পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আল আমিন মন্ডল, গাবতলী (বগুড়া) থেকে : গতকাল বুধবার ব্যাপক উৎসব উদ্দিপনায় মধ্যে দিয়ে বগুড়ার গাবতলী ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা সম্পন্ন হয়েছে। মেলাকে ঘিরে উত্তরাঞ্চলসহ বগুড়া জেলা ও গাবতলী উপজেলা জুড়ে ছিল ব্যাপক উৎসবের আমেজ ও সবার ঘরে ঘরে ছিল আনন্দ হাসিখুশি’র বাৎসরিক ‘পোড়াদহ মেলা উৎসবের দিন’। মেলা চত্ত্বর এলাকায় আজ হবে বউ মেলা।
জানা যায়, বগুড়ার গাবতলী মহিষাবান ইউনিয়নের গোলাবাড়ী বন্দরের পূর্বধারে গাড়ীদহ নদী ঘেষে পোড়াদহ নামক স্থানে সন্ন্যাসী পূঁজা উপলক্ষে ১দিনের জন্য ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেলাটি প্রতিবছরের বাংলা সনের মাঘ মাসের শেষ বুধবার অথবা ফাল্গুন মাসের প্রথম বুধবার হওয়ার কথা থাকলেও ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলামের কারণে এবার তার ব্যতিক্রম ঘটিয়ে নির্ধারিত দিনের এক সপ্তাহ পর গতকাল বুধবার মেলাটি অল্প জায়গায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবুও এ বছরে অন্যস্থানে অল্প জায়গায় মেলাটি উদযাপিত হলো। মেলাকে ঘিরে উৎসব আমেজে মেতে উঠেছিল আশপাশের গ্রামের সর্বস্তরের মানুষ। ১দিনের মেলা হলেও উৎসব চলে সপ্তাহ জুড়ে। মেলায় হাজার-হাজার মানুষের সমাগম ঘটেছিল। এলাকাবাসী জানান, প্রায় ৫’শ বছর পূর্ব থেকে মেলাটি উদযাপিত হয়ে আসচ্ছে। ঈদ বা অন্য কোন উৎসবে মেয়ে-জামাইকে দাওয়াত না দিলেও পোড়াদহ মেলায় দাওয়াত দিয়ে ধুমধাম করে খাওয়াতে হয় যা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। এবারের মেলার মূল আকর্ষণ ছিল দেশী-বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির বড় মাছ, কুল (বরই) ও কাঁঠের তৈরি ফার্নিচার। বিক্রি হয়েছে হাজার হাজার মন হরেক রকমের ছোট-বড় মিষ্টি। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র, কৃষি সামগ্রী ও খাদ্যদ্রব্য হাট-বাজারের আগের মতই বেচা-কেনা হয়েছে। মেলায় নানা রকমের বিনোদনের ব্যবস্থা ছিল। কাঁঠ-বাশঁ ও মাটির তৈরী পুতুল-খেলনা ও বেলুন’সহ হরেক রকমের জিনিস বিক্রি হয়েছে বেশী। সবার সমাগমে জমে উঠেছিল পোড়াদহ মেলা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মেলায় আগত দর্শনার্থীদের ভীড় ছিল চোখে পড়ার মত। মেলা’য় হিজরা’দের সমাগম ছিল আগের মতই। ফলে উপস্থিত অর্ধশতাধিক হিজরা’দের জন্য ছিল ‘পোড়াদহ উৎসব মেলা’। এ বছরে মাছের আমদানি ছিল বেশী। বগুড়ার আব্দুল কাসেম মৎস্য আড়ৎ এর দোকানে একটি ১শ কেজী ওজনের বাঘা আইড় মাছ (১হাজার ২শ টাকা) প্রতিকেজী দরে মোট ১লক্ষ ২০হাজার টাকা দাম চাওয়া হয়েছে, গতকাল সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মাছটির দাম ৯৩ হাজার টাকা উঠেছিল, তবে বিক্রেতা ১ লাখ টাকার কমে ছাড়তে রাজি হন নি। তবে ৫০কেজী থেকে ১শ ২০কেজী পর্যন্ত মাছ মেলা বেশী উঠেছিল। মেলায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। মেলার প্রধান আয়োজক ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, এবছরে পোড়াদহ মেলা বাঁধ্য হয়ে অন্যস্থানে আয়োজন করতে হয়েছে। তবে প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় পোড়াদহ মেলা সু-শৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এ বিষয়ে গাবতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মনিরুজ্জামান জানান, মেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা ছিল। ফলে ব্যাপক উৎসহ উদ্দিপনার মধ্যে দিয়ে মেলাটি উদযাপিত হয়েছে। গাবতলী মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খায়রুল বাসার জানান, পোড়াদহ মেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর অবস্থানে ছিল পুলিশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।