পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খড়সার ৩২ ধারা সাধারণ নাগরিক ও গণমাধ্যম কর্মীদের আপত্তি থাকলে অভিযোগ বা বক্তব্য থাকলে তথ্য মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে তা জানানোর পরামর্শ দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এসোসিয়েশন অভ্ টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (এটকো) প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকে সভাপতির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টা এবং এটকো’র সভাপতি সালমান এফ রহমান ও তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী এসময় উপস্থিত ছিলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন চূড়ান্তভাবে সংসদে পাস হওয়ার আগে এটা পরিমার্জনের সুযোগ আছে। তাই এটা নিয়ে যদি কারো কোনো বক্তব্য থাকে সেটা আমাদের কাছে দিলে আমরা এটা নিয়ে সংশ্লিষ্টমহলের সঙ্গে কথা বলব।
ইনু বলেন, যেকোনো নাগরিক অথবা গণমাধ্যমের যেকোনো কর্মী এবং অ্যাটকো কর্তৃপক্ষকে বলব ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কোনো কিছু যদি আপনাদের কাছে উদ্বেগজনক মনে হয় বা যদি মনে করেন ডিজিটাল এই আইনটির কোনো অংশ পরিমার্জন করা দরকার। এ ব্যাপারে আপনারা লিখিত বক্তব্য তথ্য মন্ত্রণালয়কে দেবেন। এ বিষয়টি আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করবে আইনটি চূড়ান্ত করার সময় আপনাদের প্রস্তাব বিবেচনায় নেয়ার জন্য।
গত ২৯ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন হওয়া আইনটি পাসের জন্য সংসদে তোলার প্রক্রিয়া চলছে। তবে অনুমোদনের পর থেকেই খসড়া আইনের ৩২ ধারা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এই ধারাটির কারণে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বাধগ্রস্ত হতে পারে বলে সমালোচনা করে আসছেন সাংবাদিকরা। এই ধারায় বলা আছে, যদি কোনো ব্যক্তি বেআইনি প্রবেশের মাধ্যমে কোনো সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত বিধিবদ্ধ সংস্থার কোন গোপনীয় বা অতি গোপনীয় তথ্য-উপাত্ত কম্পিউটার বা ডিজিটাল ডিভাইস বা কম্পিউটার নেটওয়ারর্কে ধারণ, প্রেরণ, সংরক্ষণ করেন বা করতে সহায়তা করেন তাহলে সেটা হবে গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ। এই গুপ্তচরবৃত্তির সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছর জেল বা সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা জরিমানা। কেউ যদি এই অপরাধ দ্বিতীয়বার বা বারবার করেন, তাহলে তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ড ভোগ করতে হবে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক অবশ্য বলেছেন, এই আইন সাংবাদিকদের জন্য করা হয়নি আর প্রতিবেদন তৈরি করতে গোপনে ভিডিও করলে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে না।
তথ্যমন্ত্রীর এই মতবিনিময়ের দিন সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে করা মিট দ্য প্রেসে আইনমন্ত্রী এমনও বলেছেন, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করার জন্য যদি কোনো সাংবাদিককে ৩২ ধারায় অভিযুক্ত করা হয় তাহলে আমি একজন আইনজীবী হিসেবে বিনা ফিতে তার জন্য আদালতে দাঁড়াব। সংসদে পাসের আগে ন্যায়সঙ্গত কারণ থাকলে দরকার হলে জনস্বার্থে ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার সুরক্ষায় ৩২ ধারায় একটি সাব সেকশন অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলেও জানান আইনমন্ত্রী। তথ্যমন্ত্রীও জানিয়েছেন একই ধরনের কথা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটা মন্ত্রিপরিষদে উঠেছে। এখন এটি সংসদীয় কমিটিতে যাবে। এরপর এটি সংসদে যাবে। এরপর চূড়ান্ত হবে।’ মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের ডিজিটাল নিরাপত্তা, নারীদের নিরাপত্তা, শিশুদের নিরাপত্তার জন্য এই আইনটি প্রনয়ণের উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রিসভা। তারপরেও আমি বলব এটা নিয়ে যদি আপনাদের কোনো উদ্বেগ থাকলে অবশ্যই আমরা আলোচনা করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব। ব্যয় কমিয়ে কীভাবে চ্যানেলগুলোকে লাভজনক করা যায় সেটা নিয়েও আলোচনা হয় সেখানে। আর এ বিষয়ে অ্যাটকোকে বলেছি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিতেও বলেছেন মন্ত্রী। ইনু টেলিভিশন মালিকদের বলেন, দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে আপনারা দেশজ সংস্কৃতির লালন ও বিকাশ করবেন।’সংস্কৃতির বিকৃতি যেন না হয় সেটাও দেখবেন। একই সঙ্গে বাঙালিয়ানার চর্চা করবেন। যেন বাংলিশ না হয়। বাংলা চর্চাটা যেন ভাল হয়। এর বাইরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী আদর্শ, জঙ্গি সন্ত্রাস, আগুন সন্ত্রাস বা যুদ্ধাপরাধী, খুনি চক্র, সা¤প্রদায়িক চক্র এবং ধর্মান্ধ চক্রের বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সংবিধানবিরোধীদের বর্জন করতে সোচ্চার হওয়ার আহŸানও জানান।বৈঠকে ক্যাবল অপারেটরদেরকে দেশি টিভি চ্যানেলগুলো প্রদর্শনক্রমের প্রথমে রাখার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া পূর্বের নির্দেশ যথাযথভাবে পালিত হচ্ছে কি না তা পরিবীক্ষণের সিদ্ধান্ত হয়। সেই সাথে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর ব্যয় কমানো ও আয় বৃদ্ধির বিভিন্ন আইনগত দিক নিয়েও সভায় আলোচনা হয়।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো: নাসির উদ্দিন আহমেদ, প্রধান তথ্য অফিসার কামরুন নাহার, অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রচার) মো: মোশাররফ হোসেন, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এস এম হারুন অর রশীদ, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইসতাক হোসেন, একাত্তর টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক বাবু, সময় টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ জোবায়ের, দীপ্ত টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জাহেদুল হাসান, দেশ টেলিভিশনের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসান, বাংলাভিশনের পরিচালক মোঃ আশরাফ উদ্দিন আহমেদ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।