পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : প্রশাসনে সিভিল সার্ভিসের কর্মকর্তাদের জন্য নির্ধারিত পোশাক (ড্রেস কোট) থাকলেও এবার নারী সরকারি কর্মকর্তারা কর্মক্ষেত্রে (ড্রেস কোড) দাবিতে নামছে। সিভিল সার্ভিসের নারী কর্মকর্তাদের সংগঠন- বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্ক এ বিষয়ে একটি ধারণাপত্র তৈরি করেছে। সেই অনুযায়ী জরিপ কাজ শুরু করেছে। সংশ্লিষ্টদের মতামত নিয়ে তা সুপারিশ আকারে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে দেবে বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্ক বলে জানা গেছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার ও গবেষণা উইংয়ের পরিসংখ্যান ও গবেষণা সেলের ২০১৬ সালের তথ্য অনুযায়ী, প্রশাসনে ১৩ লাখ ৪২ হাজার ৪৫৩ কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে নারী তিন লাখ ৬২ হাজার ২০৬ জন। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণির ২৭ হাজার ৪৬০ জন, দ্বিতীয় শ্রেণির ৪০ হাজার ৬৪০ জন, তৃতীয় শ্রেণির দুই লাখ ৪৫ হাজার ৮৬২ জন এবং চতুর্থ শ্রেণির ৪৮ হাজার ২৪৪ জন নারী কর্মকর্তা রয়েছেন। বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্কের উপদেষ্টা আকতারী মমতাজ ড্রেস কোড প্রণয়ন উপ-কমিটির আহŸায়কের দায়িত্বে পালন করছেন সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সচিব। জনপ্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনে সিভিল সার্ভিসের কর্মকর্তাদের জন্য সরকার নির্ধারিত পোশাক (ড্রেস কোট) থাকলেও এবার নারী সরকারি কর্মকর্তারা কর্মক্ষেত্রে (ড্রেস কোড) রয়েছে। তবে প্রশাসনে পুরুষ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ড্রেস কোড নির্ধারণ করা রয়েছে। কিন্তু নারী কর্মকর্তা ও কর্মটারীদের জন্য আলাদা করা নাই। পুরুষদের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, ফুল শার্ট, টাই, প্যান্ট ছিল। কিন্তু পরে পরিবর্তন করে টি শার্ট-প্যান্ট ও টাই পড়ার বিধান চালু করা হয়। আর মহিলা কর্মকর্তাদের জন্য ড্রেস কোডে বলা হয় শাড়ি/ সালোয়ার-কামিজ/ সার্ট-ট্রাইজার উপরে কোর্ট পড়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু এখন নারী কর্মকর্তারা বিশ্বের সাথে তাল মিলাতে চায়। তারা শাড়ি/ সালোয়ার-কামিজ না পড়ার জন্য ২০১৫ সাল থেকে বিসিএস উইমেন নেটওয়াক দাবি চালিয়ে আসছে। এর পরে ড্রেস কোড নির্ধারণের জন্য ইতোমধ্যে মাঠপর্যায়ে জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। এখন প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মতামত নেয়া হচ্ছে। ধারণাপত্র অনুযায়ী, প্রথম ও দ্বিতীয় গ্রেডের (সচিব ও অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা) কর্মকর্তাদের মতামত দেয়ার জন্য উইমেন নেটওয়ার্ক থেকে গত মাসের ১৫ তারিখে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবের (সিনিয়র সচিব/ভারপ্রাপ্ত সচিব) কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্কের উপদেষ্টা ড্রেস কোড প্রণয়ন উপ-কমিটির আহŸায়ক ও সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সচিব আকতারী মমতাজ বলেন, সরকারি কোনো অনুষ্ঠান কিংবা অফিসের ক্ষেত্রে পোশাক পরা নিয়ে নারী কর্মকর্তারা অনেক সময় দ্বিধান্বিত থাকেন। সিভিল সার্ভিসের নারীদের ড্রেস কোড থাকা উচিত। এজন্য আমরা একটা জরিপ করছি। ইতোমধ্যে মাঠপর্যায় থেকে তথ্য পেয়েছি। এখন প্রশাসনের সিনিয়র লেভেল থেকে মতামত নিচ্ছি। উইমেন নেটওয়ার্কের উপদেষ্টা বলেন, কাজটা আমরা ২০১৫ সালের দিকে শুরু করেছিলাম। এটি আর এগোয়নি, এবার আবার শুরু করলাম। এটা করতে পারলে একটা ভালো কাজ হবে বলে মনে করি। জরিপ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হলে ড্রেস কোড নির্ধারণের বিষয়ে উইমেন নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে সুপারিশ দেয়া হবে। পিএসসির সচিব আকতারী মমতাজ বলেন,আমরা মূলত সুপারিশটা দেব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে। পরে তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোজাম্মেল হক খান ইনকিলাবকে বলেন, তারা (উইমেন নেটওয়ার্ক) জরিপ করুক, আইডিয়া তারা দিতেই পারে। আমরা তাদের উৎসাহিত করছি। তাদের সুপারিশের অপেক্ষায় থাকলাম। যদি ইতিবাচক কিছু হয়, দেশের লাভ হয় তবে সেই সুপারিশ বিবেচনা করলে তো ক্ষতির কিছু নেই। মতামত চেয়ে সচিবদের কাছে পাঠানো ড্রেস কোড প্রণয়ন উপ-কমিটির আহŸায়ক আকতারী মমতাজ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সিভিল সার্ভিসে পুরুষ কর্মকর্তাদের জন্য আনুষ্ঠানিক ও দাফতরিক ড্রেস কোড নির্ধারিত আছে। পরবর্তী সময়ে নারী কর্মকর্তারা সিভিল সার্ভিসে যোগ দিলেও তাদের ড্রেস কোডের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা দেয়া হয় না। সিভিল সার্ভিসের নারী কর্মকর্তাদের জন্য রাষ্ট্রীয় বা সরকারি অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক ও দৈনন্দিন দাফতরিক পোশাক সম্পর্কে কোনো নির্দেশনা না থাকায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিধেয় পোশাক সম্পর্কে তারা অনেক সময় দ্বিধান্বিত থাকেন। এ কারণে ইদানীং তাদের পোশাকে বিভিন্ন ধারা লক্ষ্য করা যায় এবং কখনও কখনও তা মানানসইও হয় না। চিঠিতে আরও বলা হয়, এ প্রেক্ষাপটে কর্মক্ষেত্রে নারী কর্মকর্তার ব্যক্তিত্ব, পরিচিতি ও পেশাদারিত্বের যথাযথ প্রতিফলনের লক্ষ্যে তাদের সুনির্দিষ্ট আনুষ্ঠানিক ও দৈনন্দিন দাফতরিক পোশাক থাকা প্রয়োজন কি-না, সে বিষয়ে অভিমত যাচাই একান্ত জরুরি। এ অভিপ্রায় থেকে বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্কের উদ্যোগে প্রশ্নোত্তর পদ্ধতিতে একটি জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, জরিপ কার্যক্রমে টার্গেট পপুলেশন হিসেবে বাংলাদেশের সিভিল সার্ভিসে কর্মরত নারী ও পুরুষ কর্মকর্তা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এক হাজার ২৪৫ কর্মকর্তার মধ্যে এ জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু জরিপ কাজের ধারণাপত্র অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে নারী কর্মকর্তার ব্যক্তিত্ব, পরিচিতি ও পেশাদারিত্বের যথাযথ প্রতিফলনের লক্ষ্যে তাদের সুনির্দিষ্ট আনুষ্ঠানিক এবং দৈনন্দিন দাফতরিক পোশাক নির্ধারণের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রথম ও দ্বিতীয় গ্রেডের কর্মকর্তাদের অভিমত প্রয়োজন। এজন্য সচিবদের সহযোগিতা চাওয়া হয় ওই চিঠিতে।
জরিপের প্রশ্ন ও উত্তরে বলা হয়\
নারী কর্মকর্তাদের পেশাদারিত্ব ও ব্যক্তিত্ব প্রকাশের ক্ষেত্রে পোশাকের ভূমিকা আছে বলে আপনি মনে করেন কি? তিনটি উত্তরের মধ্যে রয়েছে- হ্যাঁ/না/নিরপেক্ষ। নারী কর্মকর্তাদের জন্য একটি নির্দিষ্ট ড্রেস কোড থাকা প্রয়োজন মনে করেন কি-না? এক্ষত্রেও তিনটি উত্তর- হ্যাঁ/না/নিরপেক্ষ। পেশাদারিত্ব ও ব্যক্তিত্বের সমন্বিত প্রকাশের জন্য নারী কর্মকর্তাদের কী ধরনের পোশাক পরিধান করা সমীচীন বলে মনে করেন? উত্তর- হালকা রঙ/ উজ্জ্বল মার্জিত রঙ/ উৎকট ঝলমলে রঙের পোশাক / অন্য কোনো মতামত...। আনুষ্ঠানিক পোশাক নির্দিষ্ট হওয়া সমীচীন মন করেন কি-না? হ্যাঁ/ না / নিরপেক্ষ- এক্ষেত্রেও এ তিনটি উত্তর দেয়া আছে। আনুষ্ঠানিক পোশাক কোনটি হতে পারে বলে আপনি মনে করেন? উত্তর- শাড়ি/ সালোয়ার-কামিজ/ সার্ট-ট্রাইজার/অন্য কোনো মতামত...। দৈনন্দিন দাফতরিক পোশাক নির্দিষ্ট হওয়া সমীচীন কিনা ? উত্তর তিনটি- হ্যাঁ/না/ নিরপেক্ষ। উত্তর হ্যাঁ হলে দৈনন্দিন দাফতরিক পোশাক কোনটি হতে পারে- শাড়ি/ সালোয়ার-কামিজ/ উভয়ই/সার্ট-ট্রাইজার/অন্য কোনো মতামত..। দৈনন্দিন পোশাকের সঙ্গে পরিশীলিত মাত্রায় অলঙ্কারের ব্যবহার সমীচীন বলে মনে করেন কি-না? উত্তর- হ্যাঁ/ না /নিরপেক্ষ। আপনি কি নিরাপদ বোধ থেকে হিজাব পরিধান করেন/কখনও করেছেন কি? উত্তর- হ্যাঁ/ না/ নিরপেক্ষ/ প্রযোজ্য নয়। উত্তর হ্যাঁ হলে কোন বিবেচনা থেকে তা করেন বা করেছেন- এ সম্পর্কে আপনার মতামত দিন। আপনি কোন গ্রেডের কর্মকর্তা- প্রথম ও দ্বিতীয় গ্রেড/পঞ্চম থেকে তৃতীয় গ্রেড পর্যন্ত/ নবম থেকে ষষ্ঠ গ্রেড পর্যন্ত আপনি কোন পেশায় কর্মরত- ডাক্তার/ প্রকৌশল /শিক্ষক/ জনপ্রশাসন / অন্য কোনো পেশা। বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্কের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করে বলেন, সরকারি কোনো অনুষ্ঠানে নারী কর্মকর্তাদের পোশাক হওয়া উচিত শাড়ি। তবে দৈনন্দিন অফিস করার পোশাক শাড়ি হওয়া উচিত নয়। কারণ শাড়ি ম্যানেজ করাটা কষ্টকর। ওয়ার্কিং ডে’র পোশাক হওয়া উচিত সালোয়ার-কামিজ। তবে অফিস প্রধান নারী হলে তার পোশাক শাড়ি হওয়া উচিত বলেও মনে করেন ওই কর্মকর্তা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।