পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলাকারী ফয়জুল হাসান ওরফে ফয়জুলকে বেশ কয়েক বছর ধরে আহলে হাদিস বা সালাফি মতবাদে উদ্বুদ্ধ করা হয়। একটি চক্র কৌশলে তাকে সালাফি মতবাদে নিয়ে যায়। দেশে cসাথে জড়িতদের একটি অংশকে ওই চক্র নেপথ্যে থেকে পরিচালনা করছে। একটি রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের সাথে জড়িত ছিল এমন সদস্যরাও সালাফি মতবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সক্রিয় রয়েছে। এদের বিষয়ে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে জোর তদন্ত করা হচ্ছে। ফয়জুল সিলেট নগরের জিন্দাবাজারের রাজা ম্যানশনে ‘মঈন কম্পিউটারে’ কম্পোজিটর হিসেবেও কাজ করত। জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ওই দোকান মালিক মঈন উদ্দিনকে আটক করে র্যাব জিজ্ঞাসাবাদ করছে। পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
গতকাল ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারি বলেছেন, জাফর ইকবাল আমাদের পুলিশ পরিবারের সন্তান। তার ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। হামলাকারী অসুস্থ বলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সুযোগ পাওয়া যায়নি। সুস্থ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কেন সে হামলা করেছে? এছাড়া হামলাকারীদের মুলোৎপাটন এবং এর গভীরে যারা জড়িত তাদের জাতির সামনে তুলে ধরা হবে।
র্যাবের মুখপাত্র এবং আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলাকারী ফয়জুল হাসান ওরফে ফয়জুলকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলেও পুরো বিষয়টি নিয়ে ছায়া তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
র্যাব-৯ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমেদ গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, মঈন উদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মঈন কম্পিউটার থেকে কয়েকটি পিসি ও পেনড্রাইভ জব্দ করা হয়েছে। জামায়াতের ছাত্র সংঘটন শিবিরের সাথে হামলাকারী ফয়জুল হাসান ওরফে ফয়জুলের সম্পৃক্ততা রয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখছি।
তদন্তের সাথে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন শনিবার রাত ১২টায় রাজা ম্যানশনের দ্বিতীয় তলায় মঈন কম্পিউারে র্যাব-৯ এর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে তিনটি কম্পিউটার পিসি ও ৩টি পেনড্রাইভ জব্দ করে নিয়ে যায়। এরপর ওইদিন রাত ২টার দিকে নগরের কুয়ারপারস্থ বাসা থেকে জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত দোকান মালিক মঈন উদ্দিনকে আটক করে র্যাব। অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলাকারীর নাম ফয়জুল হাসান ওরফে ফয়জুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন শেখপাড়ার কাঁচা মঞ্জিলের স্বত্বাধিকারী হাফিজ আতিকুর রহমানের েেছলে। তার কুয়েত প্রবাসী দুই চাচার প্রভাবে পুরো পরিবার আহলে হাদিস বা সালাফি মতবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠে। এমনকি পরিবারের সদস্যরা মসজিদে ভিন্ন পদ্ধতিতে নামাজ পড়তে শুরু করে। ফয়জুলদের আসল বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদল ইউপির কালিয়ারকাপন গ্রামে। তার বাবা শহরতলির টুকেরবাজার এলাকার শাহ খুররুম মখলিছিয়া হাফিজিয়া মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষক। মাঝে মাঝে ফয়জুলকে ফেরি করে কাপড় বেচতেও দেখা গেছে। তদন্তের সাথে জড়িত সিলেট মহানগর পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, হামলাকারী ফয়জুল হাসান ওরফে ফয়জুলের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তার অতীত নিয়ে জোর তদন্ত হচ্ছে। আগে কি করতো। কিভাবে সে সালাফি মতাদর্শে জড়িত পড়ে এবং কোন ছাত্র সংগঠনের সাথে জড়িত ছিল কিনা ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফয়জুল ছাত্র শিবিরের সাথে সম্পৃক্ত ছিল কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে। এখন অনেকেই অনেক কথা বলছেন আমরা সব বিষয় মাথায় রেখে কাজ করছি। সে যে দোকানে কাজ করতো ওই দোকানের মালিক মঈন উদ্দিন জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত। আমরা ওই বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষন করছি। উল্লেখ্য, গত ৩ মার্চ শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে একটি অনুষ্ঠানে পেছন থেকে অধ্যাপক জাফর ইকবালের মাথা, পিঠ ও হাতে ছুরিকাঘাত করে ফয়জুল। পরে হামলাকারীকে শিক্ষার্থীরা ধরে পিটুনি দিয়ে আটকে রাখে। রাত সাড়ে ৯টায় র্যাব তাকে উদ্ধার করে প্রথমে রাগীব রাবেয়া হাসপাতাল ও পরে সিলেট সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি করে। তারপর রাতেই হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় সিএমএইচ হাসপাতালে আনা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।