পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সরকারের মন্ত্রীদের কথার সাথে আদালতের রায়ের হুবহু মিল রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে কথিত দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার জেল হবে, তাঁকে কারাগারে যেতে হবেই এমন কথা সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও সরকারদলীয় নেতারা বিগত ২ বছর ধরেই বলে আসছেন। গতকালের (বৃহস্পতিবার) যে রায়, এটা তো আগেই লিখে রাখা। আমরা যে বলেছিলাম, এটা তাদের প্রতিহিংসার প্রতিফলন, তা অক্ষরে অক্ষরে সত্য প্রমাণ হয়েছে। বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার পরও দেখা গেছে সরকারের মন্ত্রীদের দেয়া বক্তব্যের সঙ্গে বিচারক ড. আখতারুজ্জামানের আদালতের রায়ের হুবহু মিল রয়েছে। গতকাল (শুক্রবার) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। কারাগারে খালেদা জিয়াকে সাধারণ কয়েদীর মতো রাখা হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রীকে কারাগারে একজন সাধারণ কয়েদীর মতো রাখা হয়েছে। দলের প্রধানের এমন অবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমরা জানতে চাই আমাদের চেয়ারপারসন কেমন আছেন, প্রিয় নেত্রী কেমন আছেন? আমরা সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানতে পেরেছি তাকে সাধারণ কয়েদীর মতো রাখা হয়েছে। কারাগারের ভেতরে কী ঘটছে, কী অবস্থা- আমরা কিছুই জানতে পারছি না। সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, সাধারণ কয়েদীর মত রাখা হচ্ছে এ কথা কেন সংবাদপত্রে আসছে? তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, এদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের নেতা তিনি। আপনাদের রুচির এতটা নিম্নগামিতা কেন? এর মধ্যে দিয়ে সরকার দেশকে নরকের দিকে ঠেলে দিচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আপনারা কী মনে করেন, এই হুঙ্কার, এই ধমক প্রতিদিন মানুষ শুনতে থাকবে আর হজম করতে থাকবে? না। যত জেল, জুলুম, নির্যাতন, গুম, খুন করেন না কেন বাংলাদেশের জনগণের কাছে আপনার স্বরুপ উন্মোচিত হয়ে গেছে। কোন ফর্মুলাতেই আপনার মসনদ রক্ষা করতে পারবেন না। সারদেশের মানুষ আজ জেগে ওঠেছে। দেখেননি চারিদিকে আওয়ামী লীগের সশস্ত্র মহড়া, পুলিশের গুলি, ব্যারিকেড, তাÐব উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবার রাজধানীবাসী বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে যোগ দিয়েছিল। জনগণের প্রতিরোধেই শেখ হাসিনা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে বাধ্য হবেন।
বিশ্বব্যাপী ঘৃণার ঝড় বইছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনকে মিথ্যা সাজানো মামলায় সাজা দেয়ার ঘটনায় নিন্দার ঝড় বইছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ দেশের সাধারণ মানুষ বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে রায় দেওয়া হয়েছে ঘৃণাভরে তা প্রত্যাখান করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ বিভিন্ন সংগঠন। সরকার প্রধান সম্পূর্ণ প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে কেবলমাত্র আদালতকে ব্যবহার করে নয় সমস্ত রাষ্ট্রশক্তিকে ব্যবহার করে বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রায় দেয়া হয়েছে। কারাবন্দী করা হয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অবিসংবাদিত নেত্রী বেগম জিয়াকে। বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সাজা দিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এজন্য গত কয়েকদিন ধরে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী কিভাবে সারাদেশের মানুষকে জিম্মি করে, গ্রেফতার করে নির্যাতন করে গুলি চালিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে দাম্ভিকতার বহিঃপ্রকাশ মন্তব্য করে রিজভী বলেন, বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী বরিশালে জনসভায় দাম্ভিকতার সহিত বলেছেন- কোথায় আজ খালেদা জিয়া। তাঁর এই বক্তব্যে মনে হয়েছে- বেগম জিয়াকে কারাগারে ঢুকিয়ে তিনি আত্মতৃপ্তি পেয়েছেন। তাঁর বক্তব্যে উল্লাসের সুর ধ্বনিত হয়েছে। প্রতিহিংসার বিচারে সারাদেশ যখন বিষন্ন বেদনায় মুষড়ে পড়েছে তখন প্রধানমন্ত্রীর উল্লাসে সুষ্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়- বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে রায় দেয়া হয়েছে সেটি ফরমায়েসী রায়।
বিগত দিনে খালেদা জিয়ার উপর সরকারের নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা কতটা প্রতিশোধপরায়ণ এর আগেও আপনারা দেখেছেন। বেগম খালেদা জিয়াকে এক কাপড়ে কিভাবে তাঁর স্বামীর স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করেছে। কিভাবে বালুর ট্রাক দিয়ে বার বার তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। এ সরকারের মানসিক নির্যাতনে অকালে ঝরে গেলো তাঁর ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বৈতরনি পার করতেই শেখ হাসিনা যেন বেগম জিয়া, তার পরিবার ও বিএনপির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। প্রতিহিংসার জাল ছড়িয়ে দিয়েছেন। খালেদা জিয়ার মামলার রায়কে কেন্দ্র করে গত ২৮ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে দাবি করে তাদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন রিজভী। এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক বেলাল আহমেদ, সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ মামুন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, জাসাস সহসভাপতি শাহরিয়ার ইসলাম শায়লা প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।