Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফেসটাইম প্রযুক্তি যেভাবে বাঁচিয়ে দিলো জীবন

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ফেসটাইম ভিডিওতে এক নারী তার বোনের সাথে কথা বলছিলেন। সেসময় তিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হন এবং সেটি তার বোনের চোখে পড়ায় তার জীবন বেঁচে গেছে। সুস্থ হয়ে উঠার পর তিনি বলছেন, প্রযুক্তি তার জীবন বাঁচিয়ে দিয়েছে।
নাম ওপুকোয়া কোয়াপং। তিনি একা থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরের একটি বাড়িতে। সেখান থেকে তিনি কথা বলছিলেন যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার শহরে বসবাসকারী তার বোন আদুমেয়া সাপোং-এর সাথে।
তখন মিসেস সাপোং তার বোনের মুখে এক ধরনের পরিবর্তন দেখতে পান। তার কাছে মনে হয় যে তার বোন আসলে দেখতে যেরকম তাকে ঠিক সেরকম দেখাচ্ছে না।
তার বোনের কণ্ঠ ভেঙে পড়ছে - এটা টের পাওয়ার পরপরই তিনি একটা ব্যবস্থা নেন যা তার বোনকে বাঁচিয়ে দিয়েছে।
মিস কোয়াপং বলছেন, তিনি বুঝতে পারছিলেন না তার পরিস্থিতি কতোটা গুরুতর হয়ে উঠেছিলো।
৫৮ বছর বয়সী এই নারী জানান, তিনি যখন দুপুরবেলা ঘুম থেকে জেগে উঠেন তখনই তার বোন সাপোং তাকে ফেসটাইমে ফোন করেছিলেন। এটা আইফোনে ভিডিও ফোনের একটি ফিচার।
মিস কোয়াপং বলেন, “আমার বোন আমার দিতে তাকালো এবং বললো যে আমার মুখটা নাকি ঠিক দেখাচ্ছে না।
“সে আরো বললো আমার কথা নাকি জড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমার মনে হচ্ছিলো সে আমাকে নিয়ে মজা করছে। আমি তার কথা বিশ্বাস করিনি।”
মিসেস সাপোং বলেন, “আমি যখন ওকে ফোন করি সে বলছিলো যে সে নাকি ভালো ফিল করছে না। তার নাকি ক্লান্ত লাগছিলো। এমনকি তার নাকি হাঁটতেও অসুবিধা হচ্ছিলো।
“আমি তাকে বললাম, তোমার হয়তো এসপিরিন খেতে হবে। সে একটা গøাস হাতে নেওয়ার চেষ্টা করছিলো। কিন্তু পারছিলো না। তখন আমি ফেস টাইম ভিডিও কলে দেখলাম যে তার মুখ বাঁকা হয়ে ঝুলে পড়ছে। আমি তখন ফোন রেখে তাড়াতাড়ি ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে বলি।”
“সে ভাবলো আমি তার সাথে মজা করছি। তখন আমি আমার আরো এক বোনের সাথে যোগাযোগ করি। সে একজন ডাক্তার। সেও দেখলো যে তার কথা জড়িয়ে যাচ্ছে। তখন আমরা দু’জনেই তাকে বলি জরুরী লাইনে ফোন করে সাহায্য চাইতে।”
মিস কোয়াপং তখন ৯১১ নম্বরে ফোন করেন। তারপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। স্ক্যান করে দেখা যায় তার মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে গেছে।
এই স্ট্রোকের পর তার শরীরের বাম দিক অবশ হয়ে গেছে।
মিস কোয়াপং, যিনি নিজেও একজন খাদ্য বিজ্ঞানী, বলেছেন, ফেসটাইম যে আমার জীবন বাঁচিয়ে দিয়েছে সেটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
“আমার বোন যদি এটা লক্ষ্য না করতো, তাহলে পরিস্থিতি অন্য রকমও হতে পারতো।”
তিনি বলেন, যেহেতু তিনি খুব বেশি চলাফেরা করতে পারেন না সেকারণে তিনি ভিডিও কনফারেন্সিং-এর উপর অনেক বেশি নির্ভর করে থাকেন।
মিসেস সাপোং বলেন, “ইন্টারনেট ও প্রযুক্তি সম্পর্কে আমরা প্রচুর নেতিবাচক কথা শুনি। তবে প্রযুক্তি যে ভালো কিছুও হতে পারে সেটা তার একটা উদাহরণ।
স্ট্রোকের ব্যাপারে লোকজনকে সচেতন করতে কাজ করছেন এমন একজন এসমি রাসেল বলেন, “যে কারোরই স্ট্রোক হতে পারে, যেকোনো বয়সে, যেকোনো সময়ে এটা হতে পারে। সেকারণে মানুষকে খুব দ্রæত ব্যবস্থা নিতে হবে। তখন হয়তো জীবন বাঁচানোও সম্ভব হতে পারে।
মস্তিষ্কের কোনো একটা অংশে রক্ত জমাট হয়ে তার প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে কিম্বা রক্তক্ষরণের কারণে মস্তিষ্কের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়।
সূত্র : বিবিসি

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ