Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

শিক্ষার্থীকে জিম্মি করল চবি ছাত্রলীগ নেতা লাখ টাকায় মুুক্তি

| প্রকাশের সময় : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

 চবি সংবাদাতা : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) সকাল দশটায় তাকে তুলে নিয়ে অজ্ঞাতস্থানে জিম্মি করার পর বিকেল সাড়ে তিনটায় সোয়া এব লাখ টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হয়। এ নিয়ে তিন দফায় পৌনে দুই লাখ টাকা আদায় করেন ওই ছাত্রলীগ নেতা। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা অনিক হোসেন সাব্বির চবি ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির উপ-অর্থ সম্পাদক। ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী সাব্বির আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও চবি ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। জিম্মি মোঃ সাজিক খাঁন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনে প্রথম বর্ষের ছাত্র। 

জানা যায়, সাজিকের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলায়। সাজিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক’ ইউনিটে মেধা তালিকায় ৮৭তম স্থান অধিকার করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার আগে সাজিক ওই নেতার সাথে যোগাযোগ করেন। নেতা তাকে প্রাণ রসায়নে ভর্তি করে দেয়ার আশ্বাস দেন। এ নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির ও সাজিকের সাথে দেড় লাখ টাকার একটি চুক্তি হয়। সাজিক সেই সময় ৫০ হাজার টাকা সাব্বিরকে অগ্রিম দেয়। কিন্তু পরে সাজিক জানতে পারেন পরীক্ষা দিয়ে মেধা তালিকায় নাম থাকায় প্রাণ রসায়নে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এতে ছাত্রলীগ নেতার কোন হাত ছিল না। এ কারণে তিনি বাকি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করায় সাব্বির বার বার সাজিককে হুমকি দিয়ে আসছিল। যার ফলে সাজিক তার মার কাছ থেকে গতকাল আরও ২৫ হাজার টাকা নিয়ে সাব্বিরকে দেয়। সেই সময় সাব্বির তার কয়েকজন কর্মী নিয়ে সাজিককে একটি রুমে আটকে রেখে সাজিকের মার কাছে আরও ২ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে তার ছেলেকে মেরে ফেলবে বলে হুমকিও দেয়।
চাঁদা দাবির বিষয়টি নিশ্চিত করে জিম্মি শিক্ষার্থীর মা জহুরা বেগম বলেন, প্রাণ রসায়নে ভর্তির সুযোগ করে দেবে বলে দেড় লাখ টাকা চুক্তি করেছিল সাব্বির। তবে সে ভর্তি পরীক্ষায় ভাল করেছে আর এ কারণে সে ওই বিষয়ে ভর্তি হতে পেরেছে। এরপরও আমরা সাব্বিরকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি। তার চাপাচাপিতে আরও ২৫ হাজার টাকা নিয়ে যাওয়ার পর সে আমার ছেলেকে জিম্মি করে। আমি তাকে বারবার বলেছি বাবা আমাকে মাফ করে দাও আমরা গরীব মানুষ এত টাকা দিতে পারব না। কিন্তু সে কোন কথাই শুনেনি। সে বলছে আরও ২ লাখ টাকা না দিলে আপনার ছেলেকে পাবেন না আপনার ছেলেরে জানে মেরে ফেলব। ছেলের জীবন রক্ষায় ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিকেলে আরও ১ লাখ টাকা দিয়েছি। তার পরে আমার ছেলেকে তারা ছেড়ে দিয়েছে। এ নিয়ে তিন দফায় সে পৌনে ২ লাখ টাকা আদায় করেছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত অনিক হোসেন সাব্বিরকে ফোন দিলে ফোন রিসিভ করে কথা না বলে কেটে দিয়ে ফোন বন্ধ করে রাখেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নওফেলের গ্রæপে কোনভাবে কোন অন্যায়ের দায়ভার নেবে না জানিয়ে চবি ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, যে বা যারা অন্যায় করবে তারা অন্যায়কারী তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী বলেন, আমিও বিষয়টি শুনেছি এবং পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছি তারা যথাযথ ব্যবস্থা নিবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ