Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

থার্টিফার্স্ট নাইট উপলক্ষে বেলেল্লাপনা

মোহাম্মদ আবু নোমান | প্রকাশের সময় : ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

প্রতি বছর থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপনকে কেন্দ্র করে নানা আনাচার ঘটে থাকে। ইতোপূর্বে টিএসসিতে বাঁধনের শালীনতা হানি, চট্টগ্রামের হোটেলে অশ্লীল নৃত্যপরবর্তী ঘটনা যা সংবাদপত্রে প্রকাশের অযোগ্য, দেশের সভ্য মানুষ পত্রিকায় সে খবর পড়ে ঘৃনায়, লজ্জায় হতভম্ব হয়ে গিয়েছিল। এছাড়াও পহেলা বৈশাখে ঢাকায় নারীকে বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানীর ঘটনা সবার জানা আছে। 

আর্শ্চযের ব্যাপার হলো, থার্টিফার্স্ট ন্ইাট যাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তারা কিন্তু আমাদের মতো উদযাপন করে না। একেক দেশে একেকভাবে বর্ষবরণ করে থাকে। যেমন- গায়ে পানি ছিটিয়ে; আঙুর খেয়ে; না ঘুমিয়ে; ১২টি ঘণ্টা বাজিয়ে; শিক্ষকদের নিকট দীর্ঘায়ু কামনা করে; পরিবারের সব সদস্য একত্রে রাতে আহার করে সাদা পোশাক পরিধান করে বর্ষবরণ করে থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে কিভাবে এই উদ্ভট, কল্পনাপ্রসূত, কামলালসাপূর্ণ, খেয়ালীচর্চা আবিষ্কার হলো?
থার্টিফার্স্টে আমাদের তরুণ-তরুণীরা এই বিজাতীয় সংস্কৃতিকে নিজের ভেবে এমন উদ্দাম, উন্মত্ততা ও উচ্ছলতায় নিজেকে সঁপে দেয় যে, তখন শ্লীল আর অশ্লীলের বাছবিচার থাকে না। বর্তমানে বর্ষবরণের নামে যে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, ফায়ার প্লে, ডিজে এবং নগ্নতার প্রদর্শন হয় তা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বোধসম্পন্ন ও সভ্য মানুষের উৎসব হতে পারে না। তরুণ-তরুণীদের ধ্বংস করার জন্য যা চাই তার সবটার রসদ এ সকল অনুষ্ঠানে মজুদ থাকে। এদিনে তরুণ-তরুণীরা নৈতিকতার সব বাঁধ ভেঙ্গে অশ্লীল কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়, আর এই কর্মকান্ডের অবধারিত রূপ হছে মদ্যপান ও ব্যভিচার।
থার্টিফার্স্ট নাইটের অনুষ্ঠানের নামে রাজধানী ঢাকায় প্রতি বছর যে চিত্র দেখা যায় তা সত্যিই লজ্জা ও বেদনাদায়ক। বিশেষ করে ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, বারিধারা, ডিওএইচ এবং টিএসসিতে যে হইহুল্লোড় মার্কা অনুষ্ঠান, মাদকের হাতে খড়ি, যুবক-যুবতীর ফ্রি স্টাইলে উল্লাস, ওপেন এয়ার কনসার্ট, লাইভ ড্যান্স আর লাল-নীল পানীয় পানের যে সমারোহ চলে তাতে করে নতুন বছরের সু-কামনা, বাসনা আর প্রত্যাশার মূলেই কুঠারাঘাত করা হয়।
আনন্দের আড়ালে থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন চরিত্র হননের একটি মাধ্যম। অশ্লীলতা, বেহায়পনা, নগ্নতাই যার ভিত্তি। কিন্তু সব থেকে বেশি উদ্বেগের কারণ মহিলাদের বিবেকবোধ নিয়ে। কোন পুরুষ কোন মেয়েকে যেখানে সেখানে যেতে বললেই কি যেতে হবে? অসময়ে, অপ্রয়োজনে বৈধ সম্পর্কের অভিভাবক ব্যতীত বিতর্কিত পরিবেশে ও পুরুষের অন্যায় আবদার মেয়েরা রক্ষা করতে যাবে কেন? তাদের কি আত্মসম্মান, ব্যক্তিত্ব বা সতিত্ববোধ বলতে কিছু নেই? মেয়েদের যদি এতই নববর্ষ উদযাপনের সখ হয়, তবে তারা মেয়েদের সাথেই উদযাপন করুক, তারা পুরুষদের মাঝে যাবে কেন? এতো হবে কাঁটা নিয়ে খেলতে গিয়ে স্বেচ্ছায় কাঁটার আঘাত খাওয়ার মত ঘটনা। কোনো ইঁদুর নিজের চোখ বন্ধ করে যদি মনে করে যে, সে সমস্ত বিড়াল থেকে নিরাপদ তবে এটা তার বোকামি নয় কি?



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন