Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চালকসহ ৪ জনের ফাঁসি ১ আসামীর ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড

চাঞ্চল্যকর রূপা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায়

| প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্তবাসে রূপা গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় দিয়েছেন আদালত। রায়ে এ মামলার পাঁচ আসামীর মধ্যে চার জনের মৃত্যুদন্ড ও অপর একজনের সাত বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। সোমবার টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া এ দÐাদেশ দেন। আদালতে পাঁচ আসামীর উপস্থিতিতে বিচারক রায়ের সারসংক্ষেপ পড়ে শুনান। মৃত্যুদÐপ্রাপ্ত আসামীরা হচ্ছে ছোঁয়া পরিবহরের হেলপার শামীম, হেলপার আকরাম, হেলপার জাহাঙ্গীর আলম ও চালক হাবিব মিয়া। এবং গাড়ির সুপারভাইজার সফর আলী ওরফে গেন্ডুকে সাত বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও এক লক্ষ্য টাকা জরিমানা করা হয়।
সকাল ১১টায় বিচারক এজলাসে আরোহন করেন। ১১.২০ মিনিটে এই চাঞ্চল্যকর মামলায় রায় ঘোষনা করেন।
এই রায়ে বাদীপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, আদালতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অন্যদিকে এ মামলায় ন্যায়বিচার হয়নি উল্লেখ করে এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল করবেন বলে জানিয়েছেন আসামীপক্ষের আইনজীবীরা। এই মামলা বিচারিক আদালতে বদলি হওয়ার ১৪ কার্য দিবসের মধ্যে এই রায় ঘোষনা করা হলো। রায়ের বিচারক ছোয়া পরিবহন গাড়িটি ক্ষতিপূরণ হিসেবে নিহতের পরিবারকে দেয়ার আদেশ দিয়েছেন। ক্ষতি পুরণের টাকা আদায় করে নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়ার জন্য কালেক্টর টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসককে নিদের্শ প্রদান করেছেন। মধুপুর থানা কতৃপক্ষকে ছোয়া পরিবহনের বাসটির মালিকানা নিহতের পরিবার বরাবর পরিবর্তন করে অত্র ট্রাইব্যুনালে হস্তান্তর করার নির্দেশ প্রদান করেছে।
রায় শুনার পর নিহত রূপার বড়ভাই হাফিজুর রহমান বলেন, রায়ে আমরা সন্তোষ্ট, রায় দ্রæত কার্যকর করার দাবি জানান।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষকে সহায়তা করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস আকবর খান, সিনিয়র আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট এম. এ করিম মিঞা এবং মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ। রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাছিমুল আক্তার নাছিম সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আমরা এ মামলাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমান করতে সক্ষম হয়েছি। এজন্য ন্যায় বিচারের স্বার্থে আমরা আদালতের কাছে আসামীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদÐ প্রার্থনা করেছিলাম। আমরা মনে করি এ রায়ের মধ্য দিয়ে আদালতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং বাদীপক্ষ ন্যায়বিচার পেয়েছে। এখন এই রায় দ্রæত কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।
অন্যদিকে আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শামীম চৌধুরী দয়াল বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ এ মামলাটি প্রমান করতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। তারপরেও এমন রায়ে আমরা বিষ্মিত। আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপীল করব। সেখানে অবশ্যই ন্যায়বিচার পাব এবং আসামীরা বেকসুর খালাস পাবেন বলে আশা রাখি।
দ্রæত সময়ের মধ্যে মামলাটি শেষ হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ বলেন, আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়েছে। এতে করে কেউ আর এমন ঘৃণ্য অপরাধ করার সাহস পাবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ