Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আ’লীগের রাজনৈতিক কেমিস্ট্রিতে গোলমাল আছে : মওদুদ

নিম্ন আদালতকে কঠিনভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে

| প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে একাদশ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে বিএনপি উপযুক্ত সময়ে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবে জানিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, এই সরকার বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির মাধ্যমে নিম্ন আদালতকে সরকার আরো কঠিনভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে। আসলে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কেমিস্ট্রি’র মধ্যে গোলমাল আছে।
গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম আয়োজিত ৫ জানুয়ারি কলঙ্কিত নির্বাচন এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগ সমঝোতার পথে যাবে না। একমাত্র বিকল্প হলো রাজপথ। গণআন্দোলনের মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে বাধ্য করতে হবে একটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, সময় যখন আসবে, তখন আমরা কর্মসূচি দেবো। সেজন্য আমাদেরকে অপেক্ষা করতে হবে। একটা উপযুক্ত সময়ে, উপযোগী সময়ে আন্দোলনের সেই কর্মসূচি দেয়া হবে। সেই কর্মসূচি সফল না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাবো না। নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলনকে গণআন্দোলনে রূপান্তরিত করার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহŸান তিনি। মওদুদ আহমদ বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ২০১৪ সাল আর ২০১৮ সাল এক নয়। এবার আমরা নির্বাচন করবো, নির্বাচনের সব প্রস্তুতি আমরা নেবো। তবে সেই নির্বাচন হতে হবে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন। কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির যে ভোটবিহীন নির্বাচন হয়েছিলো, সেই নির্বাচন বাংলাদেশের মাটিতে আর কোনোদিন হতে দেয়া হবে না। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কেমিস্ট্রি’র মধ্যে গোলমাল আছে দাবি করে ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের অবদান থাকলেও স্বাধীনতার পর তাদের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। তারা এখন অবলীলায় মিথ্যা কথা বলছে। মামলাকে হাতিয়ার হিসেবে নিয়ে বিরোধী দলকে দমন করছে। মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বললেও তারা বিরোধী দলের সভা-সমাবেশের অধিকার হরণ করেছে। আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেনি। ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, আওয়ামী লীগ সমঝোতায় বিশ্বাস করে না। তারা চায় সংঘাত। আমরা অনেক ধৈর্য ধরেছি। সহ্য করেছি। সমঝোতার কথা বলেছি। কারণ ২০১৪ ও ২০১৮ এক নয়।
অধঃস্তন বিচারকদের শৃঙ্খলা বিধিমালার মাধ্যমে নিম্ন আদালতকে সরকার আরো কঠিনভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার (সদ্য পদত্যাগকারী প্রধান বিচারপতি) ঘটনার মাধ্যমে সরকার নিজেই বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। সরকার এটা সম্পূর্ণভাবে হরণ করে নিয়েছে। এখন তারা নিম্ন আদালতের বিচারকদের জন্য একটা শৃঙ্খলা বিধির গেজেট করেছে। এই গেজেটের মাধ্যমে নিম্ন আদালতকে এখন আরো কঠিনভাবে নির্বাহী বিভাগের অধীনে, প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই গেজেট মাজদার হোসেন রায়ের অপমৃত্যু ঘটিয়েছে। এই রায়ের মূল বিষয় ছিলো বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথকীকরণ করা হবে। মওদুদ আহমদ বলেন, এতোদিন যেভাবে নিম্ন আদালত নিয়ন্ত্রিত হয়ে আসছে, এই গেজেটের মাধ্যমে ভবিষ্যতেও নিয়ন্ত্রিত হবে। আমরা আইনের শাসনে যারা বিশ্বাস করে তাদের জন্য এটা আমাদের সবার জন্য দুর্ভাগ্যের। সংগঠনের উপদেষ্টা ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে ও জাহাঙ্গীর আলমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ