Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এনবিআর’র অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী - ২০১৯ সালের জুন থেকে পদ্মা সেতুতে যান চলাচল

| প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : ২০১৯ সালের জুন মাস থেকে পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। গতকাল সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় সর্বোচ্চ ভ্যাট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভ্যাট সম্মাননা প্রদান ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালের জুন মাস থেকে থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হবে। তবে এর আগে মার্চ মাস থেকেই যান চলাচল শুরু হতে পারে। তিনি বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু বাস্তবায়ন হচ্ছে। আমার ধারণা ‘আগামী মার্চ মাসে, মার্চে আমরা বেশি আশাবাদী হচ্ছি। ডেফিনেটলি জুন মাসে পদ্মাসেতুর ওপর দিয়ে যান চলাচল শুরু হবে। আমাদের ওবায়দুল কাদের সাহেব চেয়েছিলেন ডিসেম্বরের মধ্যে। কিন্তু সেটা সম্ভব হবে না। কারণ এখনো সব স্প্যান বসেনি।’ বিশ্বব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানকে অসম্ভব বাজে লোক ও অত্যন্ত অপদার্থ উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, সেই অপদার্থের চাকরির শেষদিনে তিনি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করল পদ্মাসেতুতে কোন এক কনসালটেন্টকে নিয়োগের জন্য ষড়যন্ত্র করছে। ঘুষ কেউ পায়নি, কিন্তু ঘুষ নেওয়ার চক্রান্ত­-এ বলে তিনি কোনো অনুমোদন ছাড়াই পদ্মাসেতুর ঋণ বাতিল করে দেন। এটা আমাদের সৌভাগ্য যে সেই বদমাইশ সেই দিনই বিদায় হয়। পরে কেইসটা স্থানান্তর হয়। আমরা সেই সময় বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। কারণ বিশ্বব্যাংক আমাদের বড় দাতা সংস্থা। বিশ্বব্যাংক থেকে আমরা আগে অনেক সাহায্য পেতাম। বাংলাদেশের জন্মলগ্নে ডেভেলপমেন্ট ও রেভিনিউসহ পুরো বাজেটের অর্থ বিশ্বব্যাংক দিত।
তিনি বলেন, আগে বৈদেশিক সাহায্য আমাদের জাতীয় আয়ের ৯-১০ শতাংশ পেলেও বর্তমানে ১ দশমিক ৪ শতাংশ পাই। গত কয়েক বছরে এ হার বেড়ে দুই শতাংশ হতে পারে। আমরা এখনো যথেষ্ট বৈদেশিক সহায়তা পেয়ে থাকি। এরপরও আমরা তাদের দাতা বলতে চাই না। কারণ তারাও সেটা পছন্দ করে না। আমরা তাদের ডেভেলপমেন্ট পার্টনার বলতে পারি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কয়েক বছর ধরে যারা বেশি কর প্রদান করেন তাদেরকে স্বীকৃতি দেন। তারা সমাজে একটু সম্মান পাবেন এবং তাদের দেখে অন্যরা উদ্ধুদ্ধ হবেন। তিনি বলেন, এক সময় কথায় ছিল যে কর দিও না। একবার যদি জালে পড় তাহলে সারাজীবন হয়রানি ভোগ করতে হবে। এখন এ ধারণা কারো মধ্যে নেই। কর কর্মকর্তারা করদাতাদের সম্মান এবং সাহায্য করেন। এত কিছু করার পরও আমাদের কর আদায় অনেক কম।
মুহিত বলেন, বাজেটের আকার বাড়লেও জাতীয় আয়ের অনুপাত হিসেবে আমরা যে কর দেয় সেটা এখনো সারাবিশ্বের একটা ন্যূনতম পর্যায়ে আছে। আমরা ১০-১১ শতাংশ কর দেয়। খুব কম দেশে ১৪-১৫ শতাংশের নিচে রয়েছে। সেখানে আমাদের কিছু উদ্যোগ নিতে হবে এবং আমরা নিচ্ছি। করদাতাদের সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে। আগে ছিল ১৪ লাখ ছিল, এখন ৩৩ লাখ। এটা সুসংবাদ।
ভ্যাট সম্পর্কে তিনি বলেন, ভ্যাটে আমরা কিছু সংস্কার করতে চেয়েছিলাম। ব্যবসায়ীদের কাছে তা গ্রহনযোগ্য না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী তা দুই বছরের জন্য স্থগিত করে দিয়েছেন। আমরা চেষ্টা করছি এ সময়ের মধ্যে কিভাবে এ ভ্যাটকে কাস্টমারবান্ধব করা যায়। এনবিআরের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান।
অনুষ্ঠানে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে ২০১৭ সালের ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে সর্বোচ্চ আয়কর প্রদানকারী ও ঢাকা জেলার কর বাহাদুর পরিবার স্বীকৃতি দিয়েছে এনবিআর। সর্বোচ্চ আয়কর প্রদানকারী ও কর বাহাদুর পরিবার স্বীকৃতি লাভ করায় এনবিআরকে ধন্যবাদ জানান সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। তিনি বলেন, যে জাতি যত বেশি শিক্ষিত সে জাতি তত বেশি উন্নত। যে জাতি যত বেশি ট্যাক্স প্রদান করে সে জাতি তত বেশি সভ্য, সেই জাতি তত বেশি দেশের সেবা করে থাকে। কর যারা দেয় তারা স্বচ্ছ থাকে। আমি ঢাকা সিটি করপোরেশনের ভেতর সর্বোচ্চ কর দেওয়ার মাধ্যমে আমার স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতার প্রমাণ রেখেছি।
আবুল হোসেন এনবিআর কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময়ও আমার কাগজপত্র দেখেছেন। আমার কাগজপত্র এবং কর স্বচ্ছভাবে দেওয়া ছিল বলেই ওয়ান ইলেভেনের কেয়ারটেকার গর্ভমেন্ট সময় আমার বিরুদ্ধে যতগুলো অভিযোগ ছিল কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেননি। আমার জীবনটাই স্বচ্ছ এবং সততার ওপর ভিত্তি করে। প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয় উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেন, কর বাহাদুরের পরিবর্তে কর রতœ বা কর সেবক স্বীকৃতি দেওয়া যায় তাহলে খুবই ভালো হয়। অনুষ্ঠানে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০১৮ এ অংশ গ্রহণকারী ১০ প্রতিষ্ঠানকে সর্বোচ্চ ভ্যাট প্রদান করায় ভ্যাট সম্মাননা সনদ ও পুরস্কার প্রদান করা হয়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ