Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সংসদে মাদক স্পটের তালিকা দিলেন কাজী ফিরোজ দ্রুতই অভিযান পরিচালনার আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

রাজধানীসহ সারাদেশে মাদকের ভয়াবহ বিস্তার ঘটছে উল্লেখ করে মাদক নিয়ন্ত্রণে কার্যতর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। গতকাল বুধবার রাতে সংসদ অধিবেশনে তিনি এই দাবি জানান। তাৎক্ষণিক জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুতই অভিযার পরিচালনার ঘোষণা দিয়েছেন। ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের জিরো টলারেন্স অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, আগে মাদকের বিস্তার ব্যাপক ছিল। অনেকটা ছড়িয়ে পড়েছিল। আমরাই পদক্ষেপ নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করেছি। সংসদে যেসব মাদকের স্পট ও ভাসমান শিশুদের মাদক ব্যবহারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, আমরা নোট নিয়েছি। দ্রুতই অভিযান চলানো হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা চাই না মাদকের বিস্তার ঘটুক। আর সংসদ সদস্যরা যাঁরা রয়েছেন, তাদেরকেও স্ব স্ব এলাকার দিকে একটু বিশেষ নজর দিতে হবে। অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। যারা ভবঘুরে আছে তাদের বিষয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ আছে, তাদের মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়ে যাওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে, কিছু দালাল শ্রেণীর লোক থাকে, যারা মাদক ব্যবহারে বাচ্চাদের নিয়ন্ত্রণ করে। আর গুলশানসহ অভিজাত এলাকার লোকজন তারা কী করে, তাদের বিষয়ে আমরা কী করতে পারি। যারা গুলশানবাসী তারা যদি এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেন তাহলে ভাল হয়। তারপরও আমরা এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিবো। মাদকের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়ানোর প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তিনি। এর আগে কাজী ফিরোজ রশীদ রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় মাদকের ছড়াছড়ির উল্লেখ করে বলেন, রমনায় ৭৪টি, লালবাগে ৯০টি, ওয়ারল্যাসে ১৫০টি, মিরপুরে ১২৫টি গুলশানে ১১২টি, উত্তরায় ৬৮টি, মতিঝিলে ১২২টি এবং তেজগাঁওয়ে শতাধিক মাদকের স্পট রয়েছে। এসব এলাকায় দিনের বেলা গেলে দেখবেন অনেক শিশুরা বিভিন্ন পন্থায় মাদক গ্রহণ করছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, জুতার একটা বিশেষ কষ। এইটা পলিথিনের মধ্যে নিয়ে শিশুরা নেশা করে। তিনি আরো বলেন, ক্ষুধার যন্ত্রণায় এরা এসব করে। আমাদের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় যদি ঢাকা থেকে হাজার খানেক এমন শিশুকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে আনসার ভিডিপিসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে দেখভালের জন্য দেন তাহলে এদের ভবিষ্যত ভাল হবে, শহরের অনাকাঙ্কিত পরিস্থিতিও দূর হবে, শহর পরিষ্কার থাকবে। কারণ এরাই ছিনতাই করে, শহর অপরিস্কার করে। এদের কারণে কারণে রাস্তায় চলা দায় হয়ে পড়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। কাজী ফিরোজ রশীদ স্পিকারকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, ’আপনি যদি হাইকোর্ট মাজার বা গুলিস্তানের গোলাপশাহর মাজারে কিংবা কমলাপুর স্টেশনে যান তাহলে দেখবেন, হাজার হাজার শিশুসহ অন্যদের পাবেন। এদের দেখবে কে? এরা তো আস্তে আস্তে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। কাউকে না কাউকে দেখতে তো হবে। গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে পল্লী অঞ্চলে এখন ইয়াবা পাওয়া যায়। এই মাদক এতটা সহজলভ্য হয়ে গেছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর আছে তারা যদি ব্যবস্থা না নেয় তাহলে কে নেবে। আমরা রাস্তায় কোনো মাদকসেবী শিশু দেখতে চাই না। তার বক্তব্য শেষ হওয়ার আগেই দাড়িয়ে যান প্রধানমন্ত্রী। এরপর তিনি এবিষয়ে অভিযান পরিচালনার কথা সংসদকে জানান। এদিকে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনাকালে সংসদ সদস্যরা মাদকের বিস্তার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সরকার দলীয় সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল শুধু রাজধানী নয়, সারাদেশে অভিযান পরিচালনার আহ্বান জানান। এক্ষেত্রে দল মত নির্বিশেষ মাদকের সঙ্গে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ