পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে না পেরে এবার ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পরীক্ষামূলক হিসেবে গতকাল (রোববার) রাতে ১০টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত পুরো ইন্টারনেট প্রায় বন্ধই হয়ে যায়। এতে বিপাকে পড়ে ইন্টারনেটের ওপর নির্ভর প্রতিষ্ঠানগুলো। একইভাবে আগামী প্রতিটি এসএসসি পরীক্ষার দিন সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত প্রতি সেকেন্ডে মাত্র ২৫ কিলোবাইটের স্পিড থাকবে ইন্টারনেটে। এই স্বল্প গতির ইন্টারনেট দিয়ে কোন কাজই করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।
নানাভাবে চেষ্টা করেও সরকার স্কুল কলেজের পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে পারছে না। গত বছর প্রাথমিক সমাপনী ও অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষায় প্রায় প্রতিটি বিষয়ে প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার পর এবার এসএসসিতে আধা ঘণ্টা আগে পরীক্ষার্থীদের হলে থাকা বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি প্রশ্নের প্যাকেট খোলার ক্ষেত্রে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু তারপরও প্রতিটি পরীক্ষার প্রশ্নই ফাঁস হওয়ার পর ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে চলে আসছে পরীক্ষা শুরুর এক থেকে দেড় ঘণ্টা আগে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে ব্যর্থ হয়ে ইন্টারনেট প্রায় বন্ধ করে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য আগামী সবগুলো পরীক্ষার দিন সকালে আড়াই ঘণ্টা ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে রাখতে সব আইএসপি ও মোবাইল অপারেটরদের নির্দেশনা দিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। এর অংশ হিসেবে গতকাল রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আধা ঘণ্টা পরীক্ষামূলকভাবে দেশের সব ইন্টারনেট প্রোভাইডারের ব্যান্ডউইথ প্রতি সেকেন্ড ২৫ কিলোবিটের মধ্যে সীমিত রাখে। আর এতে বিপাকে পড়ে ইন্টারনেটের উপর নির্ভর প্রতিষ্ঠানগুলো। বন্ধ হয়ে যায়, ইন্টারনেট নির্ভর সব সেবা। ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি এম এ হাকিম বলেন, গতকাল রাতে এবং আগামী আরও দশ দিন নির্দিষ্ট সময়ে এই নির্দেশনা অনুসরণ করতে সব ধরনের আইএসপি, মোবাইল অপারেটর ও ওয়াইম্যাক্স অপারেটরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার বিষয়টি পরীক্ষামূলকভাবে করা হয়। আর বাকি দশ দিনের বিষয়টি কার্যকর হবে পরীক্ষা শুরুর সময় ধরে।
এদিকে প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে না পেরে ইন্টারনেটের গতি নিয়ন্ত্রণের পখে হাঁটায় সরকারকে সমালোচার মুখেও পড়তে হচ্ছে। শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সকলেই সরকারের এই সিদ্ধান্তকে মাথা ব্যাথার জন্য মাথা কেটে ফেলার মতো মনে করছেন। তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এতে মনে হয়না ইন্টারনেট সম্পর্কে তাদের ন্যূনতম ধারণা আছে। কারণ যে গতির কথা বলা হয়েছে এতো ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ার মতোই। এই গতি দিয়ে আজকের যুগে কোন কিছুই সম্ভব নয়। আর শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, যেখান থেকে প্রশ্নফাঁস হয় তা চিহ্নিত ও শাস্তির ব্যবস্থা না করে ইন্টারনেট বন্ধ করে কোন লাভ হবে না।
ইকবাল মাহমুদ নামে একটি অনলাইন প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ী বলেন, আমরা ইন্টারনেটের ওপর ভিত্তি করে ব্যবসা করি। আমাদের জন্য প্রতিটি সেকেন্ডের মূল্য অনেক বেশি। তাই এটি সরকারের জন্য একটি আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত। ফেরদৌস নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী বলেন, ইন্টারনেট প্রায় বন্ধ করার ঘোষণা দিয়ে সরকার প্রমাণ করলো তারা প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বিটিআরসির একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তারা সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ি আইএসপি ও অপারেটরদের নির্দেশনা পাঠিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের ভালোর কথা ভেবেই এটি করা হয়েছে বলে তারা জানিয়েছেন।
পরীক্ষার সূচি অনুযায়ি ১২ ফেব্রæয়ারি ক্যারিয়ার শিক্ষা, ১৩ ফেব্রæয়ারি পদার্থবিদ্যা, বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা এবং ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং, ১৫ ফেব্রæয়ারি পৌরনীতি ও নাগরিকতা এবং ব্যবসায় উদ্যোগ, ১৭ ফেব্রæয়ারি বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, ১৮ ফেব্রæয়ারি বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান তত্ত¡ীয়, কৃষি শিক্ষা তত্ত¡ীয় ও সংগীত, ১২টা থেকে আড়াইটা আরবি, সংস্কৃত, পালি, কর্মমুখী শিক্ষা, কম্পিউটার শিক্ষা, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া, বেসিক ট্রেড, চারু ও কারুকলা, ১৯ ফেব্রæয়ারি সকালে জীব বিজ্ঞান, অর্থনীতি, ২০ ফেব্রæয়ারি হিসাব বিজ্ঞান, ২২ ফেব্রæয়ারি বিজ্ঞান ও উচ্চতর গণিত পরীক্ষা রয়েছে। এসব দিনে সকাল ৮ টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ইন্টারনেট গতি ২৫ কিলোবাইট প্রতি সেকেন্ডে থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।