পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ টানা ১২ ঘন্টা সাময়িক বন্ধের বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়। কিন্তু ঘোষিত সময়ের আগে-পরে প্রায় সাড়ে ৫ঘন্টা গ্যাস সরবরাহ চালু না হওয়ায় আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। বিশেষ করে রাতের খাবার তৈরি নিয়ে প্রতিটি পরিবারকে রাত ৯টার পর থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত গ্যাসের অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে। বাণিজ্যিক সরবরাহ বন্ধ থাকায় রেষ্টুরেন্টগুলোতে খাবার তৈরি হয়নি। বাণিজ্যিক গ্যাস ব্যবহারকারি বেশিরভাগ হোটেল রেষ্টুরেন্ট বন্ধ রাখা হয়। আর এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের সাহায্যে যেসব রেষ্টুরেন্ট চালু রয়েছে সেব প্রতিষ্ঠানে সকালের নাস্তা, দুপুর ও রাতের খাবারের জন্য মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল। কেউ খাবার কিনতে পেরেছে, কেউ পারেনি। খাবারের জন্য যেনো এক হাহাকার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। বাড়ির ছোট ছেলে মেয়ে ও বয়োবৃদ্ধদের অনেকেই রাতের খাবার না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় কুমিল্লা শহর ও শহরতলীর বাসাবাড়ি, হোটেল রেষ্টুরেন্ট, কমিউনিটি সেন্টার, সিএনজি ফিলিং স্টেশনে নেমে আসে চরম ভোগান্তি।
কুমিল্লা বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেডের তত্ত¡াবধানে গ্যাস সরবরাহের প্রধান লাইনে জরুরী রক্ষণাবেক্ষণের কাজের জন্য বৃহষ্পতিবার সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কুমিল্লা শহর ও পাশ্ববর্তী এলাকায় এবং চান্দিনা, বুড়িচং উপজেলায় আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকরা ওই সময়ে গ্যাস পাবেন না সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি মাইকে ও সংবাদপত্রে প্রচার করা হয়। গ্যাস সরবরাহ সাময়িক বন্ধ থাকার বিষয়ে বাখরাবাদ কর্তৃপক্ষের ঘোষিত সময় সকাল ৯টার আগেই ৭টার মধ্যে শহর ও শহরতলীর বাসা-বাড়ি, হোটেল-রেষ্টুরেন্টের চুলোয় গ্যাস চলে যায়। ফলে সকালের নাস্তা বা দুপুরের খাবার আগেভাগে তৈরির সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। আবার রাত ৯টার মধ্যেই চুলোয় গ্যাস সরবরাহ চালু হবে এমন আশায় রাতের রান্নার প্রস্তুতিও ভেস্তে যায়। কেননা রাত ৯টার গ্যাস আসে সাড়ে ১২টায়। ফলে কুমিল্লা শহর ও এর পাশ্ববর্তী এলাকা এবং চান্দিনা, বুড়িচং উপজেলার বাসাবাড়িতে রাতের খাবার তৈরি নিয়ে পরিবারের লোকজনকে চরম বিপাকে পড়তে হয়। সিলিন্ডার গ্যাসচালিত হোটেল রেষ্টুরেন্টগুলো গ্রাহকের খাবার চাহিদা মেটাতে হিমশিম পোহায়। রাত ৯টার মধ্যেই ওইসব হোটেল রেষ্টুরেন্ট খাবারশূন্য হয়ে পড়ে। রাত ৯টার পর চুলোয় গ্যাস না আসায় গৃহিনীরা রান্নার জন্য ঘন্টাখানেক অপেক্ষা করেন। কিন্তু গ্যাস আসে না। বাড়ির কর্তারা ঘরের ছোট ছেলে মেয়ে আর মুরুব্বীদের কথা চিন্তা করে হোটেল থেকে খাবার আনতে গিয়ে দেখেন কিছুই নেই। কেউ কেউ খাবার না পেয়ে ফল, বিষ্কুট, কেক নিয়ে ঘরে ফিরেছেন। অন্যদিকে গৃহিণীরা কিছুক্ষণ পর পর রান্নাঘরে গিয়ে চুলোর নব ঘুরিয়ে দেখেন গ্যাস আসছে কিনা। সাড়া নেই গ্যাসের। এভাবে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত গ্যাসের অপেক্ষায় সময় কাটে পরিবারগুলোর। কোন কোন এলাকায় রাত সাড়ে ১২টায়, কোন এলাকায় তারও পরে চুলোয় গ্যাস আসে। কেবল বাসা বাড়িই নয়, কুমিল্লা শহর ও চান্দিনায় কমিউনিটি সেন্টারগুলোতে বিয়েশাদীর অনুষ্ঠানের খাবার রান্না নিয়েও ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে আয়োজকদের। খোলামাঠে শীত কুয়াশার রাতে কাঠ লাকড়ি জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের রান্নার কাজ সারতে হয়েছে। গ্যাস সরবরাহ সাময়িক বন্ধের ঘোষিত এলাকায় যেসব সিএনজি ফিলিং ষ্টেশন পড়েছে সেখানেও রাত ৯টার পর থেকে গ্যাসের জন্য শত শত যানবাহনের ভিড় দেখা গেছে। বাখরাবাদ কর্তৃপক্ষের গ্যাস সরবরাহ সাময়িক (সকাল ৯টা-রাত ১২টা) বন্ধ থাকার সেই জরুরী বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ি যথাসময়ে গ্যাস না আসার ভোগান্তি গ্রাহকদের জন্য চরম কষ্টের রাতে পরিণত হয়েছে। ওই রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভোগান্তির ছবি আর স্ট্যাটাস ঘিরে দেখা গেছে সময়সমো গ্যাস না আসায় মানুষ কতোটা দুর্ভোগ যন্ত্রণায় পোহায়েছে।
কুমিল্লা শহর ও শহরতলীর আবাসিক গ্রাহকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, এমনিতেই ঠিকমতো গ্যাস থাকেনা চুলোয়। তার ওপর বৃহষ্পতিবার বাখরাবাদ কর্তৃপক্ষের সাময়িক গ্যাস বন্ধ থাকার বিষয়টি নির্ধারিত সময়ের অন্তত একঘন্টা পরে চালু হলেও রাতের রান্নাবানা নিয়ে কষ্ট পোহাতে হতো না। অথচ সেই তো গ্যাস এলো, তাও রাত ১টায়। বিশেষ করে আবাসিক গ্রাহকদের কথা চিন্তা করে এসব বিষয় গুরুত্বের সাথে দেখা উচিত। এদিকে আবাসিক গ্রাহকরা নিয়মিত গ্যাস না পাওয়ার অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, প্রতিদিনই সকাল ৮টা থেকে দুপুর তিনটা এবং সন্ধ্যার পর চুলোয় গ্যাসের প্রেসার না থাকায় তাদেরকে রান্না-বান্নার কাজে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। প্রতিমাসে বাখরাবাদ গ্যাসের বিল পরিশোধের পরও তারা বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ষ্টোভ চুলোয় কেরোসিন ও এলপি গ্যাসের সিলিন্ডারের পেছনে অতিরিক্ত অর্থ গচ্ছা দিচ্ছেন। কুমিল্লা শহর ও শহরতলীতে গ্যাসের স্বাভাবিক সরবরাহ থেকে বঞ্চিত গ্রাহকের সংখ্যা কম করে হলেও ১২ হাজার হবে। এসব গ্রাহকদের প্রতিদিন বিকল্প জ্বালানি ব্যবহারে গড়ে খরচ হচ্ছে কমপক্ষে ৫০ টাকা। সেই হিসেবে প্রতিটি পরিবার প্রতিমাসে ১৫০০ টাকা কেরোসিন ও এলপি গ্যাসের পেছনে বাড়তি খরচ করছে। অতিরিক্ত ব্যয়ের খাতে যা ১২ হাজার গ্রাহকের জন্য মাসে দাঁড়ায় ছয় লাখ টাকা। এভাবে গ্যাস সরবরাহে সংসারের গুরুত্বপূর্ণ সময়টিতে চুলোয় স্বাভাবিক চাপ না থাকায় বিকল্প জ্বালানি ব্যবস্থার পেছনে প্রতিমাসে বাড়তি খরচে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের নাভিশ্বাস উঠেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।