Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দাম গত বছরের দেড় থেকে দুইগুণ

দক্ষিণাঞ্চলসহ সারা দেশে সবজীর উৎপাদন আশাব্যঞ্জক

| প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

নাছিম উল আলম : অগ্রহায়নের অকাল বর্ষণে বিপুল পরিমান রবি ফসলের জমি প্লাবিত হবার বিষয়টিকে পুজি করে এবার দক্ষিণাঞ্চলসহ সারা দেশেই শীতকালীন শাক-সবজীর দাম গত বছরের প্রায় দ্বিগুন। অথচ চলতি শীত মওশুমে সারা দেশে প্রায় সাড়ে ৫লাখ হেক্টর জমিতে প্রায় ১কোটি ১৫লাখ টন বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন শাক-সবজী উৎপাদনের লক্ষে কাজ করছেন কৃষকরা। যা চাহিদার পুরোটাই যোগান দেবে। অগ্রহায়নে আগাম সবজী ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্থ হলেও কৃষকরা বসে ছিলেন না। ক্ষতিগ্রস্থ বাগানে পুনরায় আবাদ সম্পন্ন করেছেন তারা। বাজারেও সরবারহে কোন ঘাটতি নেই।
এমনকি গত অগ্রহানের অকাল বর্ষণে দেশের দক্ষিণ ও মধ্যঞ্চলে কিছু জমির শাক-সবজীসহ রবি ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হলেও তা এবারের মূল্যবৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে মনে করছেন কৃষি স¤প্রসারন অধিদফ্তর-ডিএই’র দায়িত্বশীল মহল। ডিএই’র মতে অগ্রহায়নের বর্ষণে এসব ফসলের ক্ষতির পরিমান পাঁচ ভাগেরও কম। কিন্তু গতবছরের প্রায় দেড় থেকে দুইগুন দামে এবার শীতকালীন সবজী বিক্রী হচ্ছে। এবারে মূল্যবৃদ্ধির এ প্রবনতাকে মধ্যসত্ব ভোগীদের কারসাজি বলেও মনে করছেন বাজার পর্যবেক্ষকগণ। তাদের মতে বাজারে কোন সবজীরই সরবারহ ঘাটতি নেই। অথচ দাম বেশী। কিন্তু কৃষকরাও গতবছরের চেয়ে খুব বেশী দাম পাচ্ছেন না। এখন বাজারে কোন সবজীর দামই ৪০টাকা কেজির নিচে নেই। অথচ কৃষক পর্যায়ে তা ১০টাকার বেশী নয়। বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের পাইকারী বাজারে ফুলকপি প্রতি কেজী ২০টাকা থেকে ২৫টাকায় বিক্রী হলেও খুচরা পর্যায়ে তা ৪০টাকা কেজি। কড়লার কেজি ৮০টাকা। শালগম, মুলা, সিম সহ প্রতিটি সবজীর দামই এখন গত কয়েকটি মওশুমের তুলনায় দেড় থেকে দুগুন।
এমনকি শাক-এর দাম অন্য বছরের তুলনায় আড়াই থেকে তিনগুন। লালশাকের যে আটি গত বছর এসময়ে ৫টাকায় বিক্রী হত, এবার তা ১৫টাকা। পালংশাক ও লউশাকের দামও একই পর্যায়ে। লাউ শাকের একটি ডগা এখন কুড়ি টাকার নিচে নয়। তবে অগ্রহায়নের অকাল বর্ষণে সবজীর চেয়ে শাকের ক্ষতি হয়েছে বেশী। ফলে বাজারে শাক সরবারহ অন্য বছরের তুলানায় কিছুটা ঘাটতি লক্ষ করা যাচ্ছে। প্রথম দফার শাকের আবাদ অগ্রহায়নের বর্ষণে প্রায় পুরোটাই ক্ষতিগ্রস্ত হবার পরে এখন নতুন আবাদের শাক বাজারে। শাকের তুলনায় লাউ-এর দাম আকাশ ছোঁয়া। বরিশালের বাজারে গতকালও ছোট আকারের একটি লাউ বিক্রী হয়েছে ৮০টাকায়। মাঝারী থেকে বড় লাউ ১শ থেকে ১২৫টাকায়ও বিক্রী হচ্ছে।
বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সবজীর বাজার এতদিন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবজী উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীল থাকলেও সা¤প্রতিক বছরগুলাতে এ অঞ্চলেও আবাদ ও উৎপাদন ক্রমশ বাড়ছে। কিন্তু দক্ষিণাঞ্চলে সবজীর ঘাটতি হৃাস পেলেও দাম কমছে না। অথচ এঅঞ্চলে উৎপাদিত সবজির পরিবহন ব্যায় নেই বললেই চলে। চলতি মওশুমেও দক্ষিণাঞ্চলে ৫লক্ষাধিক টন সবজী উৎপাদন হচ্ছে। বাজারে সরবারহও সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। ভোক্তা সাধারণের তরফ থেকে এ অসামঞ্জস্যপূর্ণ মূল্য বৃদ্ধির জন্য বাজার মনিটরিং ব্যবস্থার অনুপস্থিতিকে দায়ী করা হয়েছে। তাদের মতে দক্ষিণাঞ্চলসহ সারা দেশেই সুষ্ঠু বাজার মনিটরিং-এর অভাবে কৃষকরা উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য না পেলেও ক্রেতাদের তা অস্বাভাবিক দরে কিনতে হচ্ছে। এক শ্রেণীর মধ্যসত্বভোগী পুরো ফয়দা লুটছে বলেও তাদের অভিযোগ।
পাশাপাশি মাঠ পর্যারে কৃষিবিদদের মতে, সারা দেশের মত দক্ষিণাঞ্চলেও শীতকালীন সবজী উৎপাদনে আরো নিবিড় কর্মসূচী গ্রহণ জরুরী। ডিএই’র মাঠ কর্মীদের কর্মস্থলে অনুপস্থিতিসহ এক ধরনের আয়েশী ও উদাসীন মনোভাব এক্ষেত্রে নানামুখি অন্তরায় সৃষ্টি করছে বলেও মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের অভিযোগ রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ