পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হোসাইন আহমদ হেলাল : চরম আতঙ্ক, উদ্বেগ-উৎকন্ঠা ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা দিয়েও ঠেকানো যায়নি জনতার স্রোত। আদালতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে রওনা হতেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধা ভেঙে রাস্তায় বেরিয়ে আসে সাধারণ নেতাকর্মী-সমর্থকরা। প্রতিবারের মতো যে পথে তিনি বকশিবাজার আদালতে গিয়েছেন সে পথেই ছিলো আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের কঠোর নিরাপত্তা, ছাত্রলীগ, যুবলীগের হোন্ডা মহড়া। গত বুধবার থেকেই ছিলো এ নিরাপত্তা ও দলীয় মহড়া। কোথাও রাস্তায় সাধারণ মানুষকে দাঁড়াতেই দেয়নি আইনশৃংখলা বাহিনী সদস্যরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নিরাপত্তা বলয় আরও কঠোর করা হয়। যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল করছিল মাঝে-মধ্যে, চোখে পড়ার মতো নয়। সকাল থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এ পথে আইনশৃংখলা বাহিনী ও যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ছাড়া সাধারণ মানুষের চলাচল ছিল না। দুপুর ১২টা থেকেই মৎস্য ভবন, প্রেসক্লাব, হাইকোর্ট এলাকায় ছিলো থমথমে অবস্থা। প্রচুর আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যের নানাভাবে মহড়ায় পুরো এলাকা ছড়িয়ে পড়ে চরম আতঙ্ক। বন্ধ করে দেয়া হয় হাই কোর্টের সকল গেইট। ভেতরে চলেছে আইনজীবীদের বিক্ষোভ মিছিল। সড়ক জন-মানবশূন্য। সাংবাদিক ছাড়া কোন পথচারী দাঁড়াতে পারছেন না কোথাও। কখনো সাংবাদিকদেরও সন্দেহের চোখে দেখছেন আইনশৃংখলা বাহিনী। দুপুর পৌনে ১টায় প্রেসক্লাব এলাকা থেকে হেঁটে একই পথে (হাইকোর্টের সামনে দিয়ে) বকশিবাজার কোর্টের দিকে যাচ্ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ। সাংবাদিকরা ঘিরে ফেলেন তাদের তিনজনকে। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে একটি জবাবই তিনজনের মুখে এসেছে। তা হচ্ছে, আন্দোলন, সুষ্ঠু নির্বাচন, আইনি লড়াই এ তিনটি এক সাথে চলবে। এসময় তিন নেতাকে দেখে বেশ কয়েকজন কর্মী-সমর্থক এগিয়ে আসলে, তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। দুপুর ১টায় হঠাৎ সাংবাদিকদের মুঠো ফোনে খবর আসে তেজগাঁও, মগবাজার, হাতিরঝিল এলাকায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ীর বহরে যোগ দিয়েছে লক্ষাধিক নেতা-কর্মী সমর্থক। বিভিন্ন অলিগলি থেকে মানুষ এসে যোগ দেয় নেত্রীর গাড়িবহরে। অনেকে এসে দাঁড়ান মৎস্য ভবন, প্রেসক্লাব, হাইকোর্ট ও শিক্ষা ভবন এলাকায়। খালেদা জিয়া আসছেন শুনে মুহূর্তেই লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে এসব এলাকা। দুপুর দেড়টায় মৎস্যভবন, প্রেসক্লাব ও হাইকোর্টের মাজার গেইট হয়ে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত এলাকা লাখো জনতা, নেতাকর্মীর বিভিন্ন সেøাগানে মুখর হয়ে ওঠে। এসময় হাইকোর্টের আইনজীবীরা আইনশৃংখলা বাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে বেরিয়ে এসে সামিল হন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ী বহরে। এর আগে প্রেসক্লাব এলাকায় পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ায় অসংখ্য নেতা-কর্মী ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
জনসমুদ্রের বহর নিয়ে বেগম খালেদা জিয়া দুপুর পৌনে ২টায় বকশিবাজার আদালতে পৌঁছান। এর আগেই পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, ডিবি পুলিশের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা গাড়ীর বহরে হামলা চালায়। এসময় সাংবাদিকসহ বিএনপির শতাধিত নেতাকর্মী আহতের খবর পাওয়া যায়। ভাঙচুর হয় সাংবাদিকদের গাড়ী। ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলার সময় আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা টিয়ার সেল নিক্ষেপ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এরপর আইনশৃংখলা বাহিনী সদস্যরা ঐসব এলাকায় পরিচয়পত্রধারী সাংবাদিক ছাড়া কোন লোকজনকে দাঁড়াতে দেয়নি। তবে ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীরা সাথে অবস্থান করেন।
উল্লেখ্য, বেগম খালেদা জিয়ার রায়কে ঘিরে গত সপ্তাহে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জননিরাপত্তার নামে জনহয়রানি করেছেন - এমনটি মনে করছেন ক্ষুদ্র ও ছিন্নমূল ব্যবসায়ী, ছোট চাকুরীজীবী ও সাধারণ মানুষ। গতকাল অসংখ্য পেশাজীবী মানুষ এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার ঠিক করেননি, এ জনহয়রানি করে। খালেদা জিয়া এবং তার দলের নেতা-কর্মী সমর্থকরা সুশৃখলভাবেই মিছিল করে অন্যান্য দিনের মতো গতকালও আদালতে যাচ্ছিলেন। আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি ছাত্রলীগ-যুবলীগের ন্যাক্কারজনক হামলার নিন্দা জানান তারা।
এদিকে হাইকোর্ট ও ঢাকা আইনজীবী সমিতির বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা খালেদা জিয়ার রায় আইনসম্মত হয়নি দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন।
অন্যদিকে খালেদা জিয়ার গাড়ীর বহরে নেতৃত্ব দেয়ায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক সাবেক এমপি শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির ল²ীপুর জেলা শহরের বাসভবনে হামলা করা হয়। এর নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।