পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘বিএনপি ছাড়া অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়’ অভিমত ব্যক্ত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। তিনি বলেছেন, বিএনপি একটি বড় দল, তাদের ছাড়া সব দলের অংশগ্রহণ হয় কী করে? বিএনপি ছাড়া অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না। আশা করছি বছরের শেষ দিকে অনুষ্ঠেয় একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে। গতকাল নির্বাচন ভবনে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ অভিমত ব্যক্ত করেন। বিএনপি অভিযোগ করে আসছে তাদের নির্বাচনের বাইরে রাখতে চাইছে আওয়ামী লীগ। এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন করা বিএনপির দায়িত্ব; তাদের ভোটে আনার দায়িত্ব আওয়ামী লীগের নয়।
ওবায়দুল কাদের বলছেন, তাদের (বিএনপির) কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছে, তারা নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার টালবাহানা করছে। অন্যদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচনকালীন ‘সহায়ক’ সরকার গঠনের দাবি তুলছেন। মূলত নির্দলীয় সরকারের অধীনে না হওয়ায় বিএনপি দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি। একাদশ সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে এলেও বিএনপি নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আগের দাবি এখনও পুরোপুরি ছাড়েনি। তারা এখন বলছে ভোটের সময় শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। শুধু তাই নয়; ডিসেম্বরে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় খরচে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন; অন্যদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন দৌড়ঝাঁপ করছেন আদালতপাড়ায়। দেশের রাজনীতির এই যখন অবস্থা তখনই সিইসি এমন মন্তব্য করলেন।
প্রেসিডেন্ট পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট মো: আবদুল হামিদের পক্ষে গতকাল মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়। জাতীয় সংসদে সরকারি দলের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ নির্বাচন কমিশন থেকে আবদুল হামিদের পক্ষে এ মনোনয়নপত্র নেন। এ সময় সিইসি নির্বাচন ভবনে উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, বিএনপিকে ভোটে আনার উদ্যোগ নিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নারাজ হলেও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য খালেদা জিয়ার দলকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন। কে এম নূরুল হুদা বলেন, আমরা এখনও আশা করি, বিএনপিসহ সব দল সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১২ জানুয়ারি জাতির উদ্দেশে ভাষণে ডিসেম্বরে নির্বাচন এবং নির্বাচনের সময় গতবারের মতো জোট সরকার গঠনের ইঙ্গিত দিলে তা নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দেয় বিএনপি। কিন্তু বিএনপির সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব নাকচ করেন শেখ হাসিনা। নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের প্রস্তাবও গ্রহণযোগ্য নয় বলে উড়িয়ে দেন তিনি। এরই মধ্যে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলার রায়ের তারিখ হওয়ার পর বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, সাজানো রায় দিয়ে তাদের নেত্রীকে নির্বাচনের বাইরে রাখার চক্রান্ত হচ্ছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন. নির্বাচনে না যাওয়ার জন্য বিএনপি নানা ধরনের টালবাহানা করছে। বিএনপিকে নির্বাচন থেকে বাদ রাখতে সরকার ষড়যন্ত্র করছে বলে দলটির নেতাদের অভিযোগের পাল্টায় তার এই মন্তব্য করেছেন। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শনির আখড়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নির্মিত দু’টি ফুট ওভারব্রিজ উদ্বোধন করতে গিয়ে বিএনপিকে নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, বিএনপির কাজকর্ম দেখে, তাদের কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছে, তারা নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার টালবাহানা করছে। এ জন্য তারা নানা ছলচাতুরির আশ্রয় নিচ্ছে। দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনের পর একাদশ নির্বাচনের আগেও বিএনপি নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি তুলেছে, যা প্রত্যাখ্যান করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা এমন একটি নির্বাচন চাই, যা হবে সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ। অবশ্যই তা হতে হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাইরে রেখে। এটাকে তত্ত¡াবধায়ক সরকার কিংবা অন্য নামেও ডাকা যেতে পারে। এদিকে সরকার পরিকল্পিতভাবে আরেকটি বিতর্কিত নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিএনপি। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, একতরফা ভোট প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায়। তাই তিনি নির্বাচনী ঘর অগোছালো রেখে আবারও ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হচ্ছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জাল নথির ওপর ভিত্তি করে ভুয়া ও মিথ্যা মামলায় হয়রানির মাধ্যমে জুলুম করা হচ্ছে। রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার নেতৃত্বাধীন কোয়ালিশন সরকারের পার্টনার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। আর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জাল নথির ওপর ভিত্তি করে ভুয়া ও মিথ্যা মামলায় হয়রানির মাধ্যমে জুলুম করা হচ্ছে প্রায় প্রতিদিন। এই রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জনগণের কাছে প্রমাণ হয়ে গেছে সরকার পরিকল্পিতভাবে ভিন্ন কৌশলে আরেকটি বিতর্কিত নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে। কারণ ভোটারবিহীন সরকার ক্ষমতার মগডালে বসে থাকার মজাটা পাচ্ছে, তাই তারা নাছোড়বান্দার মতো ক্ষমতা ধরে রাখতে আগ্রহী।
জানা গেছে, দশম সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয় ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি। সেক্ষেত্রে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির আগে ৯০ দিনের মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গত বছরের ১৬ জুলাই নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রকাশ করে ইসি। সাতটি কর্মপরিকল্পনা সামনে রেখে বই আকারে এ রোডম্যাপ প্রকাশ করেছে কমিশন। ইসির রোডম্যাপে যে সাতটি কর্মপরিকল্পনা রয়েছে সেগুলো হচ্ছেÑ আইনি কাঠামোগুলো পর্যালোচনা ও সংস্কার। নির্বাচন প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও যুগোপযোগী করতে সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ গ্রহণ। সংসদীয় এলাকার নির্বাচনী সীমানা পুনঃনির্ধারণ। নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সরবরাহ। বিধি অনুসারে ভোটকেন্দ্র স্থাপন। নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা এবং সুষ্ঠু নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ। এদিকে গত ৩১ জানুয়ারি একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সহায়ক সরকারের দাবি আবারো নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন হচ্ছে বাংলাদেশের সংবিধান। সংবিধান অনুযায়ী সহায়ক সরকার বলে কোনো সরকার গঠন করার বিধান নেই। আমাদের সরকার গণতন্ত্রকে সব সময় সমুন্নত রাখবে, সে জন্য সংবিধান পরিপন্থী কোনো সরকার আমরা গ্রহণ করব না। ২০০৬ সালে সংবিধানে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের স্পষ্ট রূপরেখা থাকা সত্তে¡ও তাদের পছন্দসই ব্যক্তিকে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের প্রধান করার চেষ্টা করে নির্বাচনের নামে প্রহসন করার উদ্দেশ্য থাকায় দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয় এবং একটি তত্ত¡াবধায়ক সরকার দুই বছর ক্ষমতায় থাকে। এসব ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, বিএনপি কোনো দিনই গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতার পক্ষে ছিল না। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচনে বিএনপিকে রাখার গুরুত্ব তুলে ধরলেন সিইসি। তিনি এর আগে সংলাপের সময় বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের নেতাদের সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।