য রয়েছে তাদেরকে বাদ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও একজন বার বার নির্বাচনে প্রাথী হয়ে আসছেন। এটা হলে নতুন নেতা বের হবে কিভাবে। নতুনদের সুযোগ দিতে হবে। এসব ঘটনা প্রতি বছর ঘটে। এবার চরম রুপ ধারণ করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপি‘র একজন আইনজীবী বলেন, প্রতি বছর একটি পকেট কমিটি থেকে সমিতির নির্বাচনে মনোনয়ণ দেয়া হয়। অথচ অনেক অনেক সিনিয়র ও যোগ্য আইনজীবী রয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, প্যানেল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার রাত থেকে দুপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে দফায় দফায় হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে বেশ কয়েকজন আইনজীবী লাঞ্চিত হয়েছেন। মনোনয়ন বোর্ডের আহবায়ক ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকারের চেম্বারের সামনে তার বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগে ¯েøাগান দিয়েছেন মনোনয়ন বঞ্চিতরা।
দুপুর ওই প্যানেল নোটিশ বোর্ডে টানানোকে কেন্দ্র করে বিএনপি আইনজীবীদের মধ্যে ফের সংর্ঘষ হয়। গতকাল দুপুরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের তথ্য বিষয়ক সম্পাদক খান জিয়াউর রহমান নোটিশ বোর্ডে বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল টাঙানো জন্য যান। এসময় ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক জুলফিকর আলী জুনুর নেতৃত্বে ২০/ ২৫ জন আইনজীবী ওই মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে নোটিশ বোর্ডের প্যানেল ছিঁড়ার যায়। এরপর উভয় পক্ষের মধ্যে শুরু হয় মারামারি। এতে বাদশা ও খান জিয়াউর রহমানসহ ৫ জন আইনজীবী আহত হন। পরবর্তীতে সিনিয়রদের হস্তক্ষেপে পরিরিস্থিতি শান্ত হয়। আহত আইনজীবী প্রাথমিক চিকিৎসা নেন বলে জানা যায়।
এরপর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে এ বি এম রফিকুল হক রাজার নেতৃত্বে ১০/ ১২ জন সুপ্রিম কোর্টস্থ ল রিপোর্টার্স ফোরামের কার্যালয়ে গিয়ে তাদের প্যানেল নাম ঘোষণা করেন। যদিও এই সময় প্যানেল সভাপতি প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন না। ঘোষিত প্যানেলে সম্পাদক প্রার্থী এ বি এম রফিকুল হক রাজার নাম ঘোষণা করেন। এই প্যানেলে সভাপতি প্রার্থী করা হয়েছে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারকে সভাপতি ও সম্পাদক রাখা হয়েছে এ বিএম রফিকুল হক তালুকদার রাজাকে। প্যানেলের অন্য প্রার্থীরা হলেন, সহ-সভাপতি ডা. মো. গোলাম রহমান ভূইয়া ও আলহাজ্ব মুহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট আয়ুব আলী আসরাফী, সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট শরিফ ইউ আহমেদ ও অ্যাডভোকেট আবু হানিফ, সদস্য মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, অ্যাডভোকেট মমিন উল্লাহ পাটোয়ারী, সাবিনা ইয়াসমিন লিপি, মো. শফি-উর-রহমান, ইকবাল হোসেন, মো. আকবর হোসেন ও আব্দুস সামাদ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনোনয়ন কমিটির একজন সদস্য বিএপির‘র ভাইস চেয়ার্যমান খন্দকার মাহবুব হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, আমি একটু আগে বিষয়টি শুনেছি। প্যানেল মনোনয়ন নিয়ে যা ঘটেছে তা দু:খজনক। মনোনয়ন তো সবাইকে দেয়া যায় না। চিন্তা ভাবনা করে দিতে হয়। তিনি আরো বলেন, সম্ভবত একাধিকার নির্বাচনে একই ব্যক্তি এটা সহজভাবে নিতে পারছেন না হচ্ছে না। তবে এটা ঠিক নেতৃত্ব দিতে এমন যোগ্য লোকের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা তো এখন একটি কঠিন সময় পার করছি। এটা তো বুঝতো হবে। দ্রæত এসব সমস্যার সাধান হবে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপির সিনিয়র এই আইনজীবী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।