Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাশ্রয় হবে বৈদেশিক মুদ্রার

বগুড়াতেই তৈরি হচ্ছে ডিজিটাল স্কেল

| প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে : পণ্য কেনাবেচায় এখন সনাতন পদ্ধতির দাঁড়িপাল্লা ও বাটখারার পরিবর্তে বগুড়ায় এখন স্বর্ণ থেকে মুদি সামগ্রী, সবজি, মাছ, মাংস, রড, সিমেন্ট, পুরাতন জিনিস ক্রয় বিক্রয়ের দোকান থেকে শুরু করে বড়বড় যানবাহন ওজন করার জন্যও এই ডিজিটাল ওজন স্কেল ব্যবহার হচ্ছে। এর ব্যবহার সম্প্রতি এত বেড়েছে যে ব্যবসায়ীদের ভাষায় তা রীতিমত বিপ্লবের। আর এই ডিজিটাল টেকনোলজির বিপ্লব ঘটিয়েছে বগুড়ার শোভা এ্যাডভান্সড টেকনোলজিস লিমিটেড নামের একটি উৎপাদক ও বিপননকারী প্রতিষ্ঠান। এই কোম্পানী দেশে উৎপাদিত সুমো ডিজিটাল স্কেল তৈরি করছে এবং তা বিদেশ থেকে আমদানীকৃত ডিজিটাল স্কেল কে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। বগুড়ার এই ডিজিটাল স্কেল উৎপাদক প্রতিষ্ঠানটি সরকারি সহায়ত পেলে বিদেশ থেকে ডিজিটাল স্কেল আমদানীর দরকার হবে না। সেই সাথে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় ও হবে। খবর নিয়ে জানা যায়, বগুড়াতেই এখন তৈরি করা হচ্ছে ডিজিটাল ওজন স্কেল। বাটখারার ঝামেলা ও সময় বাঁচাতে ক্ষুদ্র থেকে উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়িরা ডিজিটাল স্কেল ব্যবহার করছে। বগুড়া শহরের সর্বত্র ওজন হচ্ছে ডিজিটাল স্কেল দিয়ে। বেশিরভাগ রড সিমেন্টর দোকানসহ মিষ্টি ও বেকারীর দোকানে, হোটেল রেস্টুরেন্টে, ফলের দোকান, মুরগী বাজারে, সবজির দোকানে শহরের বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িরা এই ডিজিটাল ওজন স্কেল ব্যবহার করছে। ডিজিটাল স্কেলের মধ্যে প্রায় ৯৫ ভাগই বগুড়ার শোভা এ্যাডভান্সড টেকনোলজিস লিমিটেড এর কারখানায় তৈরি করা।
বগুড়ার শোভা এ্যাডভান্সড টেকনোলজিস লিমিটেড এর কারখানায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০টি সুমো ডিজিটাল ওজন স্কেল তৈরি হচ্ছে। উৎপাদকরা বলছেন, পণ্য পরিমাপের ওজন স্কেল তৈরিতে আরো অর্থ বিনিয়োগ করতে পারলে এবং সরকারি সহযোগিতা পেলে বিদেশে রপ্তানী করে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে এ প্রতিষ্ঠানটি। শোভা এ্যাডভান্সড টেকনোলজিস লিমিটেড’র সি.ই.ও সৈয়দ আহম্মেদ কিরন জানান জানান, তিনি একদিন বাজারে গিয়ে সনাতন বাটখার দিয়ে ৫০ কেজি ওজনের পেঁয়াজের বস্তা কেনেন। বাড়ি গিয়ে এসে মেপে দেখেন বস্তার ওজন ৪৮ কেজি। অর্থাৎ ২ কেজি কম। তখন তার মাথায় এলো সঠিক ওজনের ডিজিটাল স্কেল তৈরি করা। বিদেশের আমদানিকৃত ডিজিটাল স্কেলের সাথে পাল্লা দিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে শিল্প নগরী বগুড়ায় তৈরি করছেন সব ধরনের ডিজিটাল স্কেল। শোভা এ্যাডভান্সড টেকনোলজিস লিমিটেড কারখানার চীফ প্রকৌশলী শাহীন হোসাইন জানান, মোট প্রকৌশলী রয়েছে ১৯ জন। আর সারা দেশে প্রকৌশলী রয়েছে মোট ৯৬ জন। শ্রমিক প্রয়োজনমত কম বেশি হয়ে থাকে। তবে স্থায়ীভাবে রয়েছে অর্ধশত। আর দেশে শ্রমিক রয়েছে প্রায় ২শ’ জন। ৪শ’৮৫টি উপাদান দিয়ে একটি ওজন স্কেল তৈরি হয়ে থাকে। মাননিয়ন্ত্রণে বিএসটিআই পরীক্ষিত। প্রতিদিন গড়ে ৪০টি ওজন স্কেল তৈরি করা যায়। ১৯৯৯ সালে মেসার্স শোভা এন্টারপ্রাইজ নামে প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু। এরপর প্রতিষ্ঠানটি কার্টুন, প্রিন্টিং, এ্যাডহোসিভ টেপ, বান্ডিং টেপ, ব্যাটারীসহ বেশ কয়েকটি পণ্য তৈরি করে বাজারজাত করতো। ২০০৯ সালে এসে মেসার্স শোভা এন্টারপ্রাইজ এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসেবে শোভা এ্যাডভান্সড টেকনোলজিস লিমিটেড এর কাজ শুরু হয় বগুড়া শহরের স্টাফ কোয়ার্টার লেনের মালতীনগরে। এই কারখানা থেকে সুমো ডিজিটাল স্কেল তৈরি করা হচ্ছে। সুমো ডিজিটাল ওজন স্কেলটি বগুড়া, জয়পুরহাট, রংপুর, গাইবান্ধা, রাজশাহী, নাটোর, ঢাকা, টাঙ্গাইলসহ দেশের প্রায় জেলায় বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিটি জেলায় রয়েছে বিক্রয় প্রতিনিধি ও প্রকৌশলী। রয়েছে ক্রেতা পর্যায়ে সুবিধা প্রদানে কল সেন্টার ও সেবা দেয়ার জন্য জনবল। বগুড়ার সুমো ডিজিটাল ওজন স্কেল তৈরির প্রতিষ্ঠান শোভা এ্যাডভান্সড টেকনোলজিস লিমিটেড’র সি.ই.ও সৈয়দ আহম্মেদ কিরন ২০১৩ সালে সিআইপি হয়েছিলেন। কারখানায় সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। প্রতি মাসে প্রায় ১০ কোটি টাকার পণ্য উৎপাদন হয়ে থাকে। সারাদেশে সুমো ডিজিটাল ওজন স্কেল বিক্রি হচ্ছে; এজন্য কাজ করছে ৯৬ জন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। তিনি জানান, সরকারি সহযোগিতা পেলে এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর নিশ্চয়তা পেলে সুমো ডিজিটাল স্কেল বিদেশে রপ্তানী করা সম্ভব হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডিজিটাল

১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ