পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আবু হেনা মুক্তি : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা আগামীকাল খুলনায় যাচ্ছেন। বিকেলে সার্কিট হাউজ মাঠে দলীয় জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি। এ সময় ৪৭টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৫২টি নতুন প্রকল্পের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামী লীগের জনসভা উপলক্ষে খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে নির্মাণ করা হয়েছে ১১০ ফুট দৈর্ঘ্যরে ‘নৌকা মঞ্চ’।
খুলনায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে দলীয় নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত। খুলনা নগরী ও জেলায় বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। তোরণ, ব্যানার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে নগরীর। এসব ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত ও শুভেচ্ছা জানানোর নামে আত্মপ্রচার করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার সার্কিট হাউজের মঞ্চ পরিদর্শন করেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক এমপি ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান এমপি। এ সময় তারা এবারের প্রধানমন্ত্রীর সফরকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বলেন, জনসভায় প্রধানমন্ত্রী খুলনা অঞ্চলের মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাবেন। নতুন-পুরাতন মিলে ৯৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
জনসভার মঞ্চ তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্তরা জানান, পুরো মঞ্চটি নৌকা সদৃশ্য। যার দৈর্ঘ্য হবে ১১০ ফুট এবং প্রস্থ ৩০ ফুট। তিন শতাধিক লোক ধারণের ক্ষমতাসম্পন্ন এ মঞ্চটি নির্মাণে ৩৫ জন শ্রমিক এক সপ্তাহ ধরে দিন-রাত কাজ করেছেন।
সূত্রমতে, খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানে জনসভার প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। সারা নগরীতে রাত ১২টা পর্যন্ত শত শত মাইকিং চলছে। এছাড়া মহানগরীসহ জেলার প্রবেশপথগুলোতে তোরণ নির্মাণ, সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড সাধারণ মানুষের মাঝে তুলে ধরার প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে। সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প, বর্তমান অবস্থা ও করণীয় নিয়ে তালিকা প্রস্তুত করেছে খুলনা বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসন।
এদিকে খুলনার মোট ৯৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর করার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে ৪৭টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৫২টি নতুন প্রকল্পের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর করা হবে। স্থানীয় প্রশাসন উদ্বোধনের জন্যে প্রকল্পসমূহের তালিকা গত মঙ্গলবার চূড়ান্ত করেছে। খুলনার উদ্বোধনযোগ্য ৪৭টি প্রকল্পের অধিকাংশ কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে আর কিছু অসম্পূর্ণ রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর খুলনায় আগমন উপলক্ষে খুলনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান প্রস্তুতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। মিজানুর রহমান বলেন, আশা করছি জনসভায় দশ লাখেরও বেশি লোক সমাগম হবে। জনসভায় নৌকার আদলে সুসজ্জিত মঞ্চ করা হবে। মহা জনসমুদ্রে নারীদের বিপুল সমাগম ঘটবে। খুলনা বিভাগসহ গোপালগঞ্জ থেকেও আসবেন সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীরা। সার্কিট হাউজ মাঠে প্রবেশে নারীদের জন্য চারটি গেট থাকবে। দু’টি থাকবে পুরুষের জন্য। জনসভা নির্বিঘœ করতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। এছাড়া এ জনসভা থেকেই আসন্ন খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর নামও ঘোষণা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন খুলনা সিটি কর্পোরেশন ও জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী ও আ’লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার খুলনা সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে জনসভায় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রার্থী সম্পর্কে চূড়ান্ত ঘোষণা আসতে পারে। এখান থেকেই মূলত সিটি কর্পোরেশন ও জাতীয় নির্বাচনের খুলনা বিভাগে প্রচারণা শুরু হবে। তাই এটি খুলনা জেলা নয়, বিভাগের জনসভা।
খুলনা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ ইনকিলাবকে বলেন, খুলনা মহানগরীর এই জনসভা মানেই খুলনা বিভাগে আগামী নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী জনসভা। এই সভা থেকেই খুলনা বিভাগের রাজনৈতিক দিক নির্দেশনা পাওয়া যাবে।
উদ্বোধনযোগ্য ৪৭ প্রকল্প :
প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধনযোগ্য ৪৭ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- সড়ক ও জনপথ বিভাগের গল্লামারী-বটিয়াঘাটা-দাকোপ-নলিয়ান ফরেস্ট সড়ক ও রূপসা-শ্রিফলতলা-তেরখাদা সড়ক। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কেডিএ খানজাহান আলী সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক কাম প্রশাসনিক ভবন, লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাডেমিক ভবন, চালনা মোবারক মেমোরিয়াল কলেজের একাডেমিক ভবন, খুলনা আইডিয়াল কলেজের একাডেমিক ভবন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের একাডেমিক ভবন, খুলনা ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজের একাডেমিক ভবন। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন, মহেশ্বরপাশা সরকারি শিশু পরিবার হোস্টেল ভবন, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ ভবন, মেডিক্যাল কলেজের অডিটোরিয়াম ভবন, শহিদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল ভবন, তেরখাদা থানা ভবন, রূপসা ফায়ার স্টেশন ভবন, সেনহাটি রিভার ফায়ার স্টেশন, বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক অফিস ভবন, কৃষি বিভাগের অফিস কাম ট্রেনিং অ্যান্ড প্রসেসিং সেন্টার ভবন। এলজিইডির রূপসা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, দিঘলিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, তেরখাদা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, ডুমুরিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, পাইকগাছা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, পাইকগাছা আরএন্ডএইচ-বাকা জিসি সড়কের কপোতাক্ষ নদের ওপর ব্রিজ। সিটি করপোরেশনের সিআর এইচসিসি ভবন, হাতিয়ার ডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টার ভবন, শিমলার আইট খেজুরডাঙ্গা আরএনজিপিএস কাম সাইক্লোন শেল্টার ভবন, দেয়াড়া পশ্চিমপাড়া আরএন জিপিএস কাম সাইক্লোন শেল্টার ভবন, তেরখাদা আব্দুলের মোড় আরএন্ডএইচ-মাঝিরগাথি জিসি ভায়া কোলা বাজার সড়ক, বটিয়াঘাটা উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের স¤প্রসারণ, পাইকগাছা হাবিবনগর মাদ্রাসার মোড় হতে ডুমুরিয়া মাগুরখালি-কাঁঠালতলা বাজার পর্যন্ত সংযোগ সড়ক। জেলা ক্রীড়া সংস্থার জেলা স্টেডিয়াম। জেলা পরিষদের পাঁচ তলা বিশিষ্ট কয়রা আধুনিক ডাকবাংলো ভবন। খুলনা গণপূর্ত বিভাগ-২ এর দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য হোস্টেল ভবন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, কয়রা থানা ভবন, পাইকগাছার কপিলমুনি ইউনিয়ন ভূমি অফিস, ডুমুরিয়ার শোভনা ইউনিয়ন ভূমি অফিস, বটিয়াঘাটা জলমা ইউনিয়ন ভূমি অফিস। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল (বর্ধিতাংশ), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল (ঊর্ধ্বমুখী স¤প্রসারণ), শহিদ তাজউদ্দিন আহমদ ভবন (ঊর্ধ্বমুখী স¤প্রসারণ), মাইকেল মধুসূদন দত্ত অতিথি ভবন, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় কেন্দ্রীয় গবেষণাগার (বর্ধিতাংশ)। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার, খুলনা রেলওয়ে স্টেশন এবং ইয়ার্ড রি-মডেলিং প্রকল্প। খুলনা ওয়াসা ভবন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।