পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কক্সবাজার ব্যুরো : বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর চক্ষু চিকিৎসা ও সেবা দিতে এক সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে বায়তুশ শরফ ও অরবিচ ইন্টারন্যাশনালের মধ্যে। এই চুক্তি স্বাক্ষর উপলক্ষে গতকাল বিকেলে কক্সবাজার আর আর সি অফিসে এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বায়তুশ শরফের কর্ণধার পীর সাহেব বায়তুশ শরফ আল্লামা কুতুব উদ্দীন (ম. আ.)। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন অরবিচ ইন্টারন্যাশনালের সভাপতি এবং সিইও বব র্যাঙ্ক।
এ চুক্তি অনুযায়ী কাতার ডেভলাপমেন্ট ফান্ডের অর্থায়নে অরবিচ ইন্টারন্যাশনালের বাংলাদেশ শাখা প্রকল্পটি আগামী তিন বছরের জন্য কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার শরণার্থী ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগনের চোখের চিকিৎসায় জরুরী ও প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করবে।
গতকাল সৈকত নগরী কক্সবাজারস্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ে অরবিচ ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও কক্সবাজার বায়তুসশ শরফ হাসপাতালের মধ্যে এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করেন, অরবিচ ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মুনীর আহমেদ ও কক্সবাজার বায়তুস্ শরফ হাসপাতালের জেনারেল সেক্রেটারি ও বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের মহাপরিচালক এম. এম. সিরাজুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন,শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ের উপ-সচিব জনাব মোহাম্মাদ মিজানুর রহমান, অরবিচ ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মি. বব র্যাঙ্ক এবং কক্সবাজার বায়তুশ শরফ হাসপাতালের প্রেসিডেন্ট হযরত মাওলানা মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন (ম.জি.আ)।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ের প্রতিনিধি, সরকারী কর্মকর্তা, বায়তুশ্ শরফ হাসপাতালের কর্মকর্তা, অরবিচ ইন্টারন্যাশনাল এর ডিরেক্টর অফ প্রোগ্রামস্ মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, প্রজেক্ট ম্যানেজার মোঃ ইকবাল হোসেন ও প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর পারভেজ হোসেনসহ স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা ও গণমাধ্যম প্রতিনিধগণ।
এ প্রকল্পের স্থানীয় সহযোগী প্রতিষ্ঠান কক্সবাজার বায়তুস্ শরফ হাসপাতালের মাধ্যমে উখিয়া ও টেকনাফের অস্থায়ী শরণার্থী ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রার্থী ও স্থানীয় জনগনের প্রাথমিক ও প্রয়োজনীয় চক্ষু চিকিৎসা ও সেবা প্রদানের লক্ষ্যে কাজ করবে। পাশাপাশি, মহেশখালী ও চকরিয়ার জনগণকে প্রাথমিক চক্ষু চিকিৎসাসহ অদূর ভবিষ্যতে কক্সবাজার বায়তুশ্ শরফ হাসপাতালে একটি বিশেষায়িত শিশু বান্ধব চক্ষু বিভাগ স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। শরণার্থী ক্যাম্প ছাড়া স্থানীয় জনগণের চক্ষু সেবায় ভিশন সেন্টার (প্রাথমিক চক্ষু চিকিৎসা কেন্দ্র) স্থাপন ও মোবাইল ইউনিটের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ক্যাম্পের শিশু ও নারীদের চক্ষু পরীক্ষা করা হবে।
দুটি ধাপে বাস্তবায়িত এই প্রকল্পের প্রথম বছরে পঞ্চাশ হাজার মানুষের চোখ পরীক্ষা করা হবে, আট হাজার শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ককে প্রয়োজনীয় ঔষধ ও চশমা প্রদানসহ কমপক্ষে ২০ জন শিশু ও ৮৫০ জন প্রাপ্তবয়স্কের চোখের অপারেশন (চোখের জটিল ছানি) করা হবে। এছাড়া, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ২৫০ জন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকর্মী ও চক্ষু সেবায় নিয়োজিত লোকবলের দক্ষতা বৃদ্ধি করা হবে বলে সভায় জানানো হয়। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের মহাপরিচালক ও বায়তুশ শরফ চুক্ষু হাসপাতালের জেনালের সেক্রেটারী এম এম সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, এই চুক্তি একটি বড় ধরণের সফলতা। এটি শুধু রোহিঙ্গা নয় কক্সবাজারবাসীর আনন্দের বিষয়। ডাক্তার আব্দুর নূর বুলবুল বলেন, অরবিচ চাইলে তিন বছর কেন এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকতে পারে।
সভায় তথ্য প্রকাশ করে জানানো হয়, কক্সবাজার বায়তুশ শরফ হাসপাতাল একটি আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত চক্ষু হাসপাতাল। স¤পূর্ণ অলাভজনক ভাবে পরিচালিত এ হাসপাতালটি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণীর, সকল পেশার, সকল মানুষের চক্ষু চিকিৎসা কেন্দ্র। এ অঞ্চলের দরিদ্র জনগণকে অন্ধত্বের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য বায়তুশ শরফ দরবারের মরহুম পীর হাদিয়ে যামান শাহ সুফী আলহাজ হযরত মাওলানা আব্দুল শাহ জাব্বার (রহঃ) ১৯৯২ সালে কক্সবাজার বায়তুশ শরফ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে পীর সাহেব বায়তুশ শরফ আল্লামা কুতুব উদ্দীন বলেন, বায়তুশ শরফ যে, মানুষের আত্মার পরিশুদ্ধির পাশাপাশি শিক্ষা, চিকিৎসা ও মানব সেবার সার্বজনিন প্রতিষ্ঠান তার বড় প্রমাণ অরবিচের সাথে এই চুক্তি স্বাক্ষর। তিনি দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে তিনি মোনাজাত পরিচালনা করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।