পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান দেশবন্ধু গ্রুপ নতুন বছরের শুরুতেই ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে। চলমান শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন শিল্প স্থাপন অব্যহত রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। এতে করে বেসরকারি খাতে ব্যাপক অবদানসহ কর্মসংস্থান, উন্নতমানের পণ্য উৎপাদন ও রফতানিতে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে দেশবন্ধু গ্রুপ আরও অগ্রসর হবে বলে আশা করছেন কর্তৃপক্ষ। দেশবন্ধু গ্রুপের কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে এ তথ্য জানা গেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, দেশবন্ধু গ্রুপের নরসিংদীর চরসিন্দুর পলাশ শিল্প এলাকায় অবস্থিত দেশবন্ধু সুগার মিলস লিমিটেড, দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড, দেশবন্ধু ফুড ও বেভারেজ লিমিটেড এবং দেশবন্ধু ব্রেড এন্ড বিষ্কুট এ চলছে কর্মযজ্ঞ।
দেশবন্ধু গ্রুপের প্রকল্প পরিচালক প্রভাষ চক্রবর্তী বলেন, দেশবন্ধু চিনিকলটি পুরনো এবং দেশের একটি ঐতিহ্যবাহী চিনিকল। এটি ১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠত হয়। তিনি জানান, মিলের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির কাজটি ভারতের মেসার্স স্প্রে ইজ্ঞিনিয়ারিং ডিভাইসেস লিমিটেড বাস্তবায়ন করছে। বর্তমানে সম্প্রসারণ কর্মসূচী শেষের দিকে রয়েছে। চলতি মাস অথবা আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হবে এবং এর ফলে অভ্যন্তরীন বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধিসহ রফতানিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। সুগার মিলের এডিশনাল চীফ ইঞ্জিনিয়ার মো. রেজাউননবি সরকার (পারভেজ) বলেন, দেশবন্ধু চিনিকল এই উপমহাদেশের প্রথম সুগার মিল। এটি লন্ডনস্থ রিফাইন সুগার এসোসিয়েসনের (আরএসএ) একমাত্র সদস্য। বর্তমানে মিলটির দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা ৫শ’ টন থেকে বৃদ্ধি করে দৈনিক ১৫শ’ টন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এতে করে বছরে সাড়ে চার লাখ টন চিনি উৎপাদিত হবে। তিনি জানান, দেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশবন্ধু চিনি কল ইউরোপীয় কমিশনের ‘ইবিএ’ এর আওতায় ইউরোপে সর্বপ্রথম দেশি চিনি রফতানি শুরু করে এবং তা অব্যাহত রয়েছে। ২০০২ সালে নতুন ব্যবস্থাপনায় আসার পরে বিশ্বের শীর্ষ মানের মানের গুণমান এবং প্যাকেজিংয়ের সুখ্যাতি অর্জন করে দেশবন্ধু সুগার মিলস।
এদিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত গ্রুপের একমাত্র শিল্প প্রতিষ্ঠান দেশবন্ধু পলিমার। সরেজমিনে দেখা গেছে, পলিমারের উৎপাদন বাড়াতে বেশকয়েকটি নতুন ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে। নতুন মেশিন স্থাপনের কাজ চলছে। দেশবন্ধু পলিমারের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ার সাখাওয়াত হোসেন জানান, দেশবন্ধু সুগার মিলস চালু হওয়ার পর মোড়কের জন্য প্রতি বছর ৩৫ থেকে ৩৬ লাখ চিনির ব্যাগ প্রয়োজন হয় সেই প্রেক্ষিতে ২০০৬ সালে দেশবন্ধু পলিমার কারখানা স্থাপন করা হয়। প্রথমে তাইওয়ানের মেশিনারী দিয়ে স্বল্প পরিসরে অর্থাৎ বার্ষিক এক কোটি ব্যাগ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন মিল স্থাপন করা হয়। ২০১১ সালে প্রথম সম্প্রসারন কাজ করে উৎপাদন ক্ষমতা বার্ষিক তিন কোটি ব্যাগ উৎপাদন এর উন্নীত করা হয়। পরবর্তীতে আরও মেশিনারীজ সংযোজনের মাধ্যমে ২০১৩ ও ২০১৬ সালে আরো উৎপাদন বৃদ্ধি করে সিমেন্ট ব্যাগসহ বর্তমানে এর উৎপাদন ছয় কোটি ব্যাগে উন্নত করা হচ্ছে বলে জানান সাখাওয়াত।
দেশবন্ধু পলিমার লি. এজিএম (সেলস এ্যান্ড মার্কেটিং) এ এস এম নাসির উদ্দিন জানান, এর বাইরেও দেশবন্ধু প্যাকেজিং ইন্ড্রাষ্টি গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে ডবিøউপিপি ব্যাগ, ওয়ান এবং ডাবল প্লাই সিমেন্ট ব্যাগ, বিওপিপি (সুইং এবং পেস্টিং) এবং এফআইবিসি ব্যাগ উৎপাদন হবে। এসব পণ্যের অধিকাংশ রফতানি করা হবে।
অন্যদিকে দেশবন্ধু গ্রুপের অন্য প্রতিষ্ঠান দেশবন্ধু বেভারেজ এর যাত্রা শুরু হয় ২০১৫ সালে জুন মাসে এবং ২০১৭ সালের ১০ই অক্টোবর শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, এমপি এই কারখানা উদ্বোধন করেন। প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ মারুফ হোসেন বলেন, বর্তমানে সিএসডি, ড্রিংকিং ওয়াটার ও জুস মিলিয়ে নয়টি আইটেম উৎপাদিত হচ্ছে। উৎপাদন ক্ষমতা প্রতি দিন ২৮হাজার কার্টুন। দেশবন্ধু বেভারেজ-এ উৎপাদিত পণ্য দেশে বিক্রি ছাড়াও থাইল্যান্ড, শ্রীলংকা, মালয়েশিয়া, গ্রীসেও রফতানি হচ্ছে হচ্ছে বলেও জানান তিনি। শিগগিরই এর উৎপাদন ক্ষমতা আরও বাড়বে। এই কারখানায় চিপস, বিস্কুট, ব্রেড, ড্রাইকেক, চানাচুর, ডালভাজা ও বিভিন্ন প্রকার টোস্ট বিস্কুট উৎপাদিত হবে।
এছাড়াও গ্রুপের ২৮ বছরের ইতিহাসে গড়ে তুলেছে অসংখ্য শিল্প প্রতিষ্ঠান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।