পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আবু হেনা মুক্তি : প্রধানমন্ত্রীর জনসভা থেকে দীর্ঘদিনের দাবিগুলো পূরণ না হওয়ায় খুলনাঞ্চলের মানুষ হতাশ। প্রধানমন্ত্রীর কাছে খুলনাঞ্চলের আমজনতার চাওয়া পাওয়া অনেক। কিন্তু জনসভায় দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম ও দাবি দাওয়ার প্রতিফলন যেমন ঘটেনি। তেমনি পূর্বের অনেক প্রতিশ্রæতির বাস্তবায়নও হয়নি। গত ৮ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খুলনায় ৩টি জনসভায় ৩১টি উন্নয়ন প্রকল্পে প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন। তার মধ্যে খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলস্, দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরী চালু ও খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয়নি। নির্বাচনী বছরে প্রকল্পগুলো পর্যায়ক্রমে শুরু হবে বলে দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
সূত্রমতে, রেলওয়ে স্টেশন আধুনিকায়ন করণ, কয়রা উপজেলা পরিষদ ভবন পুন:নির্মাণ, শিল্পকলা একাডেমী ভবন, হাজী মুহসীন কলেজ জাতীয়করণ একটি সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন ও আইনজীবী সমিতির পুরাতন ভবন সংস্কার কাজ ছাড়া অন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। খুলনাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি নিউজপ্রিন্ট মিলস্, দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরী চালু ও খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন। শনিবার প্রধানমন্ত্রী খুলনায় আগমন উপলক্ষে আলিয়া মাদরাসা, শহীদ সোহরায়ার্দ্দী কলেজ, আহসান উল্লাহ কলেজ, দৌলতপুর দিবা-নৈশ কলেজ, রায়েরমহল কলেজ, হাজী মালেক ইসলামীয়া কলেজ, বি কে ইউনিয়ন ইনিষ্টিউশন, সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল ইত্যাদি সরকারীকরনের দাবি ওঠে। এসব দাবিপূরণ না হওয়ায় খুলনাবাসী হতাশ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শনিবারের জনসভায় প্রতিশ্রæতি দেন নির্বাচনী ওয়াদাগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। এ জনসভায় নগর আওয়ামীলীগের সভাপতি, সংসদ সদস্য তালুকদার আব্দুল খালেক উল্লেখ করেন, প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের বিষয়টি পর্যায়ক্রমে পূরণ করা হবে। তিনি নির্বাচনী বছরে নতুন করে কোন দাবি আপাতত উত্থাপন না করতে এ অঞ্চলের মানুষের প্রতি অনুরোধ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনার কয়রা উপজেলার ঘুগরাকাঠি মাদরাসা প্রাঙ্গনে ২০১০ সালের ২৩ জুন, মহানগরীর খালিশপুরে ২০১১ সালের ৫ মার্চ এবং সর্বশেষ ৩ মার্চ শনিবার স্থানীয় সার্কিট হাউজ ময়দানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ৩১টি উন্নয়নের প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন। শনিবারের দেয়া প্রতিশ্রæতির মধ্যে রয়েছে ভোলা থেকে পাইপ লাইনের খুলনায় গ্যাস সরবরাহ। পূর্বের দু’টি জনসভায় দেয়া প্রতিশ্রæতির মধ্যে রয়েছে পাইকগাছার হাবিব নগর মাদরাসা মোড় থেকে ডুমুরিয়া উপজেলার মাগুরখালী- কাঠতলা বাজার সড়ক সংস্কার, কয়রা উপজেলার বাঁধ সমূহের দু’ধারে বনায়ন, আইলা ক্ষতিগ্রস্ত কয়রা উপজেলার বেড়ীবাঁধ সংস্কার, ৯ উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যায় উন্নতীকরণ, সব উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আশ্রায় কেন্দ্র উপযোগী ভবণ নির্মান, কয়রা উপজেলা পরিষদ ভবন পুন:নির্মাণ, কয়রা উপজেলা সদর স্টেডিয়াম, পাইকগাছা কৃষি কলেজ স্থাপন, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, রেলওয়ে ষ্টেশন আধুনিয়কায়ন করণ, আইনজীবী সমিতির পুরাতন ভবন সংস্কার, খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলসহ বন্ধ পাটকল চালু, দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরী চালু, সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় পরিবেশ বান্ধব পর্যাটন কেন্দ্র, ঢাকী ও ঝপঝপিয়া নদীর ওপর ব্রীজ নির্মান, উপকুলীয় এলাকায় স্থায়ী বেড়িবাধ নির্মাণ, গল্লামারী-ষোলাদানা সড়ক সংস্কার, বেতবুনিয়া- গড়ইখালী গ্রামের মাঝে শিবসা নদীর ওপর ব্রীজ নির্মাণ, গ্যাস সরবরাহ কার্যক্রম দ্রæত বাস্তবায়ন, কেসিসি ২শ’ কোটি টাকার অবকাঠামো নির্মান, তেরখাদা উপজেলার ভুতিয়ার বিল ও বাসুখালী বিলের পানিবদ্ধতা দূরীকরণ, খুলনাঞ্চলে তেল গ্যাস অনুসন্ধানের ব্যবস্থা, হাজী মুহসীন কলেজ জাতীয়করণ, বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে ঢাকা-সাতক্ষীরা রেলযোগাযোগ স্থাপন, ৩টি সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন, খুলনায় নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক সংস্কার, রূপসা তেরখাদা আঞ্চলিক মহাসড়ক সংস্কার ও শিল্পকলা একাডেমীর আধুনিক ভবন ও মিলনায়তন নির্মান। সর্বশেষ ৩ মার্চ সার্কিট হাউজের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী ভোল থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে খুলনায় গ্যাস আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সূত্রমতে, শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল। ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট উদ্দেশ্যেই এই হাসপাতালটি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্মাণ হয়। খুলনাবাসীর আন্দোলনের ফসল এই হাসপাতালটি চারদলীয় জোট সরকার এসেই শুধু নামের কারণে সার্বিক উন্নয়ন বরাদ্দ বন্ধ করে দেয়। পুনরায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা চালু করেন। বর্তমানে ১৬০ শয্যা চালু থাকলেও চিকিৎসক সঙ্কট থাকায় বাকী শয্যাগুলো চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। এই হাসপাতালটি চালুর পর থেকে খুলনাঞ্চলের মানুষেরা লাখ টাকার চিকিৎসাসেবা বিনামূল্যে পাচ্ছেন। হাসপাতালটি ২৫০ শয্যার পরিবর্তে ৫০০ শয্যায় রূপান্তরিত করার দাবি এই অঞ্চলের মানুষের।
অপরদিকে, ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় সিডরের ১১ বছর পার হলেও উপকূলীয় জেলা খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায় গড়ে উঠেনি পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টার। বিপদে আশ্রয় কোথায় হবে, সে ভাবনায় এখনো আতঙ্কে দিন কাটে এখানের মানুষের। সিডরের পর আইলায় ক্ষতিগ্রস্ত টেকসই বাঁধ নির্মান সহ পূর্ণাঙ্গ পুনর্বাসন ব্যবস্থা আজও হয়নি। এছাড়া শিল্প ও বন্দর নগরী খুলনার পাটকলগুলোর বিষয়ে কোন সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা ছিল না জনসভায়। ক্ষমতাসীন দলের গত ৯ বছরের শাসনামলে এশিয়ার বৃহত্তম কাগজকল খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিল চালু হয়নি। দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরী চালু হয়নি। ফলে এখনো হাজার হাজার শ্রমিক পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ আশরাফ উজ জামান ইনকিলাবকে বলেন, বৃহত্তর খুলনার আরো উন্নয়নের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুষ্পষ্ট দিক নির্দেশনা ও ঘোষণার অপেক্ষায় ছিল আমজনতা। তবে আমরা আশাবাদী ভবিষ্যতে প্রতিশ্রæতিগুলোর দ্রæত বাস্তবায়ন হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।