পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভয়েস অব আমেরিকা : সোমবার যখন প্রথম জেট বিমানটি ইস্তাম্বুলের নতুন বিমান বন্দরে অবতরণ করবে তখন এক মাইল ফলক রচিত হবে। বিশ্লেষকরা একে দেখছেন ডলারের মাধ্যমে সম্পন্ন তুরস্কের একটি নির্মাণ কাজ হিসেবে যা প্রচলিত কূটনীতির মাধ্যমে অর্জিত হওয়া সম্ভব হয়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেয়ার দীর্ঘ চেষ্টায় হতাশ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান ইউরোপীয় দেশগুলোতে তার সফরের সময় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর উপর জোর দিয়েছেন। তিনি তুরস্কের বিরুদ্ধে মানবাধিকার রেকর্ডের সমালোচনা নীরব করে দিয়ে ব্যাপক আকারে নির্মাণ প্রকল্পের কাজে চীনের পরেই তার দেশকে স্থাপন করেছেন। উল্লেখ্য, মানবাধিকার প্রশ্ন তুরস্কের ইইউতে প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে রেখেছে।
ইস্তাম্বুলের তৃতীয় বিমান বন্দর, যা অক্টোবরের শেষদিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করা হবে, বছরে ২০ কোটি যাত্রী সামলাতে সক্ষম হবে। এটি বিশে^র অধিকাংশ বিমান বন্দরকেই ছাড়িয়ে যাবে এবং তুরস্ককে ইউরোপ ও এশিয়াকে সংযোগকারী গুরুত¦পূণর্ প্রবেশদ্বার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে। তুরস্কের বহু মেগা প্রকল্পের জন্য ইউরোপীয় বিনিয়োগ গুরুত¦পূর্ণ। যেমন এ বিমান বন্দর ও এ সপ্তাহে ঘোষিত বহু শত কোটি ডলার বিনিয়োগের উইন্ড টারবাইন ফার্ম নির্মাণ। এরদোগান আরো বেশি প্রকল্প লাভের জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এ মাসের গোড়ার দিকে তিনি ভ্যাটিকানে পোপের সাথে সাক্ষাত করতে যাওয়ার প্রাক্কালে বলেন, ইতালির সাথে গত বছর আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২০ বিলিয়ন ডলার। তবে সম্ভাবনা আরো অনেক বেশি। ২০২০ সালের মধ্যে আমরা আমাদের বাণিজ্যের পরিমাণ ৩০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য স্থির করেছি।
তুরস্কের বেশ কিছু সংখ্যক উদ্যোগ থেকে ইতালীয় কোম্পানিগুলো লাভবান হয়েছে। তারা বেশ কিছু প্রতিরক্ষা ও নির্মাণ চুক্তি লাভ করেছে যার মধ্যে রয়েছে বিশে^র অনতম উচ্চ ও প্রশস্ত সাসপেন্সন স্প্যান, ইস্তাম্বুলের ইয়াভুজ সুলতান সেলিম ব্রিজ যা ২০১৬ সালে নির্মাণ সম্পন্ন হয়। গোটা মহাদেশ জুড়ে যখন কৃচ্ছ্রতা চলছে তখন এসব চুক্তি ইউরোপীয় কোম্পানগুলোর জন্য সৌভাগ্য হয়ে এসেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, তুরস্কের ক্ষেত্রে এ দিকটি ভোলার নয় যে মানবাধিকার বিষয় ও প্রতিবেশি সিরিয়ায় সামরিক অভিযানের সমালোচনা বন্ধ করার জন্য দেশটি এ ধরনের অংশীদারত¦কে ফলপ্রসূ অস্ত্র হিসেবে দেখছে। রাষ্ট্র বিজ্ঞানী চেঙ্গিস আকতার বলেন, আংকারা এ সকল অবকাঠামো প্রকল্প দিয়ে সকলকে ও সবকিছুকে কিনে নিচ্ছে। আর প্রত্যেকেই এতে খুশিও। তিনি বলেন, ইউরোপীয়রা যা চায় তা পাচ্ছে এবং তারা তুরস্কের সাথে বাণিজ্য অব্যাহত রাখতে চায়। রসালো অবকাঠামো পেয়ে তারা খুশি। এ কারণটি তাদের শান্ত রেখেছে। তুরস্কে আইনের শাসনের নামে যা ঘটছে সে জন্য যারা যেটুকু আহা উহু করে, তা কুমিরের কান্না ছাড়া কিছু নয়। বিশ্লেষকদের মতে, এ সব চুক্তি লাভের ব্যাপারে ইউরোপে প্রচন্ড প্রতিযোগিতা চলছে।
গেøাবাল সোসর্র্ পার্র্টনারের আত্তিলা ইয়েসিলাদা বলেন, এসব মেগা প্রকল্প, নির্মাণ অবকাঠামো, টানেল ইত্যাদি ভীষণ রকম লোভনীয়।
ব্রিটেনের সাথে অস্ত্রচুক্তি
ব্রিটেন ও তুরস্কের মধ্যে পৃথক ভাবে গভীর বাণিজ্য সম্পর্র্ক গড়ে উঠেছে, তা বিশেষ করে অস্ত্র বিক্রির ভিত্তিতে। ব্রিটেনের বিএই তুরস্কের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য সামরিক স্টিলথ জেট তৈরি করছে। একই সময় তুরস্কের মানবাধিকার রেকর্ড ও সিরিয়ায় সামরিক অভিযান বিষয়ে লন্ডন সামান্যই সমালোচনা করেছে।
বুধবার তুরস্কের ক্ষমতাসীন একে পার্র্টির ডেপুটি চেয়ারম্যান মেহদী একার ব্রিটিশ পার্র্লামেন্টে এক সভায় বক্তৃতা করেন এবং কুদির্র্ মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে তুরস্কের চলমান সামরিক অভিযান বিষয়ে ব্রিটিশ অবস্থানের প্রশংসা করেন।
নতুন বাস্তবতা
আংকারা ইউরোপীয় দেশগুলোর সাথে তার কূটনৈতিক কৌশল নির্ধারণে ‘নতুন বাস্তবতা’ প্রবাদটি অনুসরণ করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, তুরস্কের পররাষ্ট্র নীতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে সম্পর্কে ক্রমশই দূরত¦ বাড়ছে। পরিবর্তে বাস্তবতার আলোকে ইউরোপের দেশগুলোর সাথে পৃথক ভাবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তোলার দিকে গুরুত¦ দিচ্ছে তুরস্ক। আল মনিটর ওয়েবসাইটে রাজনৈতিক কলামিস্ট সেমিহ আইদিজ বলেন, সম্পর্র্ক গড়ার নতুন ধারণা এ রকমঃ আসুন, আমাদের সমস্যা সরিয়ে রাখি, এ নিয়ে লড়াই নয়, ঐকমত্য হোক আর না হোক। তবে বাস্তব সমস্যা রয়েছে যেগুলোর মোকাবেলা করতে হবে। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে সকল বিরূপ মনোভাব সত্তে¡ও তুরস্ক, ফ্রান্স ও ইতালির মধ্যে নির্মাণ ও কৌশলগত চুক্তি স্বাক্ষরিত হচ্ছে এবং ব্রেক্সিট-উত্তর সময়ে তুরস্ক-ব্রিটেন সম্পর্র্ক নিঃসন্দেহে শক্তিশালী হবে। এটা ইউরোপে তুরস্কের মিত্র প্রয়োজন বলে নয়, এটা এ কারণে যে ব্রিটেনের বিকল্প বাজার ও বিকল্প অংশীদার দরকার। আইদিজ বলেন, বহু স্থান রয়েছে যেখানে তুরস্কের কূটনীতি কাজ করতে পারে। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের সরে যাওয়া স্থগিত থ্কাার কথা উল্লেখ করেন।
সমালোচকরা তুরস্কের সাথে ইউরোপের সম্পর্র্ক প্রসঙ্গে ক্রমবর্ধমান ভাবে সেই প্রবাদ বাক্যের উল্লেখ করছেন যাতে বলা হয়েছেঃ তিনি যে বাঁশিওয়ালার টাকা পরিশোধ করেন। তারা বলছেন, যতদিন পর্যন্ত ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোকে দিয়ে অবিরাম ও লোভনীয় কাজ করানোর টাকা আংকারার থাকবে ততদিন পর্যন্ত তার ইউরোপের সাথে নয়া বাস্তবতার পররাষ্ট্র নীতি অব্যাহত থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।