পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
১৬টি গাড়ি প্রক্টর অফিসসহ ১২টি কক্ষ ভাঙচুর অবরোধ ফটকে তালা অস্ত্রসহ গ্রেফতার ৮
চবি সংবাদদাতা: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তান্ডব চালিয়েছে ছাত্রলীগের এক গ্রæপের নেতাকর্মীরা। তাদের হামলায় প্রক্টর অফিস, সাংবাদিকদের গাড়িসহ ১৬টি যানবাহন ভাঙচুর হয়েছে। তছনছ করা হয়েছে ১২টি অফিস কক্ষ। শাটল ট্রেনের হোস পাইপ কেটে, শিক্ষক বাস ভাঙচুর ও প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে অবরুদ্ধ করে তারা। গতকাল (মঙ্গলবার) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দফায় দফায় এ তাÐবে অচল হয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল ছুঁড়েছে পুলিশ। দুই গ্রæপের সশস্ত্র সংঘাতের পর সোমবার গভীর রাতে শাহ আমানত ও শাহজালাল হলে তল্লাশি চালিয়ে অস্ত্রশস্ত্রসহ ছাত্রলীগের ৮নেতাকর্মীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে এবং প্রক্টরের পদত্যাগ দাবিতে গতকাল এই তাÐব চালিয়েছে ছাত্রলীগের এক গ্রæপের নেতাকর্মীরা।
তাদের বেপরোয়া ও চোরাগুপ্তা হামলায় একটি বেসরকারি টেলিভিশনের দুই সাংবাদিকসহ আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। ছাত্রলীগের এ গ্রæপটি চবি ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। সোমবার আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে এ গ্রæপের কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এর জের ধরে সোমবার রাত বারটা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল হল ও শাহ আমানত হলে প্রক্টরের উপস্থিতিতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। এসময় দুইটি এলজিসহ বিপুল সংখ্যক রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার করা হয় ৮ নেতাকর্মীকে। এর প্রতিবাদে প্রক্টরের পদত্যাগ দাবিতে সকাল থেকে ক্যাম্পাসে ব্যাপক ভাঙচুর তাÐব চালায় তারা।
দিনের শুরুতে শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেনের হোস পাইপ কেটে দেয় অবরোধকারী ছাত্রলীগ কর্মীরা। এর ফলে সারা দিন শাটল চলাচল বন্ধ ছিল এবং পূর্বনির্ধারিত কোন ক্লাস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বাসের সব চাবি ছিনিয়ে নেয় তারা। এরপর বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে প্রক্টরকে ব্যঙ্গকরে বিভিন্ন ¯েøাগান দিতে থাকে তারা। প্রায় একঘণ্টা মূল ফটক বন্ধ থাকার পরে পুলিশ এসে অবরোধকারীদের ধাওয়া দেয় এবং ছয় রাউন্ড টিয়ারশেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সর্পোটে পার্কিং করা ১২টি শিক্ষক বাস ভাঙচুর করে অবোরধকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এরপর বেলা আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের অফিসসহ কলা অনুষদের ডিনের অফিস, নাট্যকলা বিভাগের ৬টি কক্ষ, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের তিনটি কক্ষসহ আরও বেশ কয়েকটি কক্ষ ভাঙচুর করে তারা। এসময় দুইটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলের গাড়িও ভাঙচুর করে অবরোধকারী ছাত্রলীগ কর্মীরা।
ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি ও সিক্সটি নাইন গ্রæপের নেতা মোঃ আলমগীর টিপু বলেন, গতকাল রাতের অন্ধকারে প্রক্টরের উপস্থিতে ভিসির নির্দেশে চারবার ঘুমন্ত সাধারণ শিক্ষার্থীসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উপর হামলা, লুটপাট নির্যাতন করে পুলিশ। আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রক্টরের বিচার দাবি করছি এবং তার পদত্যাগ দাবি করছি অন্যথায় ক্যাম্পাস অনির্দিষ্ট কালের জন্য অবরোধ থাকবে।
রাতের অন্ধকারে ছাত্রলীগ কর্মীদের উপর হামলা ও নির্যাতনের অভিযোগ নাকচ করে চবি প্রক্টর মোঃ আলী আজগর চৌধুরী বলেন, সোমবার রাতে হলে তল্লাশি চালানো হয় তবে পুলিশ কাউকে নির্যাতন করেনি। এসময় কয়েকজনের কাছে ভার্সিটি আইডি কার্ড বা মানি রশিদ না থাকায় সন্দেহজনকভাবে পুলিশ তাদের আটক করে। এছাড়া একটি ব্যাগে ভর্তি দুইটি এলজি ও বিপুল সংখ্যক রামদাসহ দেশীয় অস্ত উদ্ধার করা হয়। ছাত্রলীগ তার পদত্যাগের দাবি তুলেছে এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, তাদেও এই অযোক্তিক দাবিতে আমি কেন পদত্যাগ করব। আমি অন্যায় কিছু করিনি তারা যদি যোক্তিক কোন কারণ দেখাতে পারে তা হলে সেটা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ বিবেচনা করবে।
চট্টগ্রাম পুলিশ সুপার (উত্তর) মোঃ মশিউদৌলা রেজা বলেন, প্রক্টরের পদত্যাগ দাবিতে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র ক্যাম্পাসের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা তাদের প্রতিহত করি। এদিকে চবির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। নিয়োগ নিয়ে বাণিজ্য করতে না পারায় ছাত্রলীগের দু’টি গ্রæপ সংঘাত-সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েছে। আর এর খেসারত দিচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।