Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাস্তবসম্মত রেট কোড নির্ধারণের তাগিদ

ডলার বাজার নিয়ন্ত্রণে বাফদার টেকনিক্যাল কমিটির সভা

| প্রকাশের সময় : ৫ মার্চ, ২০১৮, ১২:৩৫ এএম

ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণে বাস্তবসম্মত রেট কোড এবং সব ব্যাংকের রেট সমান রাখায় গুরুত্বারোপ করেছে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) টেকনিক্যাল কমিটি। দীর্ঘদিন থেকে নিয়ন্ত্রণহীন ডলারের বাজারকে বাগে আনতে বাফেদা এই কমিটি গঠন করে। গতকাল রোববার টেকনিক্যাল কমিটি বৈঠকে ডলারের মূল্য বৃদ্ধির সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়েছে বলে সভা সূত্রে জানা যায়। 

সূত্র মতে, বিশ্বব্যাপী ক্রয় বিক্রয়ের বিনিময়ের অন্যতম মুদ্রা ডলারের বাজারে (বিনিময় মূল্য) যেন আগুন লেগেছে। জুলাইয়ে যে ডলারের দর ছিল ৮০ দশমিক ৬৬ টাকা; গত বৃহস্পতিবার সে ডলার বিক্রি হয়েছে ৮৫ দশমিক ২৫ টাকায়। গত বছরের জুন থেকেই দেশে ডলারের বাজারে সংকট চলছে। বাজারে ডলার ছেড়েও সক্রিয় সিন্ডিকেটের কারণে দাম নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাফেদার সাত সদস্যের টেকনিক্যাল কমিটি করা হয়। এই কমিটির প্রধান হিসেবে রয়েছেনÑ বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী হোসেন প্রধানিয়া। গতকালের সভা সম্পর্কে তিনি বলেন, সভায় ডলারের মূল্য বৃদ্ধির সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান বলেন, দেশের প্রত্যেকটা ব্যাংকের ফরেন কারেন্সি রেট বাস্তবসম্মত রাখার সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যাতে সব ব্যাংকের ডলার রেট সমান থাকে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইনের আলোকে ডলারের দাম নির্ধারণ করার কথা বলেন আলী হোসেন প্রধানিয়া। তিনি বলেন, বৈঠকে বিদেশী এক্সপোর্ট হাউস এর জন্য বাস্তবসম্মত রেট কোড নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে গাইডলাইন মেনে চলার কথাও বলা হয়।
তিনি জানান, ডলারের বাজার ঠিক রাখতে প্রচুর ডলার বিক্রি করায় সভায় বাংলাদেশ ব্যাংককে ধন্যবাদ জানানো হয়। পাশাপাশি নতুন করে যাতে ডলারের বাজারে অপ্রাত্যাশিত পরিস্তিতির সৃষ্টি না হয় সে জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ডলার বিক্রি চলমান রাখার আহবান জানানো হয়। মো. আলী হোসেন প্রধানিয়া বলেন, সভার সুপারিশগুলো বাফেদার নির্বাহী কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হবে। কমিটিতে বিষয়টি অনুস্বাক্ষর হলে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানানো হবে। বিশ্লেষকদের মতে, ডলারের মূল্য এক শতাংশ বাড়ার অজুহাতে দেশের আমদানিকারকরা পণ্যের মূল্য দুই শতাংশ বাড়িয়ে দেন। এতে সাধারণ ভোক্তার ভোগান্তিও বেড়ে যায়। অপরদিকে আমদানির তথ্যের আড়ালে বিদেশে অর্থ পাচারকেও এর একটি কারণ বলে মনে করছেন কেউ কেউ। তাই কোনো বিশেষ পদক্ষেপ নয়, আমদানি চাহিদা নিয়ন্ত্রণ ছাড়া ডলারের মূল্যবৃদ্ধির গতি ঠেকানো সম্ভব নয় বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। পাশাপাশি রপ্তানি বহুমুখীকরণে গুরুত্বারোপ করেছেন তাঁরা। একই সঙ্গে ডলার সংকট আরও তীব্র হতে পারে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা। অনেকের মতে, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির বিপরীতে রফতানি ও রেমিটেন্স প্রবাহ কম হওয়ায় ডলার বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে কোন কোন ব্যাংক ডলার ধরে রেখে ব্যবসা করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। যদিও এই মুহূর্তে ব্যাংকগুলোর আয়ের একটি বিশেষ অংশই ডলার কেনাবেচা থেকে হচ্ছে। বাফেদা চেয়ারম্যান সোনালী ব্যাংকের সিইও ও এমডি মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ ইনকিলাবকে বলেন, টেকনিক্যাল কমিটির সভার সুপারিশগুলো নির্বাহী কমিটিতে আলোচনা করে বাংলাদেশ ব্যাংক, সকল ব্যাংক এবং বিদেশী এক্সপোর্ট হাউসগুলোকে জানানো হবে। একই সঙ্গে খুব শিগগিরই ডলারের বাজার স্বাভাবিক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। ##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ