Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বিষাক্ত বর্জ্যর কারণে হালদা নদীতে বার বার ডলফিনের মৃত্যু

ইনকিলাবে সংবাদ প্রকাশের পর তদন্ত টিম হালদার পাড়ে

| প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

আসলাম পারভেজ, হাটহাজারী থেকে : মা মাছের মেটারনেটি হিসেবে খ্যাত মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীর উপর নানান নির্যাতনের কারণে নদীতে বার বার মারা যাচ্ছে ডলফিন। একের পর এক ডলফিন মারা যাওয়ার ঘটনায় হালদার তীরবর্তী মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। পাশাপাশি নদীর অনূকূল পরিবেশও হারাচ্ছে। কয়েকদিন পর পর বিভিন্ন এলাকায় বেসে ওঠছে গাঙ্গের (মৃত) ডলফিন। হালদা নদীর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্পটে বিভিন্ন সময়ে আটকা পড়েছে এই মৃত্যু ডলফিনগুলো। কিন্তু এরপরও হালদা নদীর উপর নির্যাতন কিছুতেই বন্ধ করা যাচ্ছে না। ইঞ্জিল চালিত নৌকা, বালু তোলার ড্রেজার মেশিন, কারেন্ট জাল সবসময় লেগেই আছে হালদা নদীতে। বার বার হালদা নদীতে ডলফিন মারা যাওয়ার ঘটনায় গত ২৬ জানুয়ারী দৈনিক ইনকিলাবে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হলে দ্রæত হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হালদা নদীতে বার বার ডলফিনের মৃত্যুর কারণ ও বর্তমান হালদার পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রেরণ করে মৎস্য মন্ত্রণালয়ে। এর পর ঢাকা মৎস্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু ছিদ্দিক এর নেতৃত্বে একটি টিম হালদা পরিদর্শনে আসে গত কয়েকদিন পূর্বে। এসময়ে তার সাথে ছিলেন মৎস্য বিভাগের উপ পরিচালক ড. এ.এইচ.এম. রাশেদুল হক। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মুমিনুল হক। তারা তদন্তে এসে হালদা নদীতে বার বার ডলফিনের মৃত্যুর কারণ চিহিৃত করেন। এইসময় তারা বলেন নগরীর বেশ কয়েকটি কলকারখানার বর্জ্য পাশাপাশি হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন কল-কারখানার ও টেনারির অপরিশোধিত বিষাক্ত বর্জ্য ফেলার কারণ বিষ প্রয়োগ যান্ত্রিক নৌযান ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে নদী হতে অবৈধ ভাবে ভালো উত্তোলনসহ অক্সিজেন পরিমাণে কম পাওয়ার কারণ কিছু কিছু এলাকায় ¯øুইচ গেইটে আটকে আঘাত প্রাপ্ত হওয়া এবং হালদা নদীতে কারেন্ট জাল ব্যবহারের ফলে ডলফিনের মৃত্যুর কারণ বলে চিহৃত করেন তদন্ত টিম। তবে সবচেয়ে বেশী কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কল-কারখনার ও টেনারীর বর্জ্য। এইদিকে হাটহাজারী উপজেলা মৎস বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে গতকাল বৃহস্পতিবারে মৃত ডলফিনটি সহ প্রায় নয়টি ডলফিন মারা যাওয়ার তথ্য দিলেও হালদা নদীর তীরবর্তী বসবাসরত মানুষ বলেছে গতকাল বৃহস্পতিবার যে ডলফিনটি মারা গেছে সেটি সহ। আনুমানিক ২২টি ডলফিনের মৃত্যু হয়েছে। এই প্রসঙ্গে হাটহাজারী মৎস্যকর্মকর্তা মো: আজহারুল ইসলামের কাছে ফোনে জানতে চাইলে তিনি ঢাকায় আছেন বলে ফোন রেখে দেয়। রাউজান উপজেলা মৎস কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম এই প্রসঙ্গে বলেন ড্রেজার মেশিন ব্যবহার, নদীর পানি দূষণ, কল-কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য, নদীতে কারেন্ট জাল ব্যবহার পাশাপাশি নদীতে অক্সিজেনের পরিমাণ কম তাই হালদার এই মরণ দশা বলে জানান। অক্সিজেনের পরিমাণ ৫-৫.৩০ পিপিএম থাকার কথা থাকলেও এখন রয়েছে ৩.৩০-৩.৬০ পিপিএম। যাহা স্বাভাবিকের চেয়ে একেবারে কম। এভাবে হালদা নদীতে ডলফিন মারা গেলে আগামীতে হালদা নদীর পরিবেশ নষ্ট হওয়ার আশাঙ্খা রয়েছে। এতে করে ডিম ছাড়ার মৌসুমে হালদা নদীতে বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছেরা ডিম ছাড়া নিয়ে সংশয় দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছেন হালদা বিষেজ্ঞরা। এছাড়া বিগত কয়েদিন পূর্বে নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের ব্যপারে প্রধানমন্ত্রী বালু উত্তোলনকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেও এখনও পর্যন্ত এই নির্দেশ কোন কাজেই আসছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ