নাছিম উল আলম : দেড় শতাধিক কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের তিনটি বিভাগীয় সদরে ৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নির্মান কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যেই সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্মান কাজ শেষ করবে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফ্তর। ইতোমধ্যেই এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান অংশের নির্মান কাজ শেষ করে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুও করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফ্তর। সম্পূর্ণ দেশীয় তহবিলে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফ্তরের নিজস্ব নকশা ও তত্বাবধানে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মান করা হয়েছে। এর ফলে বরিশাল, সিলেট ও খুলনা মহানগরীতে মাধ্যমিক পর্যায়ে মানসম্মত শিক্ষার সুযোগ আরো স¤প্রসারিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী বৃহস্পতিবার বরিশালে ‘শহিদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত মাধ্যমিক বিদ্যালয়’ ও ‘শহিদ আরজু মনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রী একই সাথে শতাধিক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ-এরও উদ্বোধন করবেন।
প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর কাউনিয়া ও রূপাতলী এলাকায় এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পূর্ত কাজের প্রায় ৭৫ ভাগ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। একই প্রকল্পের আওতায় সিলেটে দুটি ও খুলনাতে ৩টি অনুরূপ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্মান কাজও শেষ পর্যায়ে।
২০১৭-এর জানুয়ারী থেকে বরিশাল জিলা স্কুলের কলেজ ভবনের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুটির ক্লাশ শুরুর পরে গত ১ জানুয়ারী থেকে নিজস্ব ক্যাম্পাসেই শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ভৌত অবকাঠামো খাতে প্রায় ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বরিশালের দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি ৭ তলা ভবনের ৪র্থ তলা পর্যন্ত নির্মাণ কাজ শেষ করে ক্লাস শুরু করা হয়েছে। চলতি অর্থ বছরের মধ্যেই ৭তলা পর্যন্তই নির্মান কাজ শেষ করে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর লক্ষ্যে কাজ করছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফ্তর। এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মানের ফলে বরিশাল মহানগরীতে মাধ্যমিক পর্যায়ে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা পাঁচ-এ উন্নীত হল। এর বাইরে বরিশাল জিলা স্কুল ও সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছাড়াও ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত সরকারী বরিশাল মডেল স্কুলও রয়েছে। ২০০৪Ñ০৫ অর্থ বছরে শুরু হয়ে ২০০৬-০৭ অর্থ বছরে ঢাকাসহ দেশের ৬ বিভাগীয় সদরে ১১টি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ নির্মিত হয়। গত বছর এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করন করে সরকার।
নব নির্মিত আবদুর রব সেরনিয়াবাত সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও আরজু মনি সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৩ হাজার ছাত্রÑছাত্রী শিক্ষার সুযোগ লাভ করবে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অত্যাধুনিক বিজ্ঞানাগারসহ আইসিটি সেন্টারও থাকছে। মূল একাডেমিক ভবনে একাধিক লিফটে ছাত্রÑছাত্রীদের ৭ম তলা পর্যন্ত ওঠানামার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে মানবিক, বিজ্ঞান ও বানিজ্য বিভাগে ছেলেÑমেয়েদের একইসাথে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
নতুন এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছেলে-মেয়েদের ভর্তি করতে পেরে বরিশাল মহানগরীর অভিভাবক মহল দারুন খুশি। নগরীতে ৫টি সরকারী মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হওয়ায় শিক্ষাক্ষেত্রে একটি সুষম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদগন।