Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বাড়াতে নদী রক্ষায় গুরুত্ব প্রধানমন্ত্রীর

| প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বাড়াতে নদ-নদীর গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী এজন্য নদীগুলোতে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, বহু বছর হয়ে গেছে আমাদের নদীগুলো ড্রেজিং করা হয়নি। সেজন্য আমরা বারবার বলছি প্রথমে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের জন্য এবং প্রতি বছরই সেগুলোর মেইনটেন্যান্স ড্রেজিং করতে হবে। এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিনিয়োগ ও চাষের জমি বাড়বে।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে ‘যমুনা-পদ্মা নদীর তীর স্থিরকরণ এবং ভূমি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ উন্নয়নে প্রস্তাবিত পাইলট প্রকল্পের রূপরেখা উপস্থাপন’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। ‘যমুনা-পদ্মা নদীর তীর স্থিতকরণ এবং ভূমি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ উন্নয়নে প্রস্তাবিত পাইলট প্রকল্পে’ বিভিন্নস্থানে ২২০ কিলোমিটার তীর সংরক্ষণ কথা বলা হয়েছে। এছাড়া নদী খননসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং নদীপথ সংরক্ষণের মাধ্যমে গড়ে ১৬ কিলোমিটার প্রশস্ততাকে ৭ থেকে ৮ কিলোমিটারে নামিয়ে এনে প্রায় ১৬০০ বর্গকিলোমিটার ভূমি পুনরুদ্ধার ও ৩৫০ কিলোমিটার নৌপথ সংরক্ষণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
নদ-নদী রক্ষা, ব্যবস্থাপনা ও যথাযথ সংরক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নদী খনন ও নদীতীর সংলগ্ন ভূমি পুনরুদ্ধার কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। তিনি বলেন, নদীর গভীরতা বাড়িয়ে এবং প্রশস্ততা কমিয়ে ভূমি পুনরুদ্ধার করে সেখানে ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠির জন্য নতুন বসতি ও শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে। পুনরুদ্ধারকৃত জমিতে পরিকল্পিত শিল্প কারখানা স্থাপন এবং নগরায়নের লক্ষ্যে বিনিয়োগ করলে তা সঠিকভাবে কাজে লাগানো সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
বিভিন্ন কারণে পানির প্রবাহ কমে যাওয়া, নদীতে পলি জমে নাব্য হ্রাস পাওয়া এবং নদী ভাঙ্গনের ফলে সৃষ্ট সমস্যার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সব সমস্যার ফলে নদীর স্রোত এবং ধারণক্ষমতা কমে যায়। নদী খননের সময় আশপাশে বাফার জোন তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, কোনো নদীর এক জায়াগায় ড্রেজিং করে পলি নিকটস্থ জায়গাতে ফেলে রাখা যাবে না। বরং বাফার জোনে সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে তা অন্য কাজে ব্যবহার করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাফার জোনে বর্ষা মৌসুমে পানি আসার সুযোগ রাখতে হবে। সেখানে সংরক্ষণ করা পানি শীতকালে বিভিন্ন কাজে বিশেষ করে চাষবাসে ব্যবহারের মাধ্যমে পল্লীর দারিদ্র্য দূর করতে সহায়তা করতে পারে।
নদী সংরক্ষণে যথাযথ গুরুত্ব দিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ড্রেজিং করে নদীমাতৃক বাংলাদেশে নৌপথ ঠিক রাখতে পারলে সস্তায় পণ্য পরিবহন সম্ভব হবে।
নদী ভাঙ্গন রোধে বøক ফেলার দিকে কারো কারো উৎসাহের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, বøক ফেলায় তাদের যত আন্তরিকতা, ভাঙ্গন রোধে চরে গাছ লাগানোতে ততটা নেই। তিনি বলেন, নদী পাড় সংলগ্ন চরের মাটি কেটে সেখানে দ্রুত বর্ধনশীল গাছ লাগিয়ে নদী ভাঙ্গন রোধ করতে হবে।
পানি সম্পদমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
হাসপাতালে কাঙ্খিত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
দেশের হাসপাতালগুলোতে জনগণের কাঙ্খিত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষকে নির্দেশ প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
গতকাল বিকালে তার তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের স¤প্রসারণ এবং আধুনিকায়ন সংক্রান্ত মডেল উপস্থাপনকালে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা প্রদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্যই হচ্ছে সঠিক স্বাস্থ্যসেবাটা নিশ্চিত করা যাতে সাধারণ মানুষ ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং অন্যান্য হাসপাতাল থেকে কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবাটা পেতে পারে। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালকে একটি পরিবেশ বান্ধব এবং দৃষ্টি নন্দন আধুনিক চিকিৎসা সেবা সুবিধা সম্বলিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষকে নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, সরকার আধুরিকায়নের মাধ্যমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালকে নতুন রূপ দিতে চায় যেখানে বিভিন্ন আধুনিক সুযোগ-সুবিধা এবং পর্যাপ্ত খোলা জায়গা থাকবে। উন্নত আবহ সৃষ্টি করাটা জরুরী এবং যে কোন আগুন লাগার ঘটনা ঘটলে অগ্নি নির্বাপন সরঞ্জামের পাশাপাশি দ্রুত এবং নিরাপদ প্রস্থান নিশ্চিত করাটাও প্রয়োজনীয়।
স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে এবং স্বাস্থ্যসেবাকে সাধারণ জনগণের দোড়গোঁড়ায় পৌছে দিতে সরকার নিরলস পরিশ্রম করছে। ‘৯৬ থেকে ২০০১’ পর্যন্ত তার প্রথমবার সরকারে থাকার সময়ে দেশের প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের চট্টগ্রাম এবং রাজশাহীতে আরো দুটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সকল বিভাগীয় সদর দপ্তরে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনেও সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করছে বলে জানান তিনি।
মেডিকেয়ার সুবিধা স¤প্রসারণে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এক সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালই ঢাকা শহরে চিকিৎসার জন্য একমাত্র স্বাস্থ্য কেন্দ্র ছিল এবং বেসরকারি খাতেও কোন হাসপাতাল ছিল না।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ