Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

চট্টগ্রামে আদনান হত্যা ৫ আসামীর দায় স্বীকার

আ.লীগ-ছাত্রলীগ নেতার দ্ব›েদ্বই খুন

| প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : কিশোরদের দুই গ্রæপের বিরোধের জেরেই খুন হয় চট্টগ্রামের কলেজিয়েট স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র আদনান ইসফার। আর এই দুই গ্রæপের নেতৃত্ব রয়েছেন চকবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রউফ ও মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সাব্বির। এলাকায় নানা অপরাধসহ নিজেদের প্রভাব ধরে রাখতে ওই দুই নেতা এসব কিশোরদের নিয়ে বাহিনী গড়ে তোলেন। আলোচিত এই খুনের ঘটনায় গ্রেফতার ৫ উঠতি যুবকের আদালতে দেয়া বক্তব্যের বরাত দিয়ে নগর পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন ওই দুই নেতার স্বার্থের বলি হয়েছে কিশোর আদনান। খুনের দায় স্বীকার করে গতকাল (শুক্রবার) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় ওই ৫ জন। তারা আদনানকে খুনের বর্ণনা দেওয়ার পাশাপাশি খুনের নির্দেশদাতা ও অস্ত্রদাতার নামও প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন আলোচিত এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) কোতোয়ালী থানার এসআই এমদাদ হোসেন। দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ওই ৫জনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রের্কড করেন মহানগর হাকিম আবু সালেম মোঃ নোমান। জবানবন্দি শেষ রাতেই তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয় বলে জানান মামলার আইও।
আত্মস্বীকৃত এই পাঁচ খুনি হলো নগরীর চান্দগাঁওয়ের হাজেরা তজু কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র মঈন খাঁন, সাব্বির খান ও মুনতাছির মোস্তফা, চকবাজার ডিসি রোডের হলি ফ্লাওয়ার স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী এখলাছ উদ্দীন আরমান এবং নগরীর সদরঘাট ইসলামিয়া ডিগ্রী কলেজ থেকে সদ্য এইচএসসি পাস করা আবদুল্লাহ আল সাঈদ।
গত মঙ্গলবার নগরীর ব্যস্ততম জামাল খান সড়কে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয় আদনান ইসফারকে। পুলিশ জানায় নিহত আদনান রহমতগঞ্জ কেন্দ্রিক ছাত্রলীগের সাব্বির গ্রæপের কর্মী ছিল। খুনের অভিযোগে যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয় তারা চন্দনপুরা কেন্দ্রিক আবদুর রউফের অনুসারী। ওই দুই নেতার গ্রæপে এলাকার ক্যাডার মাস্তানের পাশাপাশি স্কুল পড়–য়ারাও রয়েছে। এক সপ্তাহ আগে মহসীন কলেজ মাঠে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে আদনান ও তার বন্ধুদের সাথে গ্রেফতার মঈন ও তার বন্ধুদের ঝগড়া হয়। জবানবন্দিতে মঈনরা স্বীকার করেছে ওই ঝগড়ার জের ধরে তারা আদনানদের উপর প্রতিশোধ নিতে তৈরী ছিল। আদনানরাও তাদের উপর ক্ষেপে ছিল। মঙ্গলবার দুপুরে আদনান তার দুই বন্ধুকে নিয়ে জামাল খানের অদূরে আইডিয়াল স্কুলের সামনে মঈনের দুই বন্ধুকে মারধর করে। এই খবর পেয়ে মঈন ও তার বন্ধুরা ছুটে আসে এবং আদনানদের ধাওয়া দেয়। এক পর্যায়ে আদনানকে ফেলে তার দুই বন্ধু পালিয়ে যায়। আর আদনানকে একা পেয়ে তার উপর হামলার করে মঈন ও তার বন্ধুরা। মঈন নিজেই আদনানকে ছুরিকাঘাত করে। এসময় তাদের হাতে একটি পিস্তলও ছিল। পিস্তলটি তাদের দেয় রউফের এক ক্যাডার। খুনের পর তারা বড় ভাইয়ে পরামর্শে ফটিকছড়ির ছাত্রলীগ নেতা মোঃ ফয়সালের বাড়িতে আশ্রয় নেয়।
এদিকে খুনের পর সড়কে থাকা সিসিটিভির ফুটেজে ছবি দেখে পুলিশ তাদের সনাক্ত করে। পরে বুধবার রাতে তাদের ফটিকছড়ি থেকে পাকড়াও করা হয়। সেখানে মঈনের ব্যাগে পাওয়া যায় হত্যাকাÐে ব্যবহৃত ছুরি। খুনের পর পিস্তলটি রউফের কাছে জমা দেওয়া হলেও ছুরিটি তার ব্যাগেই রেখে দেয় মঈন। আইও জানান মঈন নিজ হাতে আদনানকে ছুরিকাঘাত করার কথা স্বীকার করে। বাকিরাও খুনের দায় স্বীকার করে খুনের বর্ণনা দেয়। জবানবন্দিতে এই ঘটনায় জড়িত আরও কয়েকজনের নাম পরিচয় জানা গেছে জানিয়ে নগর পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান তাদের ধরতে অভিযান চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ