Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আশুলিয়া-কমলাপুর মেট্রোরেল পিপিপিতে অর্থায়নে আগ্রহী জাপান

| প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : রাজধানীর কমলাপুর থেকে সাভারের আশুলিয়া পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্পে সরকারি- বেসরকারি (পিপিপি) অংশীদারির ভিত্তিতে অর্থায়নে আগ্রহ দেখিয়েছে জাপানের বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা। একই সাথে ঢাকার চারপাশে প্রস্তাবিত আউটার রিংরোড প্রকল্পেও অর্থায়নের প্রস্তাব দিয়েছে তারা। গত ডিসেম্বরে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব দেয় জাপানের বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা। সূত্র জানায়, প্রস্তাবটি পর্যালোচনায় স¤প্রতি বৈঠক আহŸান করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন পিপিপি কর্তৃপক্ষ। রাজধানীর যানজট নিরসনে পাঁচটি মেট্রোরেল নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (আরএসটিপি)। এর মধ্যে কমলাপুর থেকে আশুলিয়া পর্যন্ত হচ্ছে ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট-২ (এমআরটি-২)।
পিপিপি’র বৈঠকে জানানো হয়, গত ৬ ডিসেম্বর ঢাকায় জিটুজি ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রথম জাপান-বাংলাদেশ জয়েন্ট প্লাটফর্ম সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় ঢাকা সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) প্রস্তাবিত ‘কনস্ট্রাকশন অব আউটার রিংরোড অ্যালোন উইথ সিক্স ট্রানপোর্টেশন হাব’ ও ‘এমআরটি লাইন-২’ শীর্ষক প্রকল্পদ্বয় বাস্তবায়নের জন্য জাপানিজ বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জাপানের বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কারনে মেট্রোরেল-২ প্রকল্পের প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের উদ্যোগ নিয়েছে ডিটিসিএ। প্রস্তাবিত রুট অনুযায়ী, এটি আশুলিয়া থেকে শুরু হয়ে সাভার, গাবতলী, নিউমার্কেট হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কার্যালয়ের সামনে দিয়ে গুলিস্তান হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত যাবে। মেট্রোরেলটির দৈর্ঘ্য হবে ৪০ কিলোমিটার।
আরএসটিপিতে মেট্রোরেলটি নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকা। দৈনিক এ রুটে ১১ লাখ মানুষ যাতায়াত করে। আর মেট্রোরেলটিতে প্রতি ট্রিপে ২৩ হাজার যাত্রী চলাচলের টার্গেট ধরা হয়েছে। প্রকল্পটির অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল হবে ৩০ বছরের বেশি।
এদিকে, প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইওয়ের আওতায় মেট্রোরেলটির প্রাথমিক অ্যালাইমেন্ট, এলিভেটেড না আন্ডারগ্রাউন্ড হবে, কতটুকু জমি প্রয়োজন হবে, সম্ভাব্য ব্যয় কত হবে, রোলিং স্টক (ইঞ্জিন-কোচ) কতো লাগবে, ডিপোর অবস্থান কোথায় হবে ও প্রকল্প বাস্তবায়নকাল কত হবেÑএসব বিষয় বিশ্লেষণ করা হবে। মেট্রোরেলটি পরিচালনার প্রাথমিক পরিকল্পনাও থাকবে এতে। এছাড়া প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ঋণ বা পিপিপি অর্থায়নের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তাবও তৈরি করা হবে এর আওতায়। প্রস্তাবে প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা। সরকারি অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে। শিগগিরই এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে।
অন্যদিকে, আউটার রিংরোডের জন্য কোনো সম্ভাব্যতা যাচাই এখনও শুরু করা হয়নি। এটি ঢাকার বাইরে দিয়ে সাভারের হেমায়েতপুর থেকে কালাকান্দি, মদনপুর, দাংগা, বাইপাইল, গাজীপুর হয়ে আবার হেমায়েতপুরে গিয়ে শেষ হবে। আরএসটিপিতে এর প্রস্তাবিত দৈর্ঘ্য ধরা হয়েছে ১২৯ কিলোমিটার। আর এটি নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা। আউটার রিংরোডটি বাস্তবায়ন হলে ঢাকার ভেতরে থাকা বাস টার্মিনালগুলোকে বাইরে রিংরোডের কাছাকাছি স্থানান্তর করা যাবে। এক্ষেত্রে গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মহাখালীর পরিবর্তে ঢাকার চারপাশে ছয়টি নতুন বাস টার্মিনাল নির্মাণ করতে হবে। এতে ঢাকার ভেতর দিয়ে দূরপাল্লার বাস চলাচল কমবে।
রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। এতে অর্থায়ন করছে জাপান আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা (জাইকা)। এছাড়া গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর, কমলাপুর হয়ে ঝিলমিল পর্যন্ত প্রস্তাবিত এমআরটি-১ ও ভুলতা থেকে বাড্ডা, মিরপুর, গাবতলী, ধানমন্ডি হয়ে হাতিরঝিল পর্যন্ত প্রস্তাবিত এমআরটি-৫ এর সম্ভাব্যতা যাচাই করছে জাইকা। এর মধ্যে এমআরটি-১ সম্পূর্ণ ও এমআরটি-৫ আংশিকভাবে অর্থায়নের কথা রয়েছে জাইকার। এমআরটি-৫ এর বাকি অংশ অর্থায়নের প্রস্তাব দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ