Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধোয়ামোছা হয়েছে কারাগার

| প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা হলে তাকে রাখতে দুটি কারাগার প্রস্তুত করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে পুরান ঢাকার পুরনো কারাগার ও কাশিমপুরের মহিলা কারাগার রয়েছে। এর বাইরে গুলশান ও বনানী এলাকায় কোন সরকারী বাড়ি সাবজেল ঘোষনা করে তাকে রাখার প্রস্তুতি রয়েছে বলে প্রশাসনের একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গতকাল সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, রায় কী হবে, তা যেহেতু তার জানা নেই, সেহেতু আদালত যে সিদ্ধান্কত দেবে, সে অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেয়া হবে। কারাগার যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকে। উনি (বেগম খালেদা জিয়া) সাবেক প্রধানমন্ত্রী, জেল কোড অনুযায়ী যে রকমভাবে রাখার আদেশ আসবে, সেভাবেই রাখা হবে। এখনো জানি না। আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, কারা অধিদপ্তর কোথায় কীভাবে রাখবেন, এটা তাদের ব্যাপার।
কারাগারের একজন ডিআইজি দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, সাজা হলে বেগম খালেদা জিয়াকে গাজীপুরের কাশিমপুরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় নারী কারাগারে (কাশিমপুর-৩) রাখার কথা ভাবা হচ্ছে। ওই কারাগারেই ভিআইপি নারী বন্দী রাখার যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। সেখানকার নিরাপত্তাব্যবস্থাও বেশ ভালো। তবে সেখান থেকে ঢাকার আদালতে আনা- নেয়ার পথ ঝুঁকিমুক্ত নয় বলে কর্মকর্তা মন্তব্য করেন। অন্যদিকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের নারী সেলের দোতলার ঘরগুলোতেও ধোয়ামোছা করা হয়েছে। সেখানে চারটি বড় ঘর রয়েছে। এখানে আগে নারী বন্দীদের শিশুসন্তানেরা খেলাধুলা করত। সংস্কারসহ সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে একজন ভিআইপি থাকার জন্য। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার লোকজন নাজিমুদ্দিন রোডে কারা কর্তৃপক্ষের ওই প্রস্তুতি দেখে গেছেন। ভেতরে ও বাইরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
কারাগার সূত্রে জানা গেছে, বেগম খালেদা জিয়াকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে রাখা হলে তার তত্ত¡াবধানে দুজন ডেপুটি জেলার থাকবেন। একজন নারী ডেপুটি জেলার কারাগারের ভেতরে আরেক পুরুষ ডেপুটি জেলার বাইরে থাকবেন। সার্বক্ষণিক একজন চিকিৎসকও থাকবেন। ওই কারাগারের ভেতরে দায়িত্ব পালনের জন্য কয়েকজন দক্ষ ও পুরোনো কারারক্ষীকে দায়িত্ব দেয়া হবে। কাশিমপুর মহিলা কারাগারের ভিআইপি কক্ষ ধুয়েমুছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন সাফ করা হয়েছে। আরও ভিআইপি মহিলা বন্দি আসতে পারেন এমন ধারণায় কাশিমপুর মহিলা কারাগারের ডিভিশন সেলটিও প্রস্তুত করা হয়েছে। কারা সূত্র জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে সর্বোচ্চ (ডিভিশন) সুবিধা পাবেন। এসব মাথায় রেখেই সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। তবে বিষয়গুলো নিয়ে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ৮ ফেব্রুয়ারি রায়ের দিন বকশীবাজারের বিশেষ কারাগারের আশপাশে বিশেষ নিরাপত্তা থাকবে। এমনিতেই আদালত প্রাঙ্গণে কোনো নেতা-কর্মীকে ঢুকতে দেয়া হয় না। আর ওই দিন বকশীবাজার, পুরান ঢাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, হাইকোর্ট এলাকার আশপাশে কোনো নেতা-কর্মীকে দাঁড়াতে দেয়া হবে না। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে রায়ের ওপর। ৩৬ বছরের রাজনৈতিক জীবনে বেগম খালেদা জিয়া একবারই কারাগারে যান। ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বিগত তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সময় তিনি গ্রেফতার হন। তাকে সংসদ ভবন এলাকার স্থাপন করা বিশেষ কারাগারে রাখা হয়। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের আদেশে মুক্ত হন বেগম খালেদা জিয়া। বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সময় ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর গুলশানের বাসায় অবরুদ্ধ করা হয় তাকে। আর ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি তার গুলশানের কার্যালয়ের দুই পাশে বালুর ট্রাক রেখে অবরুরুদ্ধ করা হয়। ৯৩ দিন অবরুদ্ধ থাকার পর এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে আদালতে হাজিরা দিয়ে বাসায় ফেরেন তিনি।



 

Show all comments
  • মারুফ ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১:৫৮ এএম says : 0
    কিছু বলার নাই।
    Total Reply(0) Reply
  • জুয়েল ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১:৫৯ এএম says : 0
    আল্লাহ আমাদের সবাইকে দেশের জন্য কাজ করার তৌফিক দান করুক।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ