Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেশজুড়ে উন্নয়নমেলা করবে সরকার

বৃহস্পতিবার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

পঞ্চায়েত হাবিব : | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

৭ মার্চের ভাষণসহ ১০টি বিশেষ উদ্যোগ থাকছে
উন্নয়ন কর্মকান্ড জনগণের কাছে তুলে ধরতে সারাদেশে দ্বিতীয় বারের মতো ‘উন্নয়নমেলা’ আয়োজন করতে যাচ্ছে সরকার। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসকে সামনে রেখে তিন দিনব্যাপী দেশের সব জেলা-উপজেলায় এ মেলা করা হবে। সাধারণ মানুষের কাছে নানা অর্জন তুলে ধরতে উন্নয়নমেলা করবে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ১১ জানুয়ারি সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সব জেলা-উপজেলায় উন্নয়নমেলা-২০১৮-এর উদ্বোধন করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক (নির্বাহী সেল) সমর কুমার ঘোষ স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ তথ্য জানা গেছে। গত বছর একযোগে দেশের ৬৪টি জেলায় অনুষ্ঠিত হয় উন্নয়নমেলা। সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরতে ‘উন্নয়নের গণতন্ত্র, শেখ হাসিনার মূলমন্ত্র’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে দেশে ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ মেলার আয়োজন করা হয়। গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ডিসি) মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার ইনকিলাবকে বলেন, বর্তমান সরকারের ৯ বছরের উন্নয়ন কর্মকান্ড জনগণের কাছে তুলে ধরতে উন্নয়নমেলা আয়োজনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসকে সামনে রেখে এ মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। এ জলায় সব চেয়ে ভালো উন্নয়নমেলা করা হয়। এবার মেলা জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ তুলে ধরা হবে তার জন্য একটি কর্নার রাখা হয়েছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী নামে একটি কর্নার রাখা হয়েছে। মেলার পরে আর কোনো কাজ হয় না এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, আমি আমার ফোন নম্বর এ জেলার জনগণকে দিয়েছি। বলেছি, জনগণের যে কোনো সমস্যা তা আমাকে জানালে আমি সমাধান করব। তাই করছি। বর্তমান ডিসিরা আগের আমলাদের মতো নয়। এখন ডিসিরা জনগণের সাথে কথা বলে এবং তাদের পাশে দাঁড়ায়। এ মেলা থেকে জনগণ অনেক কিছু জানতে পারছে। যারা অভিযোগ করছে, তা সঠিক নয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে ২০১৮ সালের উন্নয়নমেলা ৯ থেকে ১১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের কর্মসূচির কারণে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তে এ মেলার সময় সূচিতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়। নতুন সময়সূচি অনুযায়ী ১১ থেকে ১৩ জানুয়ারি এই উন্নয়নমেলা অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমান সরকারের সময় নেয়া বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে দেশের প্রান্তিক জনগণসহ আপামর জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে এ উন্নয়নমেলা। গত বছর প্রথমবারের মতো ‘উন্নয়নের গণতন্ত্র, শেখ হাসিনার মূলমন্ত্র’ এই সেøাগানকে ধারণ করে ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গঠনে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম জনসাধারণের সামনে তুলে ধরতে দেশজুড়ে উন্নয়নমেলার আয়োজন করা হয়। রাজধানীতে ঢাকা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জাতীয় শিল্পকলা একাডেমিতে এ মেলার আয়োজন করা হয়। এ মেলায় দেশের সব মন্ত্রণালয়, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ, আনসার, অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পৃথক পৃথক স্টল ছিল। এতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দফতর, অধিদফতর, ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ ৮৮টি সরকার নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। এসব সরকারি, আধা-সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে মেলায় আগত লোকদের সামনে তাদের নিজ নিজ সংস্থার উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরে। সরকারি সংস্থাগুলোর সেবাসমূহ মেলাস্থল থেকে সরাসরি প্রদান করে। এবারো এমন আয়োজন থাকবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত এবারের উন্নয়নমেলা অনুষ্ঠিত হবে। তিন দিনব্যাপী মেলায় থাকবে আলোচনা সভা। তা ছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমেও দেশের মুক্তিযুদ্ধ ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের নানা দিক তুলে ধরা হবে। দেশবরেণ্য শিল্পী-কলাকুশলীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকবে মেলা চলাকালীন প্রতিদিন বিকেলে। আয়োজন করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক কুইজ, আলোচনা, বিতর্ক ও রচনা প্রতিযোগিতা।
চিঠিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ১০টি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের ঘোষণার মাধ্যমে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ১০টি বিশেষ উদ্যোগ হচ্ছে- একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, আশ্রয়ণ প্রকল্প, ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচি, নারীর ক্ষমতায়ন কর্মসূচি, সবার জন্য বিদ্যুৎ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, কমিউনিটি ক্লিনিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, বিনিয়োগ উন্নয়ন ও পরিবেশ সংরক্ষণ। মেলায় এ বিষয়গুলোর ওপর বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন থাকছে। এ মেলার কার্যক্রম সবার কাছে পৌঁছে দিতে জাতীয় তথ্য বাতায়নের মাধ্যমেও প্রচারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়নে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে স্থানীয় সমস্যা সম্পর্কে মতবিনিময় ও বাস্তবায়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে এ মেলার আয়োজন করা হবে। মেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্জিত আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, সাফল্য, পুরস্কার সম্পর্কে প্রচার করা হবে। এসএমই ফাউন্ডেশনের এমডি মো. শফিকুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, এ মেলা নতুন করে সঞ্চালন হচ্ছে। এ মেলা আগে কখনো ছিল না। আগামী পাঁচ-ছয় বছর পরে আরো ভালো করবে। তবে মেলা শেষে দুই মাস পরে ফলো আপ করতো তা হলে আরো ভালো তো। মেলা থেকে জনগণকে সচেতনতা, সহায়তা ও সমস্যার সমাধান দিতে কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার জোর প্রচেষ্টা চালানো হবে।



 

Show all comments
  • নাভিল ৯ জানুয়ারি, ২০১৮, ১০:৪২ এএম says : 0
    এটার কোন দরকার আছে বলে আমার মনে হয় না।
    Total Reply(0) Reply
  • খোরশেদ আলম ৯ জানুয়ারি, ২০১৮, ১০:৪৩ এএম says : 0
    এই মেলার টাকা দিয়ে দেশের জন্য কিছু কাজ করলে এর চেয়ে দেশ অনেক লাভবান হতো।
    Total Reply(0) Reply
  • লিয়াকত আলী ৯ জানুয়ারি, ২০১৮, ১০:৪৫ এএম says : 0
    দেশজুড়ে উন্নয়নমেলা কি দরকার ? আমরা জনগণ ভালো করেই জানি কে কি করেছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Bokul Mohammad ৯ জানুয়ারি, ২০১৮, ১১:১৯ এএম says : 0
    তিন বেলা খেতে পাই না আমরা, আর আপনি উন্নয়নের মেলা বসাবেন? তার চেয়ে টাকা গুলো দিয়ে শীতার্তদের মাঝে বস্ত্র কিনে দিন।
    Total Reply(0) Reply
  • Sanjida ৯ জানুয়ারি, ২০১৮, ৭:২০ পিএম says : 0
    দেশে অনেক অশান্তি আছে জনগণ অনেক কষ্ট করছে সেই দিকে নজর দিলে জনগণের উপকার হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ