Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ধর্মীয় ভিন্নমত নিয়ে ১৫ কোটি মুসলমানের দেশে অশান্তির আগুন জ্বালবেন না -সম্মিলিত মুফতি পরিষদ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

দেশের সীমান্তবর্তী জৈন্তাপুরে ধর্মীয় দুটি গ্রæপের দ্ব›েদ্ব যে হতাহতের ঘটনা ঘটে গেল এ নিয়ে দেশের চিন্তাশীল নাগরিকগণ চরম উদ্বিগ্ন। ঘটনা খুবই দুঃখজনক। একটি মাহফিলে ভিন্নমতের আলেমকে এজন্য দাওয়াত করে আনা হয় যেন তিনি তাদের মতের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তখন একটি ঝগড়া বাধিয়ে তাকে শায়েস্তা করা যায়। এটি কোনো স্বীকৃত পদ্ধতি নয়। যুগ যুগ ধরেই এদেশে ধর্মীয় অঙ্গনে নানামতের মানুষ পাশাপাশি বসবাস ও নিজ নিজ ধ্যান ধারণার আলোকে ধর্ম কর্ম করে এসেছেন। কেউ কাউকে ধরে ফেলা, মেরে ফেলা বা কায়দা করে ডেকে নিয়ে হত্যা করা এসব কাজ এদেশে ছিল না। সিলেটের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কথিত মাজারপন্থি ও কওমী ঘরানার মধ্যে এমন অনভিপ্রেত হতাহতের ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। যে আলেমকে হত্যা করা হয়েছে, যারা আহত হয়েছেন, তাদের ক্ষতিপূরন ও উপযুক্ত বিচার সরকারকে করতে হবে। এর ফলে সৃষ্ট উত্তেজনা প্রশমন খুবই জরুরী। বিক্ষুব্ধ মানুষ যে পক্ষের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে তাদেরও পুনর্বাসন দরকার। এপর্যায়ে আলেমসমাজকে খুবই ধৈর্য ও প্রজ্ঞার সাথে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সরকার ও প্রশাসনকে থাকতে হবে শতভাগ সজাগ ও তৎপর। কারণ, যে কোনো পক্ষের সামান্য ভুলের জন্য দেশ মারাত্মক সংকটে নিপতিত হতে পারে। রোহিঙ্গা সমস্যা, আসামে মুসলমানের সমস্যা ও শ্রীলংকায় মুসলিমদের উপর নতুন করে অত্যাচার থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। কোনো শত্রæ যেন বাংলাদেশেও ধর্মীয় ভিন্নমতের ছত্রছায়ায় মুসলিম নিধনের সুযোগ না নিতে পারে। যেন তারা অবুঝ লোকেদের ব্যবহার করে ছায়াযুদ্ধ শুরু করতে না পারে। এবিষয়ে সরকারসহ সকল নাগরিককে চোখ কান খোলা রাখতে হবে। ঘটনার পরপরই হেফাজতে ইসলাম হাটহাজারিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। রাজধানীতে বা কেন্দ্রিয়ভাবে সারাদেশে এ সংগঠন কোনো ব্যাপক প্রোগ্রাম দেয়নি। কওমী ঘরানার আলেম সমাজ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি সরকারকে বিষয়টি আন্তরিকভাবে দেখার ও দোষী ব্যক্তিদের উপযুক্ত বিচারের আহŸান জানান। হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, অবিলম্বে জৈন্তাপুরে আলেম হত্যাকারীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দিতে হবে। গতকাল এক বিবৃতিতে সম্মিলিত মুফতি পরিষদ নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
তারা বিবৃতিতে আরও বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, কোনো কোনো আলেম উস্কানিমূলক বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে বিষয়টিকে বড় করার চেষ্টা করছেন। তারা চাইছেন, সারাদেশে দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও মারামারি লাগাতে। যা দেশের জন্য মোটেই শুভকর নয়। ওলি আউলিয়াদের মাধ্যমে ইসলাম প্রচারিত হওয়ায় এদেশে বহুমত নিয়েও মুসলমানরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতির জন্যও এদেশের মুসলমানরা বিশ্বে প্রশংসিত। এমতাবস্থায় কোনো অর্বাচীন যেন দেশে কওমী ও মাজারভক্ত শ্রেণীর মধ্যে মারামারি, কাটাকাটির পরিবেশ তৈরি করতে না পারে সে দিকে সকলের খেয়াল রাখতে হবে। কেননা, ১৫ কোটি মুসলমানের দেশে শান্তি নষ্ট ও দাঙ্গা বাধানোর লোকের অভাব নেই। কোনো কারণে অশান্তি শুরু হলে এটি নিয়ন্ত্রণের ভেতর থাকবে না। ইহুদি, নাসারা, মুশরেক, নাস্তিক-মুরতাদসহ সকল শক্তি নেপথ্যে থেকে এ অশান্তির আগুনে ঘি ঢালবে। যেমন মধ্যপ্রাচ্যসহ মুসলিম বিশ্ব আজ দুষমনের দেওয়া আগুনে পুড়ছে। আমরা ধর্মীয় অঙ্গনের সকল মতের মানুষকে শান্তি বজায় রেখে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের আহŸান জানাই।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ