পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন করে প্রধান বিচারপতির কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করলেন ভারতের সুপ্রিম কোর্টের চার জন বিচারপতি। সংবাদ সম্মেলনে এই বিচারকরা বলেছেন, ভারতের প্রধান বিচারপতি এখন তার ব্যক্তিগত মর্জিমাফিক বিভিন্ন বেঞ্চে মামলা পাঠাচ্ছেন। তাদের দাবি, যেভাবে তিনি আদালত চালাচ্ছেন তা ভারতের গণতন্ত্রকেই হুমকির মুখে ফেলে দেবে। প্রধান বিচারপতির দায়িত্বভার সহকর্মী বিচারকদের ওপর কর্তৃত্বের স্বীকৃতি নয় বলে দাবি করেন তারা। ভারতের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এমন সংবাদ সম্মেলনের নজির সৃষ্টি হলো।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রীতি মেনে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা অতীতে কখনও সরাসরি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি। আদালতে বিচার কাজ পরিচালনায় নিরপেক্ষতা অক্ষণœ রাখার স্বার্থের বিচারকরা সংবাদমাধ্যমের সামনে আসেন না। তাই চারজন বিচারক যেভাবে সংবাদ সম্মেলন করে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে তাদের অসন্তোষ প্রকাশকে ‘নজিরবিহীন’ আখ্যা দিয়েছে সংবাদমাধ্যম।
আনন্দবাজার পত্রিকায় লেখা হয়েছে, গত বছর কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সিএস কারনানের ঘটনা শোরগোল ফেলে দিয়েছিল গোটা দেশে। বিচারপতিদের দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে, জেল পর্যন্ত খাটতে হয়েছে কারনানকে। এ দিনের ঘটনা ধারে এবং ভারে তাকেও ছাপিয়ে গেল।
শীর্ষ আদালতে মামলা বণ্টন, বিচারপতিদের নিয়োগ থেকে শুরু করে আরও নানান বিষয়ে গরমিলের অভিযোগ তুলেন বিচারকরা। তারা মুখ খুললেন ‘বিচারবিভাগের ভিতরে দুর্নীতি’ নিয়েও। ওই চার বিচারকের দাবি, যেসব মামলার ফল ভারতের রাষ্ট্র এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর সুদুরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হয়, প্রধান বিচারপতি সেই সব মামলা বেছে বেছে তার পছন্দসই কিছু বেঞ্চে পাঠান। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর কাছে এসব বিষয়ে বার বার তাদের উদ্বেগ তুলে ধরার পরও তিনি কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ করে এই চারজন বলছেন, এরপর জাতির সামনে হাজির হওয়া ছাড়া তাদের সামনে আর কোন বিকল্প ছিল না।
কোন কোন মামলা এভাবে প্রধান বিচারপতি তার পছন্দসই বেঞ্চে পাঠিয়েছেন সেটি তারা উল্লেখ করেননি। তবে ভারতীয় গণমাধ্যমে ব্যাপক জল্পনা রয়েছে যে, একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির দুর্নীতির বিষয়টি এর একটি। গত বছরের আগস্টে এই ঘটনা নিয়ে তুমুল বিতর্ক ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের ভেতর চলতে থাকা এই টানাপোড়েন প্রকাশ্যে নিয়ে আসে।
বিচার বিভাগের দুর্নীতি এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে অনেক দিন ধরেই একটা চাপা অসন্তোষ চলছিল। সুপ্রিম কোর্টের এই চার ক্ষুব্ধ বিচারক একটি চিঠিও বিলি করেছেন যেটি তারা এর আগে প্রধান বিচারপতিকে দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন তারা। চিঠিতে তারা বেশ কিছু বিচারিক নির্দেশের ব্যাপারে তাদের অসন্তোষের কথা জানিয়েছিলেন। তারা বলেছিলেন, এর ফলে ভারতে বিচার বিভাগের সার্বিক কার্যক্রম বিঘিœত হবে। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা ‘ব্যর্থ’ হয়। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার দিল্লিতে বিচারপতি জে চেলামেশ্বরের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে চেলামেশ্বর ছাড়া উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ বিচারপতি কুরিয়েন জোসেফ, বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এবং বিচারপতি মদন লোকুর।
বিচারপতি চেলামেশ্বর বলেন, ‘আদালতের প্রশাসনিক বিষয়টি জানাতে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করেছিলাম। তাকে জানানো হয়েছিল কোনও কিছুই ঠিকঠাক চলছে না। এর একটা বিহিত দরকার। কিন্তু দুর্ভাগ্য এটাই যে, আমাদের সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।’ গণতন্ত্রের অস্তিত্ব সঙ্কটের আশঙ্কা প্রকাশ করে বিচারপতি জে চেলামেশ্বরের মন্তব্য, এখন দেশ ঠিক করুক প্রধান বিচারপতিকে ইমপিচ করা উচিত কিনা।
ভারতের বিচার বিভাগকে ঘিরে তৈরি এই অভূতপূর্ব সঙ্কটের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর আইনমন্ত্রী রবি শঙ্কর প্রসাদের সঙ্গে জরুরী বৈঠকে বসেন। সূত্র : বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।