পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : অর্থ লেনদেনে বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। গত চার মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ৭৬ লাখ অ্যাকাউন্ট (হিসাব) নিস্ক্রিয় হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, এই হিসাবগুলোতে গত ৩ মাসে লেনদেন না হওয়ায় নিস্ক্রিয় বলা হয়েছে। আবার যে কোন সময়ে লেনদেন করলেই এটি আবার সক্রিয় হয়ে যাবে। এছাড়া অধিকাংশ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের হিসাবে লেনদেন সাধারণত ঈদ ও অন্যান্য উৎসব কেন্দ্রিক বেশি হয়। তাই এ নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ যে কোন সময়েই হিসাবগুলোতে লেনদেন হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত আগস্ট মাসের পর থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সক্রিয় অ্যাকাউন্ট একনাগাড়ে কমেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমেছে নভেম্বর মাসে। মাসটিতে সক্রিয় হিসাব ৪৯ লাখ কমে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৩১ লাখে, যা আগের মাস অক্টোবরের চেয়ে ১৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ কম। অক্টোবরে সক্রিয় হিসাবের সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৭৯ লাখ। সেপ্টেম্বর ও আগস্টে ছিল যথাক্রমে ৩ কোটি ও ৩ কোটি ৭ লাখ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সন্ত্রাস-জঙ্গি অর্থায়ন, হুন্ডিতে রেমিটেন্স প্রেরণসহ অন্যান্য জালিয়াতি প্রতিরোধে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে কঠোরতা আরোপের কারণে সক্রিয় হিসাব ও লেনদেন বাড়ছে না। হুন্ডিসহ নানা জালিয়াতির অভিযোগে বিকাশ এবং মোবাইল ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারী দুই হাজার ৮৮৬ জন এজেন্টের অস্বাভাবিক লেনদেনে সম্প্রতি তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, অক্টোবর মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দৈনিক গড়ে লেনদেন হয়েছে ৮৯১ কোটি টাকা। পুরো অক্টোবরে মোট লেনদেন হয়েছে ২৭ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা। যা সেপ্টেম্বরের তুলনায় ২৪ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে এজেন্ট সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৭৩ হাজার ২৮৩ জন। অক্টোবরে ১ হাজার ৬০৯ জন বেড়ে তা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭৪ হাজার ৮৯২ জনে। অক্টোবর পর্যন্ত মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৭৮ লাখ। এর মধ্যে চালু রয়েছে ২ কোটি ৮০ লাখ হিসাব।
এসব হিসাব থেকে অক্টোবরে মোট লেনদেন হয়েছে ২৭ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা রেমিটেন্স বিতরণ হয়েছে। এ ছাড়া ক্যাশ ইন হয়েছে ১১ হাজার ৭২২ কোটি টাকা। আর ক্যাশ আউট ১০ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা। ব্যক্তি পর্যায়ে পরিশোধ হয়েছে ৪ হাজার ৪৩ কোটি টাকা।
বাকি অর্থ আদান-প্রদান হয়েছে ইউটিলিটি বিল, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা, সরকারি বিল পরিশোধসহ অন্যান্য খাতে। এদিকে নভেম্বরে কিছুটা বেড়েছে মোট নিবন্ধিত গ্রাহকের সংখ্যাও। অক্টোবরে মোট ৫৭৭ লাখ নিবন্ধিত এমএফএস অ্যাকাউন্ট থাকলেও নভেম্বরে এসে তা দাঁড়িয়েছে ৫৮৫ লাখে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে মোট এজেন্টের সংখ্যা ৭ লাখ ৭৭ হাজার ১৭৯টি। বর্তমানে মোট ১৮টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংকের বিকাশ ও ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের রকেট সবচেয়ে জনপ্রিয়। এছাড়া ইউক্যাশ, শিওরক্যাশ, মাইক্যাশ, এমক্যাশ, ফার্স্ট পে, ওকে ব্যাংকিং, হ্যালো, মোবাইল মানি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এমএফএসের মাধ্যমে অবৈধভাবে রেমিটেন্স আসা ঠেকাতে গত বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এক নির্দেশনায় লেনদেন সীমা কমিয়ে দেয়। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, একটি এমএফএস অ্যাকাউন্ট থেকে একদিনে এখন সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা অর্থ উত্তোলন করা যায়, এটি আগে ছিল ২৫ হাজার টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।