পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হাসান সোহেল : বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) যুগ্ম পরিচালক পর্যায়ের তিনি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুর রব, কামাল হোসেন এবং মাসুদ রানা বাংলাদেশ ব্যাংকের খরচে বিদেশ ভ্রমনের রেকর্ড করেছেন।
তাদের এই রেকর্ড পরিমান বিদেশ ভ্রমনে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এমনকি গভর্নর ফজলে কবিরও বিষয়টিতে বিব্রত। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ভরশীল একটি সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদ আব্দুর রব ২০০৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগদান করেন। এর পর থেকে একই বিভাগ বিএফআইইউতে গত ১৪ বছর কর্মরত আছেন। এই সময়ে প্রায় শত বার বিদেশে ভ্রমন করেছেন। পাশাপাশি প্রায় ১ হাজার দিন বিদেশে অবস্থান করেছেন। আব্দুর রব গত ১ বছরেই ২২ বার বিদেশে ভ্রমন করে ১৫০দিন বিদেশে অবস্থান করেছেন বলে জানা গেছে। মোহাম্মদ আব্দুর রব ইনকিলাবকে বলেন, রিজার্ভ হ্যাকিং ঘটনার কারণে গত ২ বছরে ১০ বার ফিলিপাইনে যেতে হয়েছে। গত বছরই ৫বার। এছাড়া কান্ট্রি এসেসমেন্টের দায়িত্ব থাকায় একটি দেশে দুই বার সফর করতে হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন কাজের সাথে জড়িত থাকায় বিদেশ যেতে হয়। একই সঙ্গে কর্তৃপক্ষ পাঠালে আমার কি করার। এদিকে গত ১ বছরে ২২ বার বিদেশ সফর প্রসঙ্গে বলেন, অনেকবার বিদেশ যেতে হয়েছে। তবে ২২ বার সঠিক নয়।
বিএফআইইউ’র আরেক কর্মকর্তা কামাল হোসেন কমপক্ষে ৮০ বার বিদেশ ভ্রমন করেছেন। আনুমানিক ৮শ’ দিন বিদেশে অবস্থান করেছেন। তিনি গত ১ বছরেই ১৩ বার বিদেশ ভ্রমন করে, ৭০ দিন বিদেশে অবস্থান করেন।
কামাল হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, অফিসের বিভিন্ন প্রয়োজনে বিদেশ ভ্রমন করতে হয়। তবে কোনটিই ট্রেনিংয়ে নয়; সবগুলোই ছিল সভা- সেমিনার। এই সভা-সেমিনারে সাধারণত বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা হয়।
পাশপাশি বছরে ৬বার বিদেশ ভ্রমন করলে ৪ বারই বিভিন্ন প্রোগ্রামে আয়োজকরা আমাকে এক্সপার্ট হিসেবে নিয়ে গেছে। যা বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থে নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি। একই সঙ্গে ১ বছরে ১৩ বার বিদেশ ভ্রমন সঠিক নয়। তবে ৭/৮ বার হতে পারে বলে উল্লেখ করেননি তিনি। তিনি জানান, গত বার থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক কাজ থাকায় ৪ বার যেতে হয়েছে। পাশাপাশি প্যারিস, রাশিয়াসহ বিশ্বব্যাংকের অনুষ্ঠানে এক্সপার্ট হিসেবে যেতে হয়েছে।
অপর কর্মকর্তা মাসুদ রানাও ৭০ বার বিদেশ ভ্রমন করেছেন। যা দিনের হিসেবে প্রায় ৭শ’ দিন বিদেশে অবস্থান করেছেন এই কর্মকর্তা। মাসুদ রানা অফিসের প্রয়োজনে অধিক সংখ্যকবার বিদেশ ভ্রমনের বিষয়টি স্বীকার করেন। এক্ষেত্রে তিনি বলেন, দ্বিপাক্ষিক কাজ থাকায় গত বছর কম্বোডিয়ায় চার বার ভ্রমন করেছি। এভাবে বিভিন্ন সভা-সেমিনারে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে হয়। তাই বিদেশে যেতে হয়। এখানে নিজস্ব কোন ইচ্ছা বা ভ্রমনের সুযোগ নেই বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি হিসেবে প্রতিষ্ঠান থেকে আমাকে পাঠানো হয়েছে।
বিএফআইইউ’র মোহাম্মদ আব্দুর রব, মো. কামাল হোসেন এবং মাসুদ রানার বিদেশ ভ্রমন বাংলাদেশ ব্যাংকতো দূরের কথা অধিক বিদেশ ভ্রমনে সমালোচিত সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী দিপু মনিও ভ্রমন করতে পারেননি। এসব কর্মকর্তাদের এমনও হয়েছে বিদেশ থেকে দেশে এসে যেদিন ব্যাংকে যোগদান করেছেন পরেরদিনই আবার বিদেশ ভ্রমন করতে হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালকতো দুরের কথা কোন গভর্নরও এতবার বিদেশ ভ্রমন করেননি। তাদের বিদেশ ভ্রমনের কাহিনী রুপকথার গল্পকেও হার মানিয়েছে।
এদিকে এসব কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমনের রেকর্ডে গভর্নর ফজলে কবির বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হলেও আইন অনুযায়ী বিএফআইইউ ইউনিটের প্রধান একজন ডেপুটি গভর্নর হওয়ায় তিনি বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করছেন না।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, এই তিন কর্মকর্তা মূলত ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মো. রাজি হাসানের আনুকূল্যেই কখনো বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্পূর্ণ খরচে কখনো আয়োজক সংস্থার আংশিক খরচে এ রেকর্ড গড়ে তুলেছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অনেক যোগ্য ও মেধাবী কর্মকর্তা থাকা স্বত্তেও কেবল এ তিন কর্মকর্তার রেকর্ড পরিমান বিদেশ ভ্রমন প্রতিষ্ঠানটির মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। পাশাপাশি আবু হেনা মো. রাজি হাসান মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের দায়িত্বে থাকায় এই তিন কর্মকর্তাও একই ইউনিটে বহাল আছেন বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা ক্ষোভের সাথে উল্লেখ করেছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভলপমেন্ট উইং’র উপমহাব্যবস্থাপক মো. মজিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ হ্যাকিং ঘটনার কারণে এসব কর্মকর্তাদের অধিক সংখ্যক বিদেশ ভ্রমন করতে হয়েছে। তবে কতবার তারা বিদেশ ভ্রমন করেছে এটা বলতে পারছি না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।