পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আইয়ুব আলী : প্রত্যাশার চেয়ে বেশি প্রাপ্তির মধ্যদিয়ে শেষ হলো রিহ্যাব চট্টগ্রাম ফেয়ার-২০১৮। ‘স্বপ্নীল আবাসন, সবুজ দেশ লাল সবুজের বাংলাদেশ’ এ সেøাগানে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বন্দরনগরীর রেডিসন বøুতে চার দিনব্যাপী এ মেলায় ছিল হাজারও মানুষের ভিড়। গতকাল (রোববার) শেষ দিনে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণে ছিল দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। শেষ দিনে ফ্ল্যাটও বিক্রি হয়েছে অন্য তিন দিনের চেয়ে বেশি। এতে খুশি মেলা আয়োজক ও অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন আবাসন প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। তারা বলছেন, এবারের মেলায় প্রাপ্তি প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার শুরু হয় এ মেলা।
রিয়েল এস্টেট এ্যান্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) আয়োজিত এবারের ফেয়ারে ৮৬টি স্টল নিয়ে ৫৯টি প্রতিষ্ঠান তাদের প্রকল্প প্রদর্শন করেছে। এবারের মেলায় আগত দর্শনার্থীদের চাহিদা বেশি ছোট প্লট ও ফ্ল্যাটে। নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের জন্য হরেক রকম অফার দিয়ে ক্রেতা আকৃষ্ট করতে চেষ্টা করেন আবাসন শিল্পে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। আবাসন মেলায় শুধু প্লট বা ফ্ল্যাটই নয়, বাড়ি তৈরিতে ঋণ সুবিধা ও বাড়ি তৈরির অবকাঠামোগত নানা তথ্যসেবা দেয়া হয় স্টলগুলো থেকে। এ ফেয়ারে কো-স্পন্সর হিসেবে অংশগ্রহণ করে ২১টি প্রতিষ্ঠান, সাধারণ স্টল ২১ বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস ১০টি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৭টি।
মেলায় অংশগ্রহণকারী এএনজেড প্রপার্টিজের ডেপুটি ম্যানেজার মীর মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী বলেন, ফেয়ারে রেডি ফ্ল্যাটের ব্যাপারে ক্রেতারা বেশি আগ্রহী ছিল। বেশিরভাগ ক্রেতা ৭০-৮০ লাখের মধ্যে তাদের ফ্ল্যাট পেতে আগ্রহী ছিল। সর্বোচ্চ ক্রেতার চাহিদা ছিল ১ কোটি। এতে মধ্যআয়ের ক্রেতাদের আধিক্য ছিল বেশি। তবে বেশিরভাগ দর্শনার্থী এসেছে ফ্ল্যাটের খোঁজখবর নিতে।
মেলায় অংশগ্রহণকারী আমিন মোহাম্মদ গ্রæপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন ও আমিন মোহাম্মদ ল্যান্ডের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মোহাম্মদ রাজীব হোসেন জানান, এবারের ফেয়ারে ব্যাপক সাড়া মিলেছে। বেশিরভাগ ক্রেতা ফ্ল্যাটের খোঁজখবর নিয়েছেন। তিনি ছয়টির মতো ফ্ল্যাটের বুকিং দিয়েছেন বলে জানান। ক্রেতাদের চাহিদা ছিল ৬০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকার ভেতর। রেজিস্ট্রেশন ফি এবং ব্যাংক ঋণ সহজতর করা হলে আবাসন শিল্প ঘুরে দাঁড়াবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
মেলায় ঢাকার ২৭টি অ্যাপার্টমেন্টের প্রকল্প ও মতিঝিলের কাছে ‘গ্রিন মডেল টাউন’ নামের প্লটের একটি প্রকল্পের প্রচারণার পাশাপাশি বন্দরনগরী চট্টগ্রামের নাসিরাবাদে ১৪ তলা বিল্ডিং হচ্ছে বলে ক্রেতাদের অবহিত করা হয়। সানমারের ম্যানেজার মোহাম্মদ সেলিম মিয়া জানান, এবার ফেয়ারে ভাল সাড়া পাওয়া গেছে। তবে বেশিরভাগ ক্রেতা খোঁজখবর নিতে এসেছেন। তিনটি রেডি ফ্ল্যাটসহ ছয়টির বুকিং হয়েছে বলে তিনি জানান। ফিনলে প্রপার্টিজ লিমিটেডের সিনিয়র ম্যানেজার মোঃ আবদুল্লাহ আল ফারুক জিয়াদ বলেন, মেলার প্রথম দিনে একটু মন্দাভাব থাকলেও দ্বিতীয় দিন থেকে ক্রেতা ও দর্শনার্থীর ভিড় ছিল। তবে রেডি ফ্ল্যাটের চাহিদা ছিল বেশি।
আবাসন মেলায় রেডি ফ্ল্যাটের জন্য খোঁজখবর নিতে এসেছেন প্রবাসীরাও। মেলায় বিভিন্ন স্টলের ছাড় দেয়ার কারণেও মেলায় এসেছেন দুবাই প্রবাসী মোঃ সালামত উল্লাহ। তিনি বলেন, আমি দুবাই থাকি। কিন্তু চট্টগ্রাম শহরে আবাসনের জন্য মানসম্মত একটি ফ্ল্যাট নেয়ার জন্য মেলায় আসলাম। কিন্তু ছাড় দেয়া হলেও দামটা বেশি মনে হয়েছে। তিনি জানান, প্রবাসীদের জন্য যদি সহজ শর্তে ঋণ নেয়া যেত তবে আরও ভালো হতো। সরেজমিন মেলা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো মেলা উপলক্ষে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ছাড় দিয়েছে। এপিক প্রপার্টিজে ছাড় দিয়েছে প্রতি বর্গফুটের ওপর ৫শ থেকে ৮শ টাকা পর্যন্ত। আবার ইক্যুটি প্রতি বর্গফুটের দামের ওপর পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিয়েছে। মেলায় শুধু আবাসন প্রতিষ্ঠান নয়; এর সাথে বিভিন্ন ধরনের অফার ও তাদের সুযোগ-সুবিধা ক্রেতাদের জানিয়েছেন ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রীয় হাউস বিল্ডিং করপোরেশন, বেসরকারি আইপিডিসি, লংকাবাংলাসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের সিনিয়র বিজনেস এক্সিকিউটিভ রিয়াদ হোসেন বলেন, মেলা উপলক্ষে লংকাবাংলা ১৪ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ি নির্মাণ এবং ফ্ল্যাট কেনার জন্য লোন দিচ্ছে। তাছাড়া সব প্রসেসিং ফি শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ করা হয়েছে। আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের জন্য ১০ কোটি টাকার ঋণ সুবিধা দেয়া হয়। মেলা সূত্রে জানা যায়, গত বছর ২৫০ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও সেখানে প্রায় ৩শ কোটি টাকার ফ্ল্যাট বিক্রি করে আবাসন কোম্পানিগুলো। এবারের মেলায় লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৫শ কোটি টাকার।
রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল কৈয়ুম চৌধুরী বলেন, এবারের মেলায় অন্যান্য যেকোন সময়ের তুলনায় বেশি সাড়া পাওয়া গেছে। আবাসন ব্যবসা যে ইতিবাচক ধারায় ফিরছে এটা তারই প্রমাণ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।