পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : রাজধানীকে যানজটমুক্ত রাখতে এবং নগরবাসীর সময় বাঁচাতে মেট্রোরেল প্রকল্প চালুর উদ্যোগ নেয় সরকার। ২০২৪ সালের জুনে মেট্রোরেল চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে ২০১৯ সালে এমআরটি লাইন-৬ এর একাংশের কাজ শেষ করতে চায় সরকার। এজন্য মেট্রোরেল বাস্তবায়নকারী সংস্থা ডিটিসিএর চাহিদা অনুযায়ী চলতি অর্থবছরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৩ হাজার ৫২৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। উত্তরা তৃতীয় প্রকল্প থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত সরকারের ফাস্টট্র্যাক প্রকল্পের আওতাভুক্ত মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মিরপুর পর্যন্ত কাজ চলছে। যদিও কাজে তোড়জোড় শুরু হলেও গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি মাত্র ১৩ শতাংশ। তাই কাজের গতি বাড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে উত্তরা পর্যন্ত প্রায় ২১ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেল প্রকল্পে থাকবে ১৬টি স্টেশন। ইতোমধ্যে এগুলোর নকশা চূড়ান্ত হয়েছে। এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাইকার ঋণ সাড়ে ১৬ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা। বাকি টাকা সরকারি কোষাগার থেকে ব্যয় করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, উত্তরা-মতিঝিল মেট্রোরেল (এমআরটি-৬) প্রকল্পটিতে আটটি প্যাকেজে বিভক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে প্যাকেজ ২, ৩ ও ৪ বাস্তবায়ন করছে ইতালিয়ান-থাইডেভেলপমেন্ট কোম্পানি। গত বছরের ৩ মে এ তিন প্যাকেজের চুক্তি সই হয়। এরপর একই বছরের ৬ আগস্ট প্যাকেজ ৮-এর চুক্তি হয়। এছাড়া ২০১৫ সালে প্রকল্পটির পরামর্শক ও ডিপোর জমি উন্নয়নের চুক্তি হয়েছিল। প্যাকেজ-২ আওতায় ডিপো এলাকার পূর্ত কাজ করা হবে। এক্ষেত্রে নির্মাণ হবে স্টাবলিং ইয়ার্ড (বিরতিতে ট্রেন রাখার স্থান), ট্রেন মেরামত ও ওভারহোলের মালামাল রাখার গুদাম, প্রধান ওয়ার্কশপ, অপারেশন কন্ট্রোল সেন্টার, ট্রেন ইন্সপেকশন, জেনারেটর ও ইলেকট্রিক্যাল ভবন, ট্রেন ওয়াশ স্থাপনা, ম্যানুয়াল ট্রেন ওয়াশিং স্থাপনা, বহুতল কার পার্কিং ও গ্রীন স্পেস। এ প্যাকেজের মূল্য প্রায় এক হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা।
প্যাকেজ ৩ ও ৪-এর আওতায় উত্তরা তৃতীয় পর্ব থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট (উড়ালপথ) ও ৯টি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। এ দুই প্যাকেজের চুক্তিমূল্য প্রায় চার হাজার ২৩০ কোটি টাকা। আর প্যাকেজ ৮-এর আওতায় ইঞ্জিন- কোচ ও রেল ট্র্যাক কেনা হবে। এতে ব্যয় হবে চার হাজার ২৫৭ কোটি টাকা।
গাবতলী-ভাটারা (এমআরটি-৫) মেট্রোরেলের র্দৈর্ঘ্য হবে ১৩ দশমিক দুই কিলোমিটার। এর ৭ দশমিক ৮ কিলোমিটার উড়ালপথে ও ৫ দশমিক ৪ কিলোমিটার মাটির নিচ দিয়ে নির্মাণ করতে হবে। মূলত সেনানিবাস অতিক্রম ও বনানী-গুলশান-২ সড়কটি সরু হওয়ায় কিছু অংশ মাটির নিচ দিয়ে নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি কয়েকটি স্টেশনও হবে মাটির নিচে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) তৈরির জন্য সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। এরই প্রেক্ষিতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে প্রথম কল নোটিশে সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ বেশি চাওয়া হয়েছে। মূল এডিপিতে বরাদ্দ ২১ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা থাকলেও আরএডিপির জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে ২৬ হাজার কোটি টাকা। তবে এতো বেশি পরিমাণে অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হলেও সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর মধ্যে মেট্রোরেলের অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়। কারণ প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে মেট্রোরেলের কাজ দ্রæত এগিয়ে নিতে চলতি অর্থবছরে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু সেই অর্থও ব্যয় করতে পারছে না সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। তাই বছরের মাঝপথেই অন্যান্য প্রকল্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি থেকে অর্থ ফেরতের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে চিঠি দিয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। সূত্র জানায়, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পটির সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ১৩ দশমিক ১ শতাংশ। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের প্রকল্পের অগ্রগতি ও মনিটরিংয়ের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এই অগ্রগতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। গত ডিসম্বরে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। সূত্র জানায়, গত বছরের অক্টোবরে মেট্রোরেল প্রকল্প দুটির অর্থ ছাড়ে কিছু শর্ত দিয়েছিল জাইকা। তখন নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও দুটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত মানা হয়নি। এতে করে মেট্রোরেলের দুই প্রকল্পের অর্থ ছাড় স্থগিতের হুমকি দিয়েছিল জাইকা। এ-সংক্রান্ত চিঠিও পাঠানো হয়েছিল ডিটিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে। পাশাপাশি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব ও ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালককেও চিঠির কপি দেওয়া হয়েছিল।
সূত্র জানায়, প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা ও প্যাকেজভিত্তিক অর্থ ছাড় নিশ্চিতে গত বছরের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ঢাকা সফর করে জাইকার মিশন। সে সময় এমআরটি-৫ এর জন্য ২৭ সেপ্টেম্বর ও এমআরটি-৬ এর জন্য ৪ অক্টোবর জাইকার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সঙ্গে অর্থ ছাড় সংক্রান্ত মিনিটস অব ডিসকাশন (এমওডি) সই করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ডিএমটিসিএলের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার জন্য ৮৫ জন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া। অপর শর্তটি ছিল এমআরটি-৬ এর জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকদের যথাযথভাবে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা। তবে নির্ধারিত সময়ে এর কোনোটিই বাস্তবায়ন হয়নি।
চিঠিতে বলা হয়, অর্থ ছাড়ে অন্যতম জটিল পয়েন্ট ছিল ডিএমটিসিএলের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা। এটি সম্পন্ন না হলে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে অর্থ ছাড়ের পরিকল্পনা স্থগিত করা হবে। কারণ বিষয়টি জাপান সরকারের কাছে ব্যাখ্যা করা কঠিন হবে। এছাড়া অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান না করা হলে জাপান সরকারের কাছে জাইকা অনুরোধ করবে অর্থ ছাড় স্থগিত রাখার জন্য। প্রকল্পের ধীরগতির এটাও অন্যতম কারন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।