Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেশেই উৎপাদিত হবে উচ্চ গুণাগুণ সম্পন্ন ইনস্যুলিন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

অত্যাধুনিক ডেনিশ প্রযুক্তি স্থানান্তরে নভো নরডিস্ক ও এসকেএফ সমঝোতা
বিশ্বের সর্ববৃহৎ ইনসুলিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নভো নরডিস্ক বাংলাদেশে আধুনিক ইনসুলিন উৎপাদনের জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত বছর ফেব্রæয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই উদ্যোগেটি বেশ কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করেই চূড়ান্ত করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার নভো নরডিস্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনান্দ শেঠী এবং এসকেএফ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিমিন হোসেন যৌথভাবে ইনসুলিন প্রস্তুত করার এই চুক্তি সাক্ষর করেন। চুক্তির ফলে এখন বাংলাদেশে ডেনিশ অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎপাদিত হবে উচ্চ গুনাগুণ সম্পন্ন ইনসুলিন। আনন্দঘন এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সূত্র মতে, এ উদ্যোগের শুরুতে বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ ডেনর্মাকের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়, এশিয়া হাউস, ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সি এবং নভো নরডিস্কের প্রধান কার্যালয় ও বিশ্বের সর্ববৃহৎ ইনসুলি উৎপাদনকারী কারখানা পরিদর্শন করেছে। এরপরই ইনসুলিন প্রযুক্তি সরবরাহ বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে নভো নরডিস্ক। ডায়াবেটিস সচেতনতা, প্রতিরোধ ও সময়োপযোগী চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা নিয়ে ৯০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সারা বিশ্বে কাজ করছে নভো নরডিস্ক। দীর্ঘ সময়ের কাজ করার এই ঐতিহ্যই নভো নরডিস্ককে দিয়েছে অভিজ্ঞতার সমাহার। আর এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই সারা বিশ্বের মানুষ পরাজিত করতে পেরেছে স্থুলতা, হেমফিলিয়া, শারিরীক প্রতিবন্ধকতাসহ গুরতর দীর্ঘস্থায়ী সব রোগ। এ সবকিছুই সম্ভব হয়েছে, ডেনমার্কে নভো নরডিস্কের প্রধান কার্যালয়ের ইচ্ছাশক্তি, ৭৭ টি দেশের ৪১ হাজারের বেশি কর্মীবাহিনী এবং বিশ্বের ১৬৫ দেশে ইনসুলিন বাজারজাত করার মাধ্যমে। এখন বাংলাদেশও হতে যাচ্ছে সে রকম একটি উদ্যোগের অংশীদার।
প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, দীর্ঘমেয়াদী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অ-সংক্রামক রোগগুলোর মধ্যে ডায়াবেটিসকে অন্যতম প্রধান বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। একই সঙ্গে ডায়াবেটিসের সাথে বসবাসরত রোগীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যাবৃদ্ধি রোধে ও এটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োজন সচেতনতা ও সঠিক সময়ে চিকিৎসসহ পর্যাপ্ত গুনাগুণসম্পন্ন ইনসুলিন সরবরাহ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার ওষুধ খাতের উন্নয়ন ও ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের কথা চিন্তা করেই স্থানীয় পর্যায়ে ইনসুলিন উৎপাদনকে উৎসাহিত করে আসছে। এই সমঝোতা চুক্তি দেশের ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি সুখবর। এর মাধ্যমে লাভবান হবেন ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীরা এবং পাশাপাশি জাতিসংঘের মতে, ২০৩০ সালের মধ্যেই টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকারকে সহায়তা করবে এই উদ্যোগ।
এ সময় নভো নরডিস্কের দক্ষিন পূর্ব এশিয়ার কর্পোরেট ভাইস প্রেসিডেন্ট শবনম আভসার টুনা বলেন, ডায়াবেটিসের সঙ্গে বসবাস করা রোগিদের জন্য বাংলাদেশে প্রায় ৬০ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করছে নভো নরডিস্ক। আরও অধিকতর সেবা দানের লক্ষ্যে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে আধুনিক ইনসুলিন উৎপাদনের জন্য আমরা যুক্ত হয়েছি এসকেএফ-এর সাথে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেনর্মাকের রাষ্ট্রদূত মাইকেল হেমিনিটি উইন্থার বলেন, ডেনমার্ক ও বাংলাদেশের সর্ম্পককে আরও মজবুত করতে এই উদ্যোগ অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এই যৌথ উদ্যোগটি বাংলাদেশে অত্যাধুনিক ইনসুলি প্রযুক্তি সূচনায় ওষুধ প্রশাসনের উদ্যোগেরই প্রতিচ্ছবি। এর ফলে উন্নত প্রযুক্তির ইনসুলিন পাবে দেশের মানুষ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, নভো নরডিস্কের আফ্রিকা, এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং ওসানিয়া অঞ্চলের কর্পোরেট ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফিন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন) লারস বো স্মিথ। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ড্রাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক এসএম শফিউজ্জামান, বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভলপমেন্ট অথরিটির এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম, ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েসন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট একে আজাদ খান এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব রোক্সানা কাদের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ