Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ক্ষমতায় থাকলে ছোটখাটো দুর্নীতি করে -মাহবুব-উল আলম হানিফ

| প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম


স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেছেন, অনেক সময় মানুষ দুর্নীতি করে, ক্ষমতায় থাকলে ছোটখাটো দুর্নীতি করে। কিন্তু তাই বলে একজন প্রধানমন্ত্রী এতিমের টাকা মেরে খাবেন! তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মামলায় শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চান। তিনি বলেন, দেশে এমন একটি বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি করার জন্যই বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চেয়েছিল। গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ ইউনাইটেড পার্টি নামের একটি রাজনৈতিক দলের আয়োজিত গণতন্ত্র রক্ষা, সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনে আলেম-ওলামা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনের পর থেকে বিএনপি ওই দিনটিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে। তবে প্রতিবারই ৫ জানুয়ারিতে সমাবেশের জন্য বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান চাইলেও তা তাদের দেয়া হয়নি। অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশের অনুমতি দেয়া না হলেও গতকাল শুক্রবার দুপুরে সেখানেই ‘গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’ পালন করে সরকার সমর্থক বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টি। সেখানে সন্ত্রাস ও জঙ্গী দমনে আলেম-ওলামা সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলা প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, দুর্নীতি অনেক সময় মানুষ করে, ক্ষমতায় থাকলে অনেক ছোটখাটো দুর্নীতি করে। কিন্তু একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এতিমের টাকা মেরে খাবেন! আমরা যে এতিমকে বাঁচাতে আর্থিক সহায়তা দেই, সেই এতিমের টাকা মেরে খালেদা জিয়া ক্ষমতায়। এই মামলায় দোষী হলে শাস্তি ভোগ করতেই হবে। আইন সবার জন্য সমান। আইন অনুযায়ী বিচার হবেই। দোষী হলে শাস্তি পাবেন, নির্দোষ হলে খালাস পাবেন। আইন কারও জন্য আলাদা নয়।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া আদালতের কাঠগড়ায় রয়েছেন। এতিমের টাকা চুরি করায় এ মামলায় তার শাস্তি হবেই। আর তাই দেশে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি করে সরকার পরিবর্তন হলেই কেবলমাত্র এ শাস্তি থেকে তিনি রেহাই পেতে পারেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার সে আশা কখনো পুরন হবে না। দেশপ্রেমিক জনগণ যে কোন মূল্যে বেগম জিয়ার ষডযন্ত্র রুখে দিবে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি সমাবেশের অনুমতি না পাওয়ার ব্যাখ্যা দিয়ে হানিফ বলেন, সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে এক মাস আগে ইউনাইটেড ইসলামিক পার্টি সমাবেশের অনুমতি নিয়েছে। তারা অনুমোদন পাওয়ার একমাস পর বিএনপি অনুমতি চায়। প্রথা অনুযায়ী একটি দলকে অনুমোদন দেয়ার পর আরেকটি দলকে অনুমোদন দিতে পারে না। এমনকি আওয়ামী লীগ চাইলেও না। অথচ হঠাৎ করে বিএনপি এখানে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে আরেকটি সহিংস পরিবেশ সৃষ্টি করতে চেয়েছিলো। এরা দেশটাকে অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি করে অশুভ শক্তিকে আনতে চায়। তাই আজকে ইউনাইটেড ইসলামিক পার্টি সমাবেশ করছে।
হানিফ বলেন, জামায়াত গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারেনি বলেই বিএনপি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করে নির্বাচনকে বানচাল করার ষড়যন্ত্র করেছিল। তিনি বলেন, বিএনপি ও জামায়াতের জন্ম হয়েছে পাকিস্তান থেকে। সেজন্যই দেশে যখন যুদ্ধাপরাধের মামলার রায় কার্যকর হয়েছিল তখন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে নিন্দা প্রস্তাব পাশ হয়েছিল।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি জামায়াত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শত্রæ। আর তাই তারা দেশের অগ্রগতি সহ্য করতে পারে না। তারা পাকিস্তানের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। তিনি বলেন, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। কারো জন্য নির্বাচন যেমন বাধাগ্রস্থ হবে না তেমনি কারো জন্য নির্বাচন থেমেও থাকবে না।
নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করা না করা গণতান্ত্রিক অধিকার বলে উল্লেখ করে হানিফ আরো বলেন, বিএনপি-জামায়াতের যে কোন ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে দেশের গণতন্ত্রের বিজয়কে সুসংহত করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
সমাবেশে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ট নেতৃত্বে বর্তমান সরকার জনগনের সহায়তায় ইসলামের নামে জঙ্গি তৎপরতা দমন করেছে। তবে জঙ্গিবাদী অপশক্তির মূলোৎপাটন করতে আরো কাজ করতে হবে। জঙ্গিবাদ দমনে দেশের আলেম ওলামাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
হাছান আরও বলেন, বিএনপি বিশৃঙ্খলার দল। এরা ইসলামের চর্চা করে না। শেখ হাসিনা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। আর নায়িকারা বুড়ো হলে যেমন দেখা যায়, খালেদাকে সেরকম লাগে। এরা সারা বছর ইসলামের কোনো খেদমত করে না, অথচ এই অশুভ শক্তি বারবার পবিত্র ইসলামকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় আসতে চায়।
ইউনাইটেড ইসলামিক পাটির সভাপতি মাওলানা ইসমাইল হোসাইনের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সিরাজুল ইসলাম মোল্লা এমপি, সংগঠনের সংগঠনের মহাসচিব মওলানা শাহাদাত হোসাইন, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা গোলাম মোস্তফা, মাওলানা এখলাসুর রহমান প্রমুখ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ