পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টালিন সরকার : ঘটনা খুবই ছোট্ট। অনেকের কাছে এটি কোনো ঘটনাই নয়। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীদের কাছে ‘বিরাট’ ঘটনা। বেগম খালেদা জিয়া দলীয় নেতাদের জন্য মায়ের মমতায় যা করলেন তা সত্যিই বিরল। কারণ আমাদের দেশের বড় দলগুলোর নেতানেত্রীদের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা সচারচর দেখা যায় না। দেশের রাজনীতিতে দেখা যায় সভা সমাবেশে অনেক আগেই নেতাকর্মীদের হাজির হতে হয়। সবার শেষে নেতা বা নেত্রী আসেন এবং বক্তৃতা-নির্দেশনা দিয়ে চলে যান। অতপর নেতাকর্মীরা কে কিভাবে যাবেন বা কি খাবেন কেউ বিপদে পড়লেন কিনা শীর্ষস্থানীয় নেতা-নেত্রীদের সে ভ্রæক্ষেপ নেই। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া যেন দলের গ্রেফতার আতঙ্কিত নেতাদের মায়ের মমতায় হৃদয়ের নিংড়ানো ভালোবাসাই উপহারের মাধ্যমে নিরাপত্তা দিলেন।
দেশের রাজনীতিতে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ৩ ফেব্রæয়ারি দলের জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সারাদেশ থেকে আসা নেতাকর্মীরা যে বার্তা নিয়ে গেলেন সেটা সারাজীবন মনে রাখবেন। আগামী ৮ ফেব্রæয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ের দিন ধার্য। এ নিয়ে দলের নেতাকর্মীরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিনযাপন করছেন। এমন সময় বেগম খালেদা জিয়া দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্ত নেন। গুরুত্বপূর্ণ ওই বৈঠকে অংশগ্রহণ করতে সারাদেশ থেকে নেতারা ঢাকায় আসেন। কিন্তু রাজধানীতে রাজনৈতিক দলের সেমিনার-সভা-সিম্পোজিয়ার করা যায় এমন কোনো স্থানেই বিএনপিকে বৈঠক করার অনুমতি দেয়া হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে এয়ারপোর্ট রোডের হোটেল লা মেরিডিয়ানে বৈঠকের ভেন্যু চ‚ড়ান্ত করা হয়। কিন্তু বেগম জিয়ার আদালত থেকে ফেরার সময় একটি অপ্রীতিকর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ততক্ষণে শুরু হয়ে গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর গ্রেফতার অভিযান। কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ের দলের অধিকাংশ নেতার বিরুদ্ধেই মামলা এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা ঝুলছে। আমান উল্লাহ আমান ও নাজিম উদ্দিন আলম, আজিজুল বারী হেলালসহ কয়েকজনকে গ্রেফতারের পর নেতাদের বাসায় বাসায় অভিযান চালানো হচ্ছে। অথচ কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সকল নেতার উপস্থিত থাকা অপরিহার্য। বৈঠকে আসার পথে সভাস্থল হোটেলের বাইরে থেকে ২০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে আটক করা হয়। গ্রেফতারের সচিত্র খবর অনলাইন মিডিয়া ও টিভিতে প্রচার হয়। পুলিশের গ্রেফতারের এড়াতেই হাবিব উন নবী খান সোহেলসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা বৈঠকে প্রবেশ করতে পারেননি। হোটেল লা মেরিডিয়ানের চারদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান গ্রহণ করে। বেলা ১১টায় শুরু হওয়া বৈঠক শেষ হয় সন্ধ্যা সোয়া ৬টায়। দীর্ঘ বৈঠক। দেশের প্রান্ত থেকে আসা নেতাদের কথা শোনার পর বেগম জিয়া বক্তৃতা করেন। বৈঠক চলার সময়ই সারাদেশ থেকে আসা অনেক নেতাই গ্রেফতার অতঙ্কে পড়ে যান। বৈঠক শেষে তাই হোটেল থেকে বের হতে তারা ভয় পাচ্ছিলেন। কেউ কেউ হোটেল থেকে বের হলেই গ্রেফতার হবেন এমন শঙ্কায় ছিলেন।
বিএনপি নেতাদের এই আতঙ্ক বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। গ্রেফতার এড়িয়ে দলীয় নেতারা যাতে নিরাপদে সভাস্থল ত্যাগের করতে পারেন, সে জন্য সমাপনী বক্তৃতা দিয়েই বেগম খালেদা জিয়া হোটেলের প্রধান গেইটে দাঁড়িয়ে যান। উদ্দেশ্য পুলিশ যাতে নেতাদের গ্রেফতার না করে। বেগম জিয়া জানতেন তিনি হোটেলের মূল ফটকে দাঁড়িয়ে থাকলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সৌজন্যবোধের কারণেই বিএনপি নেতাদের সেখানে গ্রেফতার করবে না। বেগম জিয়া দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকেন এবং বৈঠকে আসা নেতাদের একের পর এক গাড়ি বিদায় দেন। গ্রেফতার এড়িয়ে সকল নেতা চলে যাওয়ার পর তিনি গাড়িতে উঠে গুলশানের বাসভবনের দিকে রওয়ানা দেন।
দলীয় নেতাদের যাতে গ্রেফতার করতে না পারে, সে জন্য দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে বেগম খালেদা জিয়া যে দৃষ্টান্ত রাখলেন তা কেবল সন্তানের জন্য একজন মায়ের করণীয়র সঙ্গে তুলনা করা চলে। এ ঘটনার পর বিএনপির অনেকেই বলছেন, বেগম জিয়া শুধু তারেক রহমান আর মরহুম আরাফাত রহমানের মা নন; তিনি সারাদেশের লাখ লাখ বিএনপি নেতাকর্মীর মা। অবশ্য গত দুইদিনে বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।