Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অন্যান্য দেশের সাহায্য চাইবে মালদ্বীপ

গ্রেফতার বিচারকদের সম্পদ তদন্ত

| প্রকাশের সময় : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

আখবার এলায়ম ইংলিশ : ঘুষ নেয়া এবং দেশের রাজনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে টেনে নিতে সুপ্রিম কোর্টকে ছিনতাইয়ের সন্দেহভাজন বিচারকদের সম্পদের ব্যাপারে তদন্তের জন্য মালদ্বীপ অন্যান্য দেশের সাহায্য চাইবে। বিলাসবহুল হোটেল ও ডাইভ রিসোর্টের জন্য ভারত মহাসাগরের এ দ্বীপ দেশটি বিশ্বে সুপরিচিত। দেশের শীর্ষস্থানীয় নয় জন বিরোধী নেতার মুক্তির আদেশ দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় অকার্যকর করতে ১৫ ফেব্রæয়ারি দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূত আহমেদ শিয়ান রয়টারসকে বলেন, দেশকে থামিয়ে দিতে ও একটি অচলাবস্থা সৃষ্টির জন্য সেটা ছিল সুপ্রিম কোর্টের সরাসরি চেষ্টা। তিনি রয়টারসকে মালদ্বীপ পুলিশের একটি বিবৃতি প্রদর্শন করেন যাতে বলা হয়েছে, ২ লাখ ১৫ হাজার ডলার ও দেড় লাখ রুফিয়া (৯ হাজার ৭শ’ ডলার) ভরা সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারকের একটি ব্যাগ পাওয়া গেছে। এছাড়া একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান পৃথকভাবে ঐ বিচারকের কাছে ২৪ লাখ ডলার পাঠিয়েছে। শিয়ান বলেন, ঐ বিচারক ও দ্বিতীয় আরেক বিচারককে সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল কাইয়ুমের পক্ষে রায় দেয়ার লক্ষ্যে তার কাছ থেকে ঘুষ নিয়েেেছন সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদিকে সরকার উৎখাতের জন্য ঘুষ প্রদানের অভিযোগে মামুনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সাক্ষাতকারে শিয়ান বলেন, উভয় ঘটনা একত্রে গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত একটি সরকার ও একটি সাংবিধানিক সরকারকে উৎখাত করতে সুপ্রিম কোর্টকে ব্যবহারের যোগসাজশের পর্যায়ে পড়ে।
মামুনের আইনজীবী মামনুন হামিদ বলেন, কোনো প্রমাণ ও বিধিসম্মত প্রক্রিয়া ছাড়াই জরুরি অবস্থার আওতায় তাকে আটক করা হয়েছে যা গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেন, এটা যদি এত বিরাট তদন্ত হয়ে থাকে ও মামুন আবদুল কাইয়ুম এত বিপজ্জনক ব্যক্তি হন তাহলে ১৪০ ঘন্টায়ও তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি কেন?
দুই বিচারকের আইনজীবীরা বলেন, তাদের মক্কেলরা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এক আইনজীবী বলেন, তার মক্কেলকে অভিযোগ অস্বীকার করার অনুমতি দেয়া হয়নি।
বিদেশী সাহায্যের আবেদন
শিয়ান বলেন, এ পর্যন্ত আমাদের জানা মতে, এ দুই বিচারক গত কয়েক মাসে ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশ সফর করেন। এ সময় তারা ব্যয়বহুল সামগ্রী ক্রয় বা সংগ্রহ করেন।
শিয়ান বলেন, বিদেশে জিনিস কেনা হলে তা ঘোষণা করা প্রয়োজন। অন্যদিকে ২৪ লাখ ডলার একজন বিচারকের বেতনের নাগালের বাইরে। তিনি বলেন, তাই তদন্ত শুধু মালদ্বীপেই সীমিত নয়। তদন্তের জন্য অন্যান্য দেশগুলোর সাহায্যও আমাদের প্রয়োজন হবে।
তিনি বলেন, দুই বিচারক অপ্রত্যাশিত ভাবে ও কোনো প্রমাণ ছাড়া রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তিদান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদের পুনর্বিচারের রায় দেয়ার জন্য মধ্যরাতে সুপ্রিম কোর্টের অন্য ৩ বিচারককে অনুরোধ করেন। নাশিদকে ২০১৫ সালে ১৩ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে।
শুধু তাই নয়, তারা অ্যাটর্নি জেনারেল, প্রসিকিউটর জেনারেল, পুলিশ কমিশনার ও প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনকে অপসারণের চেষ্টা করেন। আমার ধারণা, এটা করার সময় অন্য তিন বিচারক বেরিয়ে আসেন ও বলেন কিভাবে সবকিছু ছিনতাই করা হয়েছে এবং কিভাবে আসলে তা উন্মোচিত হয়েছে।
বিরোধী দলীয় নেতারা অতীতে তাদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের মিথ্যা অভিযোগ এনে লক্ষ্যবস্ত করার অভিযোগ করেছেন। ইয়ামিন এ ধরনের অভিযোগ নাকচ করেছেন। বিরোধী নেতারা এ বছরের পরের দিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইয়ামিনকে চ্যালেঞ্জ করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাদের কেউ কেউ মালদ্বীপে হস্তক্ষেপ করতে ভারতের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
এদিকে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ভারত বিচারকদের মুক্তি দেয়ার আহবান জানিয়েছে। অন্যদিকে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের কাছে নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞদের রিপোর্ট হচ্ছে মালদ্বীপে আইনের শাসন রুদ্ধ।
শিয়ান বলেন, মালদ্বীপ সর্বদলীয় বৈঠকের আয়োজন করতে চায়। এ জন্য তিনি জাতিসংঘের সহায়তা কামনা করেন। তিনি বলেন, ইয়ামিন এ বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করবেন। কিন্তু মামুন কিংবা নাশিদ নির্বাচন করার যোগ্য নন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ