Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সশস্ত্র সংগ্রাম ছাড়া রোহিঙ্গারা ফিরতে পারবে না অর্থমন্ত্রী রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে বাজেটে বড় অঙ্কের বরাদ্দ আসছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:১০ এএম, ৭ মার্চ, ২০১৮


অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে না নিতে নানা ধরনের ফন্দি করছে। রাখাইন রাজ্য থেকে মগদের তাড়াতে না পারা পর্যন্ত রোহিঙ্গারা সেখানে ফিরতে পারবে না। এজন্য অবশ্যই সুচিকে রাখাইন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে হবে।
এক্ষেত্রে সশস্ত্র সংগ্রাম ছাড়া রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশে ফিরতে পারবে না। আর সশস্ত্র সংগ্রাম করতে হলে বড় কোন শক্তির সহযোগিতা তাদের প্রয়োজন। মিয়ানমার সরকার বলছে, তারা কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গা ফেরত নেবে। কিন্তু এই প্রক্রিয়ার মধ্যেও তারা তালবাহানা করছে। অবশ্য রোহিঙ্গা সমস্যা অনেক দিনের পুরনো। ১৯৬৭ সালে প্রথম অল্পসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছিল। এখন পর্যন্ত প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের জন্য আসছে বাজেটে বড় অঙ্কের পৃথক বরাদ্দ রাখা হবে বলে জানান তিনি। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ডিএফআইডি) প্রতিনিধি পাঁচ ব্রিটিশ এমপির সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন।
তিনি বলেন, ১৯৬৭ সালে যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে তারা ভাসানচরে বসবাস করছে। তাদের অনেকেই এখন বাংলাদেশী নাগরিক হয়ে গেছেন। বর্তমানে যারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তারা নিজ দেশে ফেরত যেতে না পারলে হয়তো একদিন তারাও বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে যাবে। তবে সেটা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার বিষয়। এজন্য ভাসানচরে কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গাকে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। সেখানে স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। আসছে বাজেটে এজন্য বড় অঙ্কের পৃথক বরাদ্দ রাখা হবে। তবে সেটা হবে আমাদের জন্য বেশ কষ্টকর। এজন্য বৈদেশিক সহযোগিতা আরো বেশি বেশি প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরাতে আমাদের কোন ক‚টনৈতিক দূর্বলতা আছে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে ক‚টনৈতিক কোন দূর্বলতা নেই। তবে পার্শবর্তী শক্তিশালী দেশগুলোর সহায়তা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে চীনকে সহায়তা করাতে করছে যুক্তরাজ্য। রাখাইন রাজ্য থেকে মগদের সরাতে না পারলে রোহিঙ্গারা সেখানে ফিরতে পারবে না। আর সেটা আমাদের একার পক্ষে অসম্ভব। এজন্য প্রয়োজন আন্তর্জাতিক মহলের সহযোগিতা। রোহিঙ্গাদের পুসর্বানসনের জন্যও আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন। ব্রিটিশ এমপিরা প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন এ বিষয়ে তারা আমাদের আর্থিক সহায়তা আরো বাড়াবেন।
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, মিয়ানমার সরকার বলছে, তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে। কিন্তু আসলে তারা ফেরত নেবে না। এজন্য নানা ধরনের তালবাহানা করছে। মনাবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা কিন্তু তাদের পুশব্যাক করছি না। এজন্য আমরা বলছি (রোহিঙ্গা) এরা তো মানুষ। এদের আমরা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে থাকতে দিয়েছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে উদারতা দেখিয়েছেন। বিশে^র সব দেশই আমাদের সমর্থন দিয়েছে। সহায়তা দিচ্ছে। তবে আরো বেশি সহযোগিতা প্রয়োজন।
রেহিঙ্গাদের আদৌ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো যাবে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার বিশ^াস তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো যাবে না কখনই। তবে আমাদের রাজনৈতিক অবস্থান হচেছ তাদের সবাইকে ফেরত পাঠানো। হয়তো অল্প কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গা সুচি সরকার ফেরত নেবে। এরপর সেটা হয়তো ঝুলে যাবে। এক্ষেত্রে স্বশস্ত্র সংগ্রাম ছাড়া হয়তো রোহিঙ্গারা ফিরতেও পারবে না।
এদিকে হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের জন্য আসছে বাজেটে ১০০ কোটি টাকার একটি বিশেষ বরাদ্দ রাখা হবে। এক্ষেত্রে তারা নির্দিষ্ট প্রকল্প নিয়ে এ অর্থ ব্যয় করতে পারবেন। ##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ