পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : রাজধানীর তেজগাঁও ও শাহবাগ থানার পৃথক দু’টি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার হাজিরা পরোয়ানা পাঠানো হয়েছে পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে। আগামী ১৮ ফের্রুয়ারী ও ৩ মার্চ ওই দু’টি মামলার হাজিরা রয়েছে আদালতে। গতকাল রাতেই কারা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অবহিত করেছেন বেগম খালেদা জিয়াকে। কারা অধিদফতরের ঢাকা বিভাগের ডিআইজি (প্রিজন্স) তৌহিদুল ইসলাম গতকাল রাতে দৈনিক ইনকিলাবকে এসব তথ্য জানা। অন্যদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে কয়েদির পোশাক পরতে হবে না। নিজের পছন্দমতো পোশাক পরতে পারবেন তিনি। ডিভিশন পাওয়া বন্দিদের জন্য কোনো নির্দিষ্ট ড্রেসকোড নেই। অন্যদিকে পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারকে ঘীরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কারাগারকে ঘীরে পুরো এলাকাজুড়ে নেয়া হয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সক্রিয় হয়েছে ৬টি পুলিশ চেকপোস্ট। তবে পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন চারটি ব্যারিকেড সরিয়ে কারা ফটকের কাছে নিয়ে আসা হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। কিন্তু কোনও যানবাহন কারা ফটকের সামনের রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে না। চারদিন পর গত রোববার রাতে ডিভিশন দেয়া হয়েছে। একই সাথে গত সোমবার রাত থেকে তার ব্যক্তিগত সেবিকা ফাতেমা বেগমকে রাখা হয়েছে। ডিভিশন পাওয়ার পর থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তার পছন্দমত খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। বেশিরভাগ সময় ইবাদতের মাধ্যমে কাটাচ্ছেন তিনি। নামাজ ও তাজবি তেলাওয়াতে সময় দিচ্ছেন বেশি। কারাগার ও প্রশাসন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
কারা অধিদফতরের ঢাকা বিভাগের ডিআইজি (প্রিজন্স) তৌহিদুল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, ডিভিশন পাওয়া বন্দি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়া তার পছন্দমতো পোশাক পরতে পারবেন। জেলকোডে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কোনো পোশাকের কথা বলা হয়নি। তবে সাধারণ কারাবন্দিদের ড্রেসকোড রয়েছে। জেলে পুরুষ বন্দিরা তিনটি পাজামা, দুটি লম্বা পাজামা, দুটি কোর্তা বা হাফ শার্ট, দুটি সুতির শার্ট, দুই জোড়া সুতির মোজা, একটি টুপি পান। আর নারীদের তিনটি শাড়ি, দুটি সুতির বøাউজ, দুটি সেমিজ এবং দুই জোড়া সুতির মোজা দেয়া হয়। অপরদিকে ডিভিশন পাওয়া বন্দিরা নিজের পছন্দমতো পোশাক পরতে পারবেন। ডিভিশন প্রাপ্ত বন্দী যদি নিজে পোশাক ধোয়ায় অনভ্যস্ত হন, তবে জেল সুপার তার কাপড় ধোয়ার ব্যবস্থা করবেন। এ জন্য বন্দিকে কোনো খরচ দিতে হবে না। কারা সূত্র জানায়, ডিভিশন পাওয়ার পর বেগম খালেদা জিয়াকে তার পছন্দ অনুযায়ী খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
গতকাল কারাগার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ব্যারিকেড সরানোয় সাধারণ মানুয়ের চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। কারা ফটকের ঠিক সামনে রয়েছে চার রাস্তার মোড়। ৮ ফেব্রুয়ারি ব্যারিকেড বসিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয় নাজিমউদ্দিন সড়ক, জেলখানার ঢাল, বেগম বাজার সড়ক ও ১ নং জেল রোড। নাজিমউদ্দিন সড়কের শাহী মসজিদের সামনে, জেলখানা ঢালের কারা ফটক মোড়ে, বেগম বাজার সড়ক মোড়ে এবং ১ নং জেল রোডে হাজী সেলিম টাওয়ারের সামনে ব্যারিকেডগুলো বসানো হয়েছিল। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে চলাচল করতে পারছে সাধারণ জনগণ। কিন্তু রাস্তাগুলো দিয়ে ফটকের সামনে যেতে পারছেন না কেউ। সেখানে বসানো হয়েছে নতুন ব্যারিকেড। রয়েছে পুলিশের সতর্ক অবস্থান। কামরাঙ্গীরচর থানার এসআই রমজান আলী বলেন, গতকাল সকাল থেকে ব্যারিকেড খুলে দেয়া হয়েছে।
মাক্কুশা পয়েন্টে দায়িত্বে থাকা ডিএমপির এসি বজলুর রশীদ বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে মাক্কুশা মাজার মোড় থেকে বেগমবাজার মোড় পর্যন্ত রাস্তায় সব রকমের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ছিল। গতকাল সোমবার সকাল থেকে জনগণের চলাচলে কিছুটা শিথিলতা আনা হয়েছে। তবে এখনো যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে।
কারা অধিদফতরের ঢাকা বিভাগের ডিআইজি (প্রিজন্স) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ২০০৭ ও ২০০৮ সালে রাজধানীর শাহবাগ ও তেজগাঁও থানার দুই মামলার হাজিরা পরোয়ানা আমাদের হাতে পৌঁছেছে। এসব মামলার ধার্য তারিখে খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করার জন্য আদালতের পক্ষ থেকে এসব পরোয়ানা জারি করা হয়। ২০০৭ ও ২০০৮ সালে সেনা-সমর্থিত তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সময় থেকে বর্তমান সরকারের সময় পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতি ও নাশকতাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৩৫টি মামলা হয় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে। এরমধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বর্তমানে তিনি নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারে রয়েছেন। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় ঐক্যজোটের ডাকা হরতাল-অবরোধের সময় বাসে আগুন, ভাঙচুর ও মানুষ হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে দায়ের হওয়া ১৩টি মামলায় খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করা হয়। এরমধ্যে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় দু’টি ও দারুস সালাম থানায় ৮ মামলা রয়েছে। বাকিগুলো ঢাকার বাইরে। বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে হাজিরা পরোয়ানার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের ডিসি মারুফ হোসেন সরদার ও তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার সাংবাদিকদের বলেন, এমন কোনও তথ্য আমাদের কাছে নেই। পুলিশের অন্য কোনও সংস্থার কাছে থাকা মামলায় হাজিরা পরোয়ানা পাঠানো হয়েছে কিনা, জানি না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।