Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাটের অগ্রযাত্রায় অন্তরায় অর্থ মন্ত্রণালয় মির্জা আজম

অর্থমন্ত্রী আসলে পাটের বিরোধী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দেয়ার পরও গত দুই বছরে বহুমুখী পাটপণ্যকে প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। সে জন্য অর্থমন্ত্রীর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম।
পাট পণ্যের প্রসারে সরকার সচেষ্ট হলেও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কারণে কাজ আটকে আছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিমন্ত্রী। প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, মাননীয় অর্থমন্ত্রী, তিনি পাটের প্রতি একটু বিরূপ। পাটের কোনো জিনিস মনে হয় তিনি মানসিকভাবে পছন্দ করেন না। সে জন্য তার কর্মকর্তারাও পাটের বহুমুখী পণ্যকে প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্যে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে বিভিন্ন তালবাহানা করছেন।
গতকাল সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে পোটের উন্নয়ন : গণমাধ্যমের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এসব কথা বলেন। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) যৌথভাবে সেমিনারটি আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ইআরএফ সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলাল। তিনি বলেন, আমাদের পাটের বিরুদ্ধে বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ ও আমাদের দেশের ভেতরেও অনেক ষড়যন্ত্র আছে। আমার বিশ্বাস, বিশ্ব ব্যাংকের কিছু প্রেতাত্মা আমাদের অর্থ মন্ত্রণালয়ে এখনো বসে আছে। কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে সরকার ২০ শতাংশ ভর্তুকি দিয়ে থাকে। পাটজাত দ্রব্যকে সেই সুবিধা দিতে একে কৃষিপণ্যের তালিকাভুক্ত করতে ধানমন্ত্রীর নির্দেশনা দুই বছরেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় এই অভিযোগ মির্জা আজমের। মির্জা আজম বলেন, মাননীয় অর্থমন্ত্রী (আবুল মাল আবদুল মুহিত), তিনিই আসলে পাটের বিরোধী। তার কাছে পাটের কিছু গেলেই মানসিকভাবে তিনি মনে হয় এটা অপছন্দ করেন। যার কারণে তার কর্মকর্তারা পাটকে কৃষি পণ্যের তালিকায় তুলতে তালবাহানা করছেন। তিনি বলেছেন, গত দুই বছর চিঠি চালাচালির সব রেকর্ডপত্র তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করবেন। মঙ্গলবার পাট দিবস উপলক্ষে পাট মন্ত্রণালয়ের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে খুব শিগগির এই সমস্যা কেটে যাবে বলে আশাবাদী মির্জা আজম। সতিনি বলেন, খুব শিগগির এই পরিস্থিতি থেকে আমরা উত্তরণ করতে পারব এবং আমাদের যারা বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন করেন, তারা ব্যাংক ফ্যাসিলিটিজ পাবেন। পাট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সবাই বিভিন্ন সুবিধা পাবেন। পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বেসরকারিকরণের নামে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। দেশের বৃহত্তম পাটকল আদমজী জুট মিলস বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে খালেদা জিয়া বন্ধ করে দেন। গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে শ্রমিকদের বিদায়েও অর্থ দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। কিন্তু একই সময় ভারতে পাটকল স্থাপনের জন্য অর্থ দেয় বিশ্বব্যাংক। আদমজী জুট মিল বন্ধ করা ছিল বিশ্বব্যাংকের চক্রান্ত। মির্জা আজম বলেন, বিশ্বব্যাংকের কিছু প্রেতাত্মা অর্থ মন্ত্রণালয়ে বসে আছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১৬ সালে বহুমুখীকরণ পাটপণ্যকে প্রক্রিয়াজাত কৃষিজাত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নির্দেশনা দেন। সেই ফাইল গত দুই বছর ধরে টেবিলে টেবিলে ঘুরছে। আমি মন্ত্রী হয়েও টেবিলে টেবিলে ঘুরি। আমাদের মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা আছেন, যিনি সার্বক্ষণিকভাবে এই দায়িত্ব পালন করেন। ফাইলটি বাংলাদেশ ব্যাংক, কৃষি মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় ঘুরতে ঘুরতেই দুই বছর চলে গেছে। সেমিনারে আরো বক্তব্য দেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান, চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ, জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার ( জেডিপিসি) নির্বাহী পরিচালক রীনা পারভীন, ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ