Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যানজট নিরসনে নতুন মাত্রা হাতিরঝিলের আদলে নৌ-পথ হচ্ছে গুলশান লেকে

| প্রকাশের সময় : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম


স্টাফ রিপোর্টার : একটি জনবহুল শহরের লোকসংখ্যা ও যানবাহণের তুলনায় যে পরিমাণ সড়কের প্রয়োজন তার চেয়ে বহুগুন কম সড়ক রয়েছে রাজধানী শহর ঢাকায়। এছাড়াও দিন দিন যে হারে নতুন নতুন গাড়ি ও রিকশার রাজধানীর সড়কগুলোতে নামছে সে হারে কিন্তু সড়ক বাড়ছে না। যে কারণে যানজট এখন রাজধানীবাসীর নিত্যদিনের সঙ্গি। অপরিকল্পিতভাবে এ নগরীতে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ভবন তৈরি হচ্ছে। ফলে রাস্তা বাড়ানোর সুযোগও দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী ঢাকা শহরের রাস্তায় বড় জোর দুই লাখ ১৬ হাজার যানবাহ চলাচল করার সক্ষমতা রাখে। অথচ বাস্তবে চলছে এ সংখ্যার চেয়ে প্রায় ছয় গুণেরও বেশি। এতে নগরবাসীকে বিভিন্ন প্রয়োজনে রাস্তায় নেমেই প্রতিদিন বহু ঝুঁক্কি-ঝামেলা ও নাকানি-চুবানি খেতে হচ্ছে। এরই মধ্যে ইট-পাথরের ব্যস্ত এই রাজধানী শহরে যানজটে যখন নাগরিকদের দুর্বিষহ অবস্থা তখন যাতায়াতের নতুন মাত্রা যোগ হয় হাতিরঝিলে।
রাজধানীবাসীর যাতায়াতে হাতিরঝিলে চালু হয় ওয়াটার ট্যাক্সি। সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি সহজে যাতায়াত করতে হাতিরঝিলে ‘ওয়াটার ট্যাক্সি’ সার্ভিসটি খুব অল্প সময়েই জনপ্রিয়তা পায়। এ সেবা চালুর পর থেকে সড়ক পথে যানজট থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই যাতায়াত শুরু করেন ওয়াটার ট্যাক্সির মাধ্যমে।
যানজটে ভোগান্তির হাত থেকে জনসাধারনকে বাঁচাতে রাজধানীবাসীর জন্য হাতিরঝিলের মতো গুলশান লেকে তৈরি হচ্ছে নতুন নৌ-পথ। লেক সংরক্ষণ, নৌ-যান চলাচল, পরিবেশ সুরক্ষার জন্য গুলশান বনানী বারিধারা লেক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ উন্নয়ন কাজ করছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
একদিকে হবে লেক উন্নয়নের কাজ অন্যদিকে সেই লেকের পানি পথ দিয়ে যেন নৌ-যান চলাচল করতে পারে তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। হাতিরঝিল যেভাবে তৈরি করা হয়েছে, অনেকটা সেভাবেই এ প্রকল্পটির কাজ হবে। নতুন এই প্রকল্পটিকে হাতিরঝিল প্রকল্পের বর্ধিতাংশ বলে অনেকেই ধারণা করে থাকলেও হাতিরঝিলের প্রকল্প পরিচালক জামাল আক্তার জানিয়েছেন, এটি হাতিরঝিল প্রকল্পের অংশ নয়, ‘গুলশান বনানী বারিধারা লেক উন্নয়ন’ নামে আলাদা প্রকল্প।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রথমে লেকের পানি সেচে শুকানোর পরে ওই মাটির সঙ্গে বালু মিশিয়ে মেশিনের সাহায্যে ময়লা-মাটি কেটে বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে। ভালো মাটি দিয়ে লেকের দুই পাড় বাঁধাই হবে। এ প্রকল্পের আওতায় ৩টি লেক খনন করা হবে। সেই লেক দিয়েই চলাচল করবে নৌ-যান, তৈরি হবে নতুন নৌ-পথ। রাজধানীবাসীর যাতায়াতে যুক্ত হবে নতুন মাত্রা। লেকের পাড় দিয়ে সড়ক ও ফুটপাত নির্মিত হবে, সেই সঙ্গে থাকবে ব্রিজ।
প্রকল্পটির আর্কিটেকচারাল ডিজাইন করেছেন নগরপরিকল্পনাবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব। তিনি বলেন, যানজট নিরসনে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। পরিসর অনেক বড়। এ বিশাল পরিসরের প্রকল্পের একটি অংশ ‘গুলশান-বনানী-বারিধারা লেক উন্নয়ন’ প্রকল্প। লেক উন্নয়ন হলে এখানে যাতায়াতের জন্য তৈরি হবে নতুন নৌ-পথ। তৈরি হওয়া এ পানি পথ দিয়ে নৌ-যানের মাধ্যমে রাজধানীবাসী চলাচল করতে পারবেন।
গুলশান-১ থেকে মহাখালী যাওয়ার পথে গুলশান লেকে সরেজমিনে দেখা গেছে, লেকের একপাশে রাস্তা, অন্যপাশে বাঁধ। রাস্তায় কালভার্টের মুখেও ফেলা হয়েছে মাটি। লেকের পাড় ঘেঁষে গেছে পাইপ, মাটি ফেলানো অংশে বসানো হয়েছে সেচযন্ত্র, দলবেঁধে শ্রমিকরা কাজ করছেন। সব মিলিয়ে চলছে ‘গুলশান বনানী বারিধারা লেক উন্নয়ন’ প্রকল্পের কাজ।
জানা গেছে, তিনটি লেকের প্রথমটি নিকেতনের পুলিশ কনভেনশন সেন্টারের পেছন থেকে শুরু হয়ে বাড্ডা, শাহজাদপুর দিয়ে বারিধারায়, ইউনাইটেড হসপিটাল পর্যন্ত। দ্বিতীয় শাখাটি নিকেতন থেকে শুরু করে গুলশান, গাউসুল আজম মসজিদের পাশ ঘেঁষে বনানী কবরস্থান পর্যন্ত। তৃতীয় শাখা নিকেতন থেকে শুরু করে গুলশান, কড়াইল বস্তির ভেতর দিয়ে বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি পর্যন্ত।
ইতোমধ্যে লেক খননের কাজ পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এবং রাস্তার কাজ তিনটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ