পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাখাওয়াত হোসেন : প্রিয় মানুষ গুলোকে আমরা আর ফিরে পাব না। তবুও আসি শান্তনা খোঁজে পাবার জন্য। যারা চলে গেছেন তাদের পরিবার বুঝে কি হারিয়েছেন তারা। আমাদের কষ্টগুলো অন্যকারো নয়, এটা অন্য কেউ বুঝবে না। গতকাল রোববার বনানী সামরিক কবরস্থানে পিলখানায় শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরা এভাবেই নিজেদের মনের কষ্টের কথাগুলো তুলে ধরেন সাংবাদিকদের কাছে। গতকাল রোববার সকাল থেকেই বিডিআর বিদ্রোহে নিহত প্রত্যেকের পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা বনানী কবরস্থানে আসতে থাকেন। একসময় কবরের পাশে দাঁড়িয়ে কান্না শুরু করেন তারা। এ সময় আশপাশের পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।
বনানী কবরস্থানে ভাইয়ের কবর জিয়ারত শেষে বিডিআর বিদ্রোহে শহীদ কর্নেল শওকত ইমামের ছোট বোন মাসুদা সাঈদ শেলী বলেন, আমি ভাই হারিয়েছি। এই হারানো কখনও পূরণের না। আমাদের পাবার বা হারাবার আর কিছু নেই। আমাদের যা হওয়ার হয়েছে। কিন্তু যারা আমাদের ও রাষ্ট্রের এত বড় সর্বনাশ করলো, তাদের বিচার দ্রæত করা উচিত। আমরা কেবল ভাইয়ের মর্যাদা চাই এবং অপরাধীদের দ্রæত শাস্তি চাই। তিনি বলেন, আমরা কী পেলাম বা কী চাই সেটা বড় কথা নয়। কিন্তু আমরা যা হারিয়েছি, তা পূরণের না। আমাদের বুকে যে ক্ষত তা কখনও শুকাবে না। এটা পূরণের না। আর কতকাল এভাবে চোখের পানি ঝরাবো? বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের স্ত্রী নাজনীন আহমেদের ভাই আহম্মেদ সালেহ উদ্দিন কবরস্থান প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে বলেন, আমরা দোয়া করা ছাড়া আর কী করতে পারি? এখনও বিচার বাকি রয়েছে। দ্রæত বিচার হোক এটাই আশা করি।
শহীদ মেজর মিজানুর রহমানের মা কহিনূর বেগম প্রতিবছরের মতো এবারও কবরস্থানে এসেছেন বড় ছেলে লে. কর্নেল ফেরদৌসের সঙ্গে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মিজানুরের বড় ছেলে তাহসিন রহমান রামি (১৫)। রামি বর্তমানে মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজে পড়াশুনা করছেন। দাদী ও চাচার সঙ্গে রামি বাবার কবর জিয়ারত করেছিলেন। শহীদ মেজর মিজানুর রহমানের মা কহিনূর বেগম ছেলের কবরের পাশে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় তিনি বলেন, ঘটনার দিন সকালে বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার আগে আমাকে বলে, মা তুমি সামিকে দেখো। এরপর আমার বাবা আমাকে আর মা ডাকলো না, আর কথা বলল না। সামির বয়স তখন তিন বছর। এখন সামি স্কুলে যায়। কিন্তু মিজান কিছুই দেখতে পেলো না। এরপর তিনি আবার কান্নায় ভেঙে পড়েন।
পাশেই শহীদ মেজর মমিনুল ইসলাম সরকারের বাবা ও বোন বিলাপ করছিলেন। মেয়েদের নিয়ে ছেলের কবর জিয়ারত করতে এসেছেন মফিজুল ইসলাম সরকার। তারাও দ্রæত বিচার কার্যকরের দাবি জানান। সবার মতো নিহত মেজর মমিনুল ইসলামের ভাই ডা. শাহরিয়ার পরিবার ও স্বজন নিয়ে ভাইয়ের জন্য দোয়া করেছেন সামরিক কবরস্থানে। তিনি চলে যাওয়ার সময় বলেন, আমরা দ্রæত বিচার কার্যকর দেখতে চাই। আমাদের ক্ষতের জায়গাটা একটু হলেও শুকাবে যদি দেখি অপরাধীদের শাস্তি হয়েছে। উল্লেখ ২০০৯ সালের ২৫ ফের্রুয়ারী বিদ্রোহের ঘটনায় বিডিআরের মহাপরিচালকসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন নির্মমভাবে শহীদ হন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।