Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কারাবিধিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই -আইজি প্রিজন

| প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম


বিশেষ সংবাদদাতা : কারাবিধিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিষয়ে কোনো নির্দেশনা না থাকায় এবং জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ে সুনির্দিষ্ট কিছু বলা না থাকায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে একজন সাধারণ বন্দির মতই রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন। গতকাল রোববার ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডে কারা অধিদপ্তরের কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন বলেন, কারাগারে প্রথম শ্রেণির বন্দির মর্যাদা (ডিভিশন) পাওয়ার যে দুটি ক্রাইটেরিয়া দেয়া রয়েছে, তার কোনোটিতেই বেগম খালেদা জিয়া পড়েন না। কারাবিধির ৬১৭ উপবিধিতে বলা হয়েছে শুধু সাবেক প্রেসিডেন্টের কথা, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কথা সেখানে নেই। আর কারাবিধি অনুযায়ী সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলের সংসদ সদস্য, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কারাগারে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পেতে পারেন। বিএনপি যেহেতু সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছে না, সেহেতু বেগম খালেদা জিয়াকে সেভাবেও বিবেচনা করছে না কারা কর্তৃপক্ষ। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইফতেখার উদ্দীন আরো বলেন, প্রাথমিক রেকমেন্ডেশন কোর্ট থেকে আসে। যেহেতু ৮ তারিখের রায়ের সাথে রেকমেন্ডেশন আসেনি, তাই তাকে জেল কোড অনুযায়ী যেটা আছে, আপাতত সে অনুযায়ী সাধারণ বন্দি হিসেবেই রাখা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়াকে কয়েদীর পোশাকে রাখা হয়েছে কি না- এ প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, কারা বিধি অনুযায়ী কয়েদীদের কারাগারের পোশাকই পড়ার কথা। তিনি বলেন, আইনজীবীরা একটা দরখাস্ত দিয়েছেন। আমি সেটা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। টিভিতে দেখেছি একটা অর্ডার হয়েছে কোর্ট থেকে। সেটা হাতে পেলে তখন বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
বেগম খালেদা জিয়ার সেবায় তার গৃহকর্মী ফাতেমা বেগমও কারাগারে রয়েছেন বলে যে খবর বিভিন্ন সংবাদপত্রে এসেছে, তা নাকচ করে কারা মহাপরিদর্শক ইফতেখার উদ্দীন বলেন, ফাতেমা নামে কেউ সেখানে নেই। পুলিশ একজনকে দিয়ে গিয়েছিল, এক ঘণ্টা পর আমরা ফেরত পাঠিয়েছি। সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে যেহেতু সাধারণ বন্দির মতই রাখা হয়েছে, সেহেতু তাকে সে অনুযায়ীই খাবার দেয়া হচ্ছে। তবে আত্মীয়রা যে খাবার দিয়েছেন, তা তাকে দেয়া হয়েছে। আর বেসিক হিউম্যান রাইটস হিসেবে সাধারণ ও ডিভিশনপ্রাপ্ত সব আসামিই চিকিৎসা সেবা পান। বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে সার্বক্ষণিক একজন ডাক্তার ও একজন নার্স রাখা হয়েছে এবং প্রয়োজন হলে বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আনা হবে বলে জানান কারা মহাপরিদর্শক। ইফতেখার উদ্দীন বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশেষ কারাগার হিসেবে সেখানে রাখা হয়েছে। সরকার যেহেতু এখনও ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেনি. তাই এটাকে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কাশিমপুর মহিলা কারাগারে রাখলে এই বয়সে প্রিজন ভ্যানে করে আনা নেয়ায় উনার অসুবিধা হত। তাই বয়স ও শারীরিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তাকে এখানে রাখা হয়েছে। উল্লেখ জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলার রায়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ৫বছরের কারাদন্ড দেয় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত। রায়ের পরপরই তাকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন ৯ ফের্রুয়ারী বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরও কারাগারে বেগম খালেদা জিয়াকে রাখা হয়েছে সাধারণ বন্দির মত।

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ